× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টায় প্রফেসর ইউনূস

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:১২ পিএম

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টায় প্রফেসর ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টায় প্রফেসর ইউনূস

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট কাটিয়ে উঠার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও কূটনীতিকে এ জন্য কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি কাতারে এ সংক্রান্ত একটি সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন। তার প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লাখের বেশি মিয়ানমারের এই জনগোষ্ঠী রয়েছে। তারা কক্সবাজার, বান্দরবান ও নোয়াখালীর ভাসানচরে শরণার্থী ক্যাম্পে রয়েছেন।

কাতারের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল সোমবার ঢাকা ছেড়েছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তিনি এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি ছেড়ে গেছে। সেখানে রোহিঙ্গাবিষয়ক এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি ওঠার আগে এই সেমিনারকে তার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরায় বিশেষ সাক্ষাৎকার দেবেন। সেখানে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা বিষয়ক আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি চার দিনের সফরে কাতার গেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রফেসর ইউনূসের কোন জাদুর বলে মিয়ানমার সরকার দীর্ঘ ৮ বছর পর এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা একসঙ্গে ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। নিঃসন্দেহে বিভিন্ন পর্যায়ে ইউনূসের অবিরাম কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশে সফর এবং প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করে এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান। পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রফেসর ইউনূস সাক্ষাৎ করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া। সবকিছু মিলে সামগ্রিকভাবে অচলাবস্থায় থাকা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কিছুটা আলো দেখা যাচ্ছে।

প্রফেসর ইউনূস রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, আপনারা আগামী ঈদ আপনাদের দেশে করবেন। বিস্ময়ের বিষয়, বাংলাদেশের মানুষ এত দ্রুত এ সুখবরটি পাবেন, হয়তো তা ধারণাও করেননি। এটাকে ইউনূস-কারিশমা বললেও বেশি হবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী নোবেল প্রাইজ পাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে তার সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সংকট ও সংস্কারের বিষয় থাকা সত্ত্বেও মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে এত বিশাল বোঝা কমানোর প্রক্রিয়া ইউনূস কীভাবে এত দ্রুত সময়ে করলেন, তা সত্যিই কৌতূহলের বিষয়। সংগত কারণেই প্রশ্ন, হাসিনা সরকার দীর্ঘ সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও পাঠাতে পারল না, সেখানে কেন মিয়ানমার সরকার প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গাকে একসঙ্গে ফেরত নিতে এখন রাজি হলো?

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করে আসছেন। গত মাসে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে যৌথভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তারা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং আগামী রোজার ঈদের আগেই রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেন। দুই নেতা এ প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যাবর্তনের পর শরণার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনার পর ড. ইউনূস বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সফরের লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য চীনের প্রভাব ব্যবহার করা। আলোচনায় বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টি থাকলেও এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনা হয়।

এ আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সমর্থন আহ্বান করা হয়। বঙ্গোপসাগরে চীনের নেভাল এবং কৌশলগত স্বার্থ এবং মিয়ানমারের ওপর তাদের প্রভাব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিতে ব্যবহৃত হয় বলে ধারণা করা যেতে পারে। মিয়ানমারের ওপর চীনের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রফেসর ইউনূস রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন সহজতর করার ক্ষেত্রে চীনের ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে, যেটিকে আঞ্চলিক অস্থিরতার অন্যতম কারণ হিসাবে দেখা দিতে পারে। এ অবস্থান থেকে মিয়ানমার সরে এসে যদি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শরণার্থীকে ফিরিয়ে নেয়, তবে এটিকে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ হ্রাস এবং বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা পুনরুদ্ধারের একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা যেতে পারে। মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য ও বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। বহু বছর ধরে চলা সংঘাতের কারণে ওই অঞ্চলটি উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমস্যা নয়, বরং এটি একটি আঞ্চলিক সমস্যা। তিনি আসিয়ান (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন) এবং অন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে এ সংকট মোকাবিলায় আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি চীন সফরের সময় বোআও ফোরাম ফর এশিয়ায় তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এশীয় নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসাবে প্রফেসর ইউনূস মিয়ানমার এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশসহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তার মর্যাদাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছেন। তার এ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন বাংলাদেশের জন্য এক ধরনের আশার আলো বলা যায়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়িত হলে তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক বড় সাফল্য হবে। তবে এ প্রক্রিয়া এখনো অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রোহিঙ্গাদের অধিকার, তাদের নিরাপত্তা এবং নাগরিকত্বের প্রশ্নগুলো এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এ প্রক্রিয়ার সফলতা নির্ভর করবে মিয়ানমারের সদিচ্ছার ওপর।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, কাতার সফরে রোহিঙ্গা বিষয়ক এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি বলেন, জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি ওঠার আগে এই সেমিনারকে তার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছে। চারদিনের সফরে গতকাল কাতার গেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি। প্রেস সচিব জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরায় বিশেষ সাক্ষাৎকার দেবেন। সেখানে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা বিষয়ক আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়াও এলএনজি আমদানি, ভিসা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হবে। কাতারের আমিরের সঙ্গেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।

