ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৪ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা: ফরিদা আখতার
শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে এই সরকারের আমলেই হতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র কাজ যদি কিছু থাকে, সেটা হবে শেখ হাসিনা এবং যারা এই হত্যাকারী তাদের বিচার করা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত শাহ আলী মাজারে জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের আয়োজিত ‘গণমানুষের জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ফরিদা আখতার বলেন, সত্যি কথা বলতে কী কেউ এখন পর্যন্ত একটা অভিযোগ করেনি। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে ভুল করেছে। কেউ বলেনি যে আমার ছেলে কেন গেল দুঃখে মরে যাচ্ছি। কেউ কিন্তু একথা বলেনি। এটা কিন্তু খুব খেয়াল করার বিষয়। একবারও বলেনি। যারা আহত হয়েছে তারাও একবারও বলেনি আমরা ভুল করেছিলাম। কিন্তু হ্যাঁ, একটা কথা তারা বলেছে। তারা বিচার দেখতে চায় এবং বিচারটা হতেই হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছে। তো এদের (জুলাই শহিদদের) রক্তের ওপর দিয়ে এসেছে এবং যারা আহত এখনো বাড়ি ঘরে কাতরাচ্ছে কিংবা হাসপাতালে আছে। কারো হাত নাই কারো পা নাই কারো চোখ নাই। একেবারে জলজ্যান্ত তরুণ প্রাণগুলো যে একদিন আগেও দুনিয়াটা দেখত তার সামনে দুনিয়াটা অন্ধকার। যতবারই আমি ওদের কথা (আহতদের) শুনি ততবারই আমার কাছে মনে হয় যে এটা আমাদের বারে বারে প্রতিজ্ঞার মতো নিতে হবে। বিচার যদি না হয় তাহলে এই শহিদ পরিবারের যারা, আমাদের সন্তান কবরের মধ্যে আছে আর যাদের মা-বাবা বেঁচে থেকেও নাই।
তিনি আরো বলেন, আপনারা নির্বাচনের কথা বলেন? আমরা অনির্বাচিত এই কথা কে বললো ? আমাদের তো ছাত্র-জনতা, যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে তারাই সরকার গঠন করেছে। তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হলো, তাদের যে চাহিদা সেটা মেটানো। এটাতে কোনোরকম ভুল ত্রুটি হতে পারবে না। গণহত্যার বিচার আমাদের করতেই হবে।
অনুষ্ঠানে গরিব-অসহায়দের জন্যে মেডিকেল ক্যাম্প, জুলাইয়ের গ্রাফিতি, আন্দোলনের ছবি ও খবরের কাগজ প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, জুলাই আন্দোলনে আহত, সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ভাবগানের আসর ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মিরপুরে শহিদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান, শহিদ মো. আকরাম খান রাব্বির বাবা মো. ফারুক খান, শহিদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহিদ ইমাম হোসেন তাইয়েমের ভাই রবিউল আউয়াল ও শহিদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন।
জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, আকিজ ইনসাফ গ্রুপের সিএমও শফিকুল ইসলাম তুষার, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, উদয় হাসান ও সিলমী সাদিয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আকিজ ইনসাফ গ্রুপের পক্ষ থেকে শহিদ পরিবারের সদস্যদের হাতে উপহার সামগ্রী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