ছবি: সংগৃহীত
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার শক্তিশালী ও ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫০ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৫০০ মানুষ। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) তালেবান কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে সহায়তার আবেদন জানিয়েছে তালেবান সরকার। তালেবান কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের সীমিত সরঞ্জাম রয়েছে, তাই তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে হেলিকপ্টার সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সাহায্যের অনুরোধ করেছেন।
এনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান বলেন, ভূমিকম্পটি একটি প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় আঘাত হেনেছে, তাই ‘মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এবং অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য পেতে সময় লাগবে। আমরা একটি বিশাল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষকে সাহায্য করার জন্য শত শত লোককে একত্রিত করেছি।’
এই ভূমিকম্পটি বিশেষভাবে ভয়াবহ ছিল কারণ এটি মাত্র ৫ মাইল গভীরতায় আঘাত হানে, এমনকি মাঝারি মাত্রার ক্ষেত্রেও এটি আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী কুনার প্রদেশের নোরগাল জেলা। তালেবান সরকার জানিয়েছে, কুনারে শত শত মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হেলিকপ্টারে করে মৃতদেহ পরিবহনের প্রচেষ্টা পরিচালনাকারী একজন তালেবান নেতা বলেছেন, একটি গ্রামে ২১ জন মারা গেছে এবং ৩৫ জন আহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখনও, প্রদেশের অনেক জেলায় আফটারশক অনুভূত হচ্ছে। কুনার প্রদেশের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন যে ‘মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহ’।
তবে এই পর্যায়ে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দূরবর্তী এবং পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় কেউ সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারছে না। কিছু এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না, অন্য অংশে ভূমিধস এবং বন্যার কারণে রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে দেশটির সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনটি কম্পন অনুভূত হয়। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েক সেকেন্ড কম্পন টের পাওয়া যায়। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও অনুভূত হয়েছ কম্পন। তালেবান সরকারি কর্মকর্তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকাজে সহায়তা করার জন্য সাহায্য সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ভোরের আকাশ/মো. আ.
সংশ্লিষ্ট
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ত্রাণ নিয়ে সমুদ্রপথে এগিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এর নতুন নৌবহর। বর্তমানে ভূমধ্যসাগরের গাজা উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে আছে বহরটি।গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে এফএফসি। সেই বিবৃতে বলা হয়েছে, আমাদের ফ্লোটিলার নৌবহরটি বর্তমানে গাজার উপকূল থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল (২৭৭ কিলোমিটার) দূরে আছে। কিছু দিন আগে আমাদের ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের নৌযানগুলো সাগরের যে এলাকা থেকে ইসরায়েলি নৌবাহিনী আটক করেছিল, নতুন নৌবহরটি তার কাছাকাছি রয়েছে।এফএফসি জোটের অন্যতম সদস্য সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ব্রেকিং দ্য সিজ অন গাজা গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছে, আমরা গাজার পথে এগিয়ে যাচ্ছি।জানা গেছে, ফ্লোটিলার নতুন এই বহরটিতে আছে খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ৯টি নৌযান। এই নৌযানগুলোতে আছেন ক্রুসহ ১০০-এর অধিক স্বেচ্ছাসেবী।গত আগস্ট মাসে গাজায় খাদ্য, ওষুধবাহী ৪৩টি নৌযান পাঠানোর ঘোষণা দেয় এফএফসি জোট এবং এই মিশনের নাম দেওয়া হয় ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা; কিন্তু গাজার জলসীমায় কাছাকাছি যাওয়ার পরপরই একে একে সবগুলো নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। নৌযান, ক্রু এবং আরোহীদের নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের বন্দরে।কয়েক জন অভিযাত্রীকে আটকে রেখেছে ইসরায়েলের সরকার, বাকিদের ফেরত পাঠাচ্ছে। ইতোমধ্যে গ্রেটা থুনবার্গসহ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার শতাধিক অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠানো হয়েছে।গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌযানবহর আটকানো এবং অভিযাত্রীদের বন্দি করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে ইসরায়েলের।প্রসঙ্গত, গত ১৮ বছর ধরে গাজার সমুদ্র উপকূল অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গাজায় কোনো সমুদ্রবন্দর নেই এবং ইসরায়েলের অবরোধের কারণে আন্তর্জাতিক কোনো জাহাজ বা নৌযান গাজা উপকূলের কাছাকাছি যেতে পারে না। ফ্লোটিলার নৌবহর সেখানে পৌঁছালে তা হবে ১৮ বছর গাজার উপকূলে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক নৌবহরের নোঙ্গর করা।ভোরের আকাশ/তা.কা
