সংকট সমাধানে গণতান্ত্রিক উত্তরণই একমাত্র পন্থা: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশে চলমান সংকট সমাধানে গণতান্ত্রিক উত্তরণই একমাত্র পন্থা। এই মুহূর্তে শুধু সরকার বা রাজনৈতিক দল নয়, দেশের গণমানুষকেও সচেতন থাকতে হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
মইন খান বলেন, ২৪ সালের জুলাইয়ের ঘটনা এবং ৫ আগস্টে দেশের যে পরিবর্তন এসেছিল, তার মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো? দেশের ১৮ কোটি মানুষের সামনে একটি মাত্র সমাধান, গণতন্ত্রের উত্তরণ। এছাড়া দ্বিতীয় কোনো সমাধান নেই।
বিগত ১৫ বছরে সঠিক নির্বাচন হয়নি, তাই দেশ সঠিক পথে যেতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুক্ষিগত করে রাখা হতো আগে বিচার বিভাগকে। যদি এখনও তাই হয়, তাহলে পরিবর্তন কোথায়?
বিএনপি নির্বাচন চেয়ে কোনো অপরাধ করেনি দাবি করে মঈন খান বলেন, বিএনপি বাধ্যগত ঐক্য চায় না। বাংলাদেশের পরিবর্তন চায় বিএনপি। কিন্তু কোন পরিবর্তন সেটা আগে ঠিক করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গণতন্ত্র একটি খারাপ ব্যবস্থা। কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া আর বাকি সব ব্যবস্থা আরও বেশি খারাপ। ৭১ সালে এই সত্যটি উপলব্ধি করেই গণতন্ত্রের জন্য লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক সত্য রয়েছে। যা কখনো অস্বীকার করা যাবে না। সময়ের বিবর্তনে হয়তো তার গুরুত্ব কমে যায়। ৭১-এর মতো যারা অস্বীকার করতে চায় ইতিহাসকে, আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা উচিত তাদের।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশে চলমান সংকট সমাধানে গণতান্ত্রিক উত্তরণই একমাত্র পন্থা। এই মুহূর্তে শুধু সরকার বা রাজনৈতিক দল নয়, দেশের গণমানুষকেও সচেতন থাকতে হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।মইন খান বলেন, ২৪ সালের জুলাইয়ের ঘটনা এবং ৫ আগস্টে দেশের যে পরিবর্তন এসেছিল, তার মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো? দেশের ১৮ কোটি মানুষের সামনে একটি মাত্র সমাধান, গণতন্ত্রের উত্তরণ। এছাড়া দ্বিতীয় কোনো সমাধান নেই।বিগত ১৫ বছরে সঠিক নির্বাচন হয়নি, তাই দেশ সঠিক পথে যেতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুক্ষিগত করে রাখা হতো আগে বিচার বিভাগকে। যদি এখনও তাই হয়, তাহলে পরিবর্তন কোথায়?বিএনপি নির্বাচন চেয়ে কোনো অপরাধ করেনি দাবি করে মঈন খান বলেন, বিএনপি বাধ্যগত ঐক্য চায় না। বাংলাদেশের পরিবর্তন চায় বিএনপি। কিন্তু কোন পরিবর্তন সেটা আগে ঠিক করতে হবে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গণতন্ত্র একটি খারাপ ব্যবস্থা। কিন্তু গণতন্ত্র ছাড়া আর বাকি সব ব্যবস্থা আরও বেশি খারাপ। ৭১ সালে এই সত্যটি উপলব্ধি করেই গণতন্ত্রের জন্য লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক সত্য রয়েছে। যা কখনো অস্বীকার করা যাবে না। সময়ের বিবর্তনে হয়তো তার গুরুত্ব কমে যায়। ৭১-এর মতো যারা অস্বীকার করতে চায় ইতিহাসকে, আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা উচিত তাদের।ভোরের আকাশ/এসএইচ
অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বিতর্কিত করার জন্য উপদেষ্টা কাউন্সিলের অনেক সদস্য জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে। গতকাল শনিবার ‘অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনে’র উদ্যোগে আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনীতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে। মানুষ তাদের পেছনে আছে। কিন্তু ওনাকে যারা বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে, এখনও সময় আছে লাগাম টেনে ধরুন। রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করবেন না।উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা যা ইচ্ছা তা করছেন। মনে হচ্ছে, এটা আপনাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কে যাবে আসবে, আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন, মনে হচ্ছে জনগণের কোনো দায় নেই। যেমনটা পতিত স্বৈরাচার করতো। কিন্তু আপনারা এসব দায় ইউনূস স্যারের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ড. ইউনূসকে বিতর্কিত করার জন্য উপদেষ্টা কাউন্সিলের অনেক সদস্য জড়িত।উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, অতীতকে আপনারা ভুলে যাবেন না। প্রথমে বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট এটি নাকি দ্বিতীয় জন্ম। এসব কথা বলার চেষ্টা করলেন, কিন্তু ৪৭ যদি না হতো ৭১ পেতেন না, ৭১ না হলে ২৪ হতো কিনা বিরাট বড় প্রশ্ন। মনে রাখতে হবে, ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবেন না। যার যতটুকু অবদান, সেটাকে স্বীকার করার মধ্যেই সত্যিকার অর্থে বীরত্ব আছে। আপনি যে দেশের ভালো চান, সেটি প্রমাণ করেন। আর যদি এককভাবে কিছু করেন তাহলে, পতিত স্বৈরাচার সরকারের মতো অবস্থা আপনাদেরও হতে পারে।তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন, আমরা কি নির্বাচন দেওয়ার জন্য উপদেষ্টা হয়েছি! ৩৬ শে জুলাইয়ের আগে তো আপনাদের রাস্তায় দেখা যায়নি।গত ১৮ বছর বাংলাদেশের মানুষের ওপর যে নির্যাতন, গুম-খুন করা হয়েছে, আপনাদের দুয়েকজন বাদে কাউকে তো কোনোদিন একটা কলাম লিখতে দেখিনি। আপনারা বিদেশে ছিলেন, আর এখন চেয়ার নিয়েছেন, এসি ঘরে থাকেন, পুলিশ নিয়ে চলেন। আর ভাবতে শুরু করেছেন যে, আপনারাই আমাদের হর্তাকর্তা। এমন চিন্তা করা ঠিক নয়।অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তালুকদার জহিরুল হক তুহিনের সভাপতিত্বে এ সময় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ আরও অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আগামী ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ যার জন্য অপেক্ষা করছেন, তা হলো নির্বাচন। একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে যাওয়ার উপায় হলো নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হতে পারে। এর জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন, তার আগেই হতে পারে। গতকাল শনিবার ঢাকার নিকুঞ্জে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ইন বাংলাদেশ ডিসকোর্স : ফিলোসফি অ্যান্ড প্র্যাকটিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।আমীর খসরু বলেন, কোথায় সংকট, আমরা দেশে কোনো সংকট দেখছি না। এগুলো কোনো আলোচনার বিষয় না। আলোচনার বিষয় হল, বাংলাদেশে আমরা যত দ্রুত গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাব এবং গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে পাব।বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক সরকার- সংসদ গঠন হবে, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে; যার জন্য গত ১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষ ত্যাগ স্বীকার করেছে; সুতরাং, এটাই হচ্ছে মুখ্য বিষয় আলোচনার বিষয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পদত্যাগ গুঞ্জনের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির শীর্ষ নেতারা। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ৮টা থেকে পর্যায়ক্রমে তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। রাতে উপদেষ্টার বাসবভবন যমুনায় পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচনে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা।এছাড়া জুলাই বিল্পবে গণহত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বিতর্কিত দুই ছাত্র উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন চেয়েছে বিএনপি। আর নির্বাচন এবং সংস্কার ও বিচারে দুটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াত ইসলামী। চলমাল টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠক বসেন। রাত পৌনে ৮টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হয়।বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ ও স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির সঙ্গে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহেমদ বৈঠকে অংশ নেন। রাত সাড়ে ৮টার পর তারা বৈঠক শেষে বের হয়ে যান।এ সময় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা একটি লিখিত বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি। আমরা কখনো প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি। আমরা বিতর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন চেয়েছি। আমরা দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছি।তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার সুতরাং আমরাও বিচার চাই। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যদি আসে তারপরও অপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখবে।ড. মঈন খান বলেন, নির্বাচন যত বিলম্ব করা হবে ততই দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি হবে। যার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। আমরা বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়েই কথা বলেছি। তবে বিচার ও সংস্কার কিন্তু চলমান সেটিও আমরা বলেছি।এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিতর্কিত দুজন ছাত্র উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছি। কারণ তারা বিভাজন তৈরি করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো রোডম্যাপ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।আর দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা চাই ডিসেম্বর বা তার আগে সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক। বিএনপির বৈঠকের পর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।এ বৈঠকে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তারা রাত সাড়ে ৮টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করেন। বৈঠক শেষে বের হন রাত সাড়ে ৯টার পর।পরে যমুনার সামনে সাংবাকিদের সঙ্গে কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, এ সরকার গঠনের পর থেকেই আমরা বলে এসেছি একটি অবাধ নির্বাচন। এছাড়া সংস্কার ও অপরাধীদের বিচার আমরা চেয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর বলে এসেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন। কিন্তু তিনি কোনো সময় একেবারে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেননি। এটাকে কেন্দ্র করে দাবি রয়েছে বিষয়টি স্পষ্ট করার। আমরা তার ওপর আস্থা রেখেছি। আমরা দুটি বিষয় স্পষ্ট করতে বলেছি। আমরা বলেছি, নির্বাচন কবে হবে এবং জনগণের যেন ভোগান্তি না এরকম একটি সময় আপনি নির্বাচন নির্ধারণ করেন। এছাড়া সংস্কার এবং দৃশ্যমান বিচার সামনে আসতে হবে বলেও আমরা বলেছি। দুটি রোডম্যাপ ঘোষণার কথা বলেছি। একটি হচ্ছে- নির্বাচনের, অন্যটি বিচার ও সংস্কারের।সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে আমরা জাতিকে আগেই জানিয়ে দিয়েছি ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি সময় অথবা রোজার পরপরই ভোট হতে হবে। এর বাইরে গেলে নিরপেক্ষ ভোট করা কঠিন হবে। এছাড়া বিএনপি তিন উপদেষ্টা পদত্যাগ চেয়েছে এটা দলটির নিজস্ব চিন্তা থেকেই বলেও জানান জামায়াত আমির। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। তাদের সঙ্গে বৈঠকটি শুরু হয় রাত সাড়ে ৯টার পর। ঘণ্টাখানেক চলে এ বৈঠক।বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সঙ্গে তারা আলাপ করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সংস্কার ও জুলাই বিল্পবে গণহত্যাকারীদের বিচার এ আলোচনা স্থান পায়। তবে আগামী আগামী সংসদ নির্বাচন কবে হবে তার রোডম্যাপ ও নির্বাচনের সম্ভব্য তারিখ এ আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের শুরু দিকে ভোট দেয়ার ব্যাপারে দল দুটি জোরালো দাবি তুলেছে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারেও তারা গুরুত্বারোপ করেছেন।জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকেই নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। বিশেষ করে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছিল।এর মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে গত বুধবার সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া এবং পরে মূল ধারার মিডিয়াতে আসার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে খবর বের হয়। বিষয়টি প্রথমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাহিদ ইসলামের মাধ্যমে গণমাধ্যমে আসে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাহিদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম। প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এমন খবর পেয়েই তিনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বলে জানান নাহিদ।এরপর সরকার ও রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একে অন্যকে দোষারোপ করে বক্তব্য পোস্ট করা হয়। জামায়াতে ইসলামী সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব করে। চরমোনাই পীরের ডাকে এনসিপিসহ পাঁচটি দল বৈঠক করে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চান না।সর্বশেষ গতকাল শনিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। তিনি আমাদের সঙ্গেই থাকছেন।এই পরিস্থিতিতে বিমেষ করে যমুনায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের খবরে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। সবার ধারণা, এই বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে। কী ঘোষণা আসতে পারে তা নিয়ে চলছে জল্পনা। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর রমনার একটি বাসায় বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির নেতাদের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে খবর রটে।তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ এই বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক মিত্র থাকলেও বর্তমানে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনের ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে। তারা ডিসেম্বর অথবা বড় জোর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময় দিতে রাজি। তবে এনসিপি তাদের অবস্থানের ব্যাপারে এখনো কিছুটা অনমনীয়। তারা নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা, সংস্কার, স্থানীয় নির্বাচন, গণপরিষদ নির্বাচন চায়। সেসঙ্গে নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠন চেয়েছে এনসিপি। গতকাল দুপুরে বাংলামোটরে অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচনের বিষয়ে তার দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।তিনি জানিয়েছেন, তার দল অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জুলাই সনদ, সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে চায়।ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পরই নির্বাচনের রোডম্যাপের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে। এই বিষয়টিতে সব দলই মোটামুটি একমত। শুধু দিন তারিখ সুনির্দিষ্ট করা বাকি। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবে বিএনপি শুরু থেকেই ঘোরতর আপত্তি জানিয়ে আসছে। জামায়াত ও এনসিপি আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। গতকালের ত্রিদলীয় বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে কতদূর আলোচনা হয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়।এদিকে শনিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক যে অস্থিরতা বিরাজ করছে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান বেরিয়ে আসবে। এজন্য সব পক্ষকে সংযত আচরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া বিএনপি নেতারা গতকাল রাজধানীতে একাধিক অনুষ্ঠানে চলমান সংকটের জন্যে কয়েকজন উপদেষ্টাকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। তারা বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণায় এখন সমাধান।ভোরের আকাশ/এসএইচ