নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫ ১২:০৮ এএম
পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলে দায় যুক্তরাষ্ট্রেরই : হুঁশিয়ারি ইরানের
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন— ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যদি ইসরায়েল কোনো হামলা চালায়, তবে তার পূর্ণ দায়ভার যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বর্তাবে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। খবর এএফপির।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ইসরায়েল সামরিকভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রতিবেদন ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যে। ঠিক এর মধ্যেই ওমানের মধ্যস্থতায় ইতালির রোমে শুক্রবার ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার পঞ্চম দফা শুরুর কথা রয়েছে।
আব্বাস আরাগচির ভাষ্য,“ইসরায়েলের মাধ্যমে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যদি কোনো হামলার ঘটনা ঘটে, তবে ধরে নেওয়া হবে— তাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংশ্লিষ্ট। এর রাজনৈতিক ও নৈতিক দায় তাদের কাঁধেই বর্তাবে।”
তিনি আরও বলেন,“ইহুদিবাদী শাসকদের যে কোনো উসকানি, হুমকি বা বেআইনি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান কড়া জবাব দেবে। আমাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি পূর্ণমাত্রায় সচল রয়েছে।”
এদিকে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোরের মুখপাত্র আলি মোহাম্মদ নিয়ানি বলেছেন,
“ইসরায়েল কোনো হামলা করলে তা হবে ভয়ঙ্কর ও বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়ার সূচনা। আমরা তাদের আত্মঘাতী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত।”
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর গত মাসে (১২ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু হয়। তবে সেই আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েল এই উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আসছে এবং ইরানকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ইরান এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। না হলে, তারা নিজেদের পরমাণু সম্পদ রক্ষায় “বিশেষ ব্যবস্থা” নিতে বাধ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে রোমে আলোচনা শুরুর প্রাক্কালে এমন হুঁশিয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ইসরায়েল ও ইরানের সম্পর্ক এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতামূলক। এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে ইরান কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একটি ভুল পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যকে আরও একটি সংঘাতের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
ভোরের আকাশ/হ.র