নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:০৭ পিএম
বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলার অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল: মির্জা ফখরুল
বিএনপিকে ‘সংস্কারবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (৬ জুলাই) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মিডিয়ার একটি অংশ এবং কিছু ব্যক্তি বিএনপির সংস্কার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন, যেগুলো সত্য নয়। বিএনপি সবসময় সংস্কারে বিশ্বাস করে। ২০১৬ সালে খালেদা জিয়ার ‘ভিশন-২০৩০’, ২০২২ সালে ঘোষিত ২৭ দফা এবং ২০২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি তারই প্রমাণ।”
তিনি আরও বলেন, “এই ৩১ দফা নিয়ে আমরা দেশজুড়ে অসংখ্য কর্মসূচি পালন করেছি, জনগণের কাছে গিয়েছি, সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অথচ একটি মহল এখন পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে চিত্রিত করতে চায়।”
১৫ বছরের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিএনপি যে গণতন্ত্রের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে, তা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের সমাবেশ, কর্মসূচি, পুলিশের দমন-পীড়ন—সবই আপনারা দেখেছেন, কভার করেছেন। এরপরও এ ধরনের প্রশ্ন তোলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
তিনি অভিযোগ করেন, “একটি চক্র বিএনপিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রচারণায় জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। দেশের মানুষ বিএনপিকে চেনে এবং বিএনপির শাসনামলে যেসব ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, তা তারা মনে রেখেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, মুক্তবাজার অর্থনীতি—এসবই বিএনপির হাত ধরেই বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব ছিল সংস্কারেরই অংশ। সুতরাং, বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলার কোনো সুযোগ নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে যারা চায়, তারা গণতন্ত্রের শক্তি হতে পারে না। তারা ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের’ ধারকও নয়।”
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, দেশে যেন কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিজম পুনরায় জন্ম না নেয়। এজন্য আমরা প্রস্তাব করেছি, কোনো ব্যক্তি যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে না পারে। আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির এ সিদ্ধান্তই তা প্রমাণ করে।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের কার্যকারিতা যেন ব্যাহত না হয়, সে কারণে আমরা এনসিসির মতো কোনো অতিরিক্ত ‘বডি’ গঠনের ধারণার সঙ্গে একমত হইনি। এটাই আমাদের অবস্থান।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং তারা আশাবাদী যে শিগগিরই সাংবিধানিক বিষয়গুলোতে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
ভোরের আকাশ//হ.র