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যামূলক আগ্রাসন তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজার ২০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর বড় অংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। এই হত্যাযজ্ঞে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ বাড়লেও ইসরায়েলকে এখনো অস্ত্র সরবরাহ করে চলেছে একাধিক দেশ ও প্রতিরক্ষা শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ফলে গণহত্যার অভিযোগ সত্ত্বেও টিকে আছে তেল আবিবের যুদ্ধযন্ত্র।২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরায়েলের অস্ত্র আমদানির বড় অংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে। ইতালি ও যুক্তরাজ্যও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। এর বাইরে ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কিছু সরবরাহকারী এবং ইসরায়েলের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প এই অস্ত্র সরবরাহ নেটওয়ার্ককে সচল রেখেছে। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, কীভাবে দেশ ও কোম্পানিগুলো এখনো ইসরায়েলকে অস্ত্র জোগাচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রওয়াশিংটন ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী ও রাজনৈতিক মিত্র। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একাধিকবার ভেটো দিয়েছে তারা। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপ্রি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরায়েলের মোট অস্ত্র আমদানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।বর্তমানে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক সামরিক সহায়তা ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৮ পর্যন্ত চলবে। এর বড় অংশই মার্কিন সামরিক সরঞ্জামে খরচ করতে হয়। তবে এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি মজুত থেকে বিশাল অস্ত্রসহায়তা পাঠিয়েছে। সংঘাতের প্রথম বছরেই অন্তত ৬ বিলিয়ন ডলারের গোলাবারুদ পাঠানো হয়েছে। বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, অনুমোদিত চুক্তিসহ এই পরিমাণ ২২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।এর মধ্যে আছে—অ্যাটাক হেলিকপ্টার, শহর এলাকায় যুদ্ধ পরিচালনা উপযোগী যানের জন্য ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি, স্পেয়ার পার্টস ও ডেস্ট্রয়ারের জন্য ৭৫০ মিলিয়ন ডলারসহ কয়েকটি বড় সরবরাহ। ২০২৫ সালের শুরুর দিকেই কংগ্রেস নতুন দুটি চুক্তি অনুমোদন করেছে—একটি ৮ বিলিয়ন ডলারের (বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ), আরেকটি ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের (বোমা, গাইডেন্স কিট, হেলফায়ার মিসাইল)। এগুলোর সরবরাহ ২০২৫ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে হবে।ইসরায়েল ইতিমধ্যেই হাজার হাজার এজিএম–১১৪ হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র, স্মল ডায়ামিটার বোমা (জিবিইউ ৩৯ /বি), এমকে–৮২ ও এমকে-৮৪ বোমা, জেডিএএম গাইডেন্স কিট, বিএলইউ-১০৯ বাংকার-বাস্টার বোমা, ফিউজ ও আর্টিলারি শেল পেয়েছে। মাঠ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাটারপিলার ডি–৯ বুলডোজার ব্যবহার হচ্ছে ঘরবাড়ি ধ্বংস ও ধ্বংসস্তূপ সরাতে। ইটান আর্মার্ড ভেহিকলের জন্য মার্কিন ইঞ্জিনও সরবরাহ করা হয়েছে।এই সব সরবরাহে সক্রিয় মার্কিন প্রতিরক্ষা জায়ান্টগুলো—বোয়িং, লকহিড মার্টিন, রেথিয়ন, নর্থথ্রপ গ্রুম্যান, হানিওয়েল, কলিন্স এয়ারোস্পেস, জিই অ্যাভিয়েশন, প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি, মুগ ও এল ৩ হ্যারিস। তারা ইসরায়েলকে ফাইটার জেট, গোলাবারুদ, বিমান প্রযুক্তি ও সহায়কব্যবস্থা সরবরাহ করছে।যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিএই সিস্টেমসও যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালায় এবং ইসরায়েলকে ইলেকট্রনিক