জানা গেছে, চারদিনের এই সফরে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে ব্যবসা ও জ্বালানি সহযোগিতার পাশাপাশি ভিসা উন্মুক্ত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ।

দোহা থেকে কূটনৈতিক একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৩ বা ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও কাতারের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের প্রস্ততি চলছে।

প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে কারা সঙ্গী হচ্ছেন তা নিয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা এ সফরে গেছেন। যেখানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়াও দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতার গেলেন। এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন-ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।

এদিকে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫ এর আর্থনার ওয়েবসাইটে দেওয়া অনুযায়ী, দোহায় ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এবারের আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’। কাতার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত নীতি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আর্থনা সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল ফিউচার এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক।

দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে কাতারের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশটির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনন্য প্রতিবেশগত বৈচিত্রকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে। শীর্ষ সম্মেলন আলোচনার একটি প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করবে, যেখানে প্রথাগত জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিক উন্মোচন এবং এক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায়গুলো উঠে আসবে। এই শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করবেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বৈশ্বিক রোহিঙ্গা অধিকারকর্মীদের নেটওয়ার্কের অন্যতম মুখপাত্র নেই সান লুইন ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকের সাথে কথা বলেছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের সঙ্গে স্থানীয় শক্তি আরাকান আর্মির দ্বন্দ্ব নিয়ে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, দীর্ঘদিন ধরেই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলছে, তবে বাস্তবে তা আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবিলায় সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবেই দেখা গেছে।  

এখন তারা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার নাম চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছে। অথচ এখনো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার অস্বীকার করা হচ্ছে এবং তাদের অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে চলাফেরার স্বাধীনতাও মারাত্মকভাবে সীমিত। বর্তমানে রাখাইন অঞ্চল জান্তার নিয়ন্ত্রণে নেই বললেই চলে। এই প্রেক্ষাপটে জান্তা সরকারের ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার নাম চূড়ান্ত ঘোষণার মূল কারণ কী হতে পারে?

জবাবে নেই সান লুইন জানান, জান্তা সরকারের কখনোই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রকৃত কোনো সদিচ্ছা ছিল না। বিগত কয়েক বছর ধরে তারা যে সব প্রক্রিয়া দেখিয়েছে, সেগুলো ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখে নিজেকে সহযোগী হিসেবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টা মাত্র।

সম্প্রতি তারা দাবি করেছে যে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত, কিন্তু কীভাবে এই প্রত্যাবাসন হবে সে সম্পর্কে তারা কোনো স্পষ্ট তথ্য দেয়নি। আসলে যেহেতু জান্তার এখন আর অঞ্চলটির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই এই ঘোষণার বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।

সবকিছু নির্ভর করছে কে আসলে রাখাইনে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, তার উপর। এটা এক ধরনের বার্তাও হতে পারে বাংলাদেশের প্রতি: ‘আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি। যদি আপনি তাদের ফিরিয়ে দিতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে কথা বলুন।

নেই সান লুইনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন যাচাইয়ের জান্তার অনুরোধ আরাকান আর্মি (এএ) প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, রাখাইনে জান্তার কোনো কর্তৃত্ব নেই এবং বাংলাদেশের উচিত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা।

পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবস্থান কী হওয়া উচিত? জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু রাখাইন অঞ্চলে জান্তার নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই বাস্তবিক দিক থেকে বাংলাদেশের উচিত সেই শক্তির সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া, যাদের হাতে বর্তমানে বাস্তব নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এক্ষেত্রে তা হচ্ছে আরাকান আর্মি (এএ)।

বাংলাদেশের সরকার ইতোমধ্যে এএ’র সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছে, যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়, কিন্তু ব্যাপকভাবে জানা বিষয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে আরও কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আরাকানের প্রায় ৯০ শতাংশ এখন আরাকান আর্মির দখলে। এ অবস্থায় জান্তা সরকার কীভাবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবে? এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরাকান আর্মির সমঝোতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরাকান আর্মি একটি নন-স্টেট এনটিটি হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।

আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে আমেরিকা ও চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে তাদের প্রভাবের কারণে। তাই, এখনই উপযুক্ত সময় রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ নিজ গ্রামে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু করার। যেহেতু আরাকান বা রাখাইন রাজ্য এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারেরই অংশ, তাই জান্তা সরকারও এতে আপত্তি জানাবে না বলেই ধারণা করা যায়। বিশেষ করে তারা যখন ইতোমধ্যেই বলেছে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ফেরার উপযোগী।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
 ময়মনসিংহে আর্চ স্টিল ব্রিজ প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগ

ময়মনসিংহে আর্চ স্টিল ব্রিজ প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগ

 ২,৯০০ পদে জনবল নিয়োগ দিচ্ছে টিএমএসএস

২,৯০০ পদে জনবল নিয়োগ দিচ্ছে টিএমএসএস

 ভালুকায় বাবাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ, ছেলেকে ‘চাঁদাবাজ’ বানানোর অভিযোগ

ভালুকায় বাবাকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ, ছেলেকে ‘চাঁদাবাজ’ বানানোর অভিযোগ

 রাজাপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২, শোকের ছায়া পাথরঘাটায়

রাজাপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২, শোকের ছায়া পাথরঘাটায়

 ক্লাব বিশ্বকাপে ফের মেসি ম্যাজিকের অপেক্ষা, রোববারই মাঠে নামছে ইন্টার মায়ামি

ক্লাব বিশ্বকাপে ফের মেসি ম্যাজিকের অপেক্ষা, রোববারই মাঠে নামছে ইন্টার মায়ামি

 বিতর্কিত স্ট্যাটাসের জেরে বাতিল শিরিন শিলার বিটিভির অনুষ্ঠান

বিতর্কিত স্ট্যাটাসের জেরে বাতিল শিরিন শিলার বিটিভির অনুষ্ঠান

 পাইরেসির কবলে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’, অনলাইনেই দেখা যাচ্ছে সিনেমা

পাইরেসির কবলে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’, অনলাইনেই দেখা যাচ্ছে সিনেমা

 জামালপুরে ডিবি পুলিশের অভিযানে নগদ অর্থ ও জুয়ার সরঞ্জামসহ ৫ জন আটক

জামালপুরে ডিবি পুলিশের অভিযানে নগদ অর্থ ও জুয়ার সরঞ্জামসহ ৫ জন আটক

 সুনামগঞ্জে চুরির সময় দায়ের কোপে যুবকের মৃত্যু, আটক ১

সুনামগঞ্জে চুরির সময় দায়ের কোপে যুবকের মৃত্যু, আটক ১

 মানিকগঞ্জে এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটি ঘোষণা

মানিকগঞ্জে এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটি ঘোষণা

 কোচিংয়ে যাওয়ার পথে নিখোঁজ, ২ দিন পর জঙ্গলে মিলল লাশ

কোচিংয়ে যাওয়ার পথে নিখোঁজ, ২ দিন পর জঙ্গলে মিলল লাশ

 একসঙ্গে ছয়টি বিসিএস পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করল পিএসসি

একসঙ্গে ছয়টি বিসিএস পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করল পিএসসি

 আটকে পড়া ইরানি হজযাত্রীদের সহায়তায় সৌদি বাদশাহর নির্দেশ

আটকে পড়া ইরানি হজযাত্রীদের সহায়তায় সৌদি বাদশাহর নির্দেশ

 বিশ্বব্যাংকের ২৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা অনুমোদন

বিশ্বব্যাংকের ২৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা অনুমোদন

 ইরানি হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর

ইরানি হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর

 সোমবার থেকে টানা তিন দিন  ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

সোমবার থেকে টানা তিন দিন ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

 বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

 ইরানের আসাদাবাদে ড্রোন হামলা, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ নিহত ২

ইরানের আসাদাবাদে ড্রোন হামলা, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ নিহত ২

 আবারও  বাড়ল স্বর্ণের দাম

আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

সংশ্লিষ্ট

ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, করোনা শনাক্ত ৭

ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, করোনা শনাক্ত ৭

সংস্কারের জন্য তিন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

সংস্কারের জন্য তিন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

‎জুলাই থেকে জাপানে শুরু হচ্ছে এনআইডি সেবা

‎জুলাই থেকে জাপানে শুরু হচ্ছে এনআইডি সেবা

গ্যাস দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তিতাসের সতর্কবার্তা

গ্যাস দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তিতাসের সতর্কবার্তা