নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫ ১১:৫৭ পিএম
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চায় ঢাকা
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে মালয়েশিয়ার ভূমিকা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে আসিয়ানের সভাপতি দেশ হিসেবে কুয়ালালামপুরকে পাশে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামাকে দেওয়া বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয়দানের অভিজ্ঞতা এবং আসিয়ানে নেতৃত্বের অবস্থান মিলিয়ে মালয়েশিয়া এই সংকট নিরসনে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়া তাদের প্রভাব পুরোপুরি ব্যবহার করবে; যাতে আমরা এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারি।” একই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়ে তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি সেনা ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষ রোহিঙ্গা সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে। এতে নতুন করে শরণার্থীরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ১৮ মাসে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আগে থেকে থাকা প্রায় ১২ লাখ শরণার্থীর সঙ্গে যোগ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের তহবিল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আগামী কয়েক মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান ড. ইউনূস। এর মধ্যে চলতি মাসের শেষে কক্সবাজারে প্রথম সম্মেলন হবে। সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে দ্বিতীয় বৈঠক এবং বছরের শেষের দিকে কাতারের দোহায় তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং আসিয়ানের আরও কয়েকটি দেশ—মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়াও এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাব মোকাবিলা করছে।
যদিও মালয়েশিয়া জাতিসংঘের ১৯৫১ সালের শরণার্থী সনদ বা ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলে স্বাক্ষরকারী নয়, তবুও মানবিক বিবেচনায় দেশটি প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়ে আসছে।
সূত্র: বারনামা
ভোরের আকাশ//হ.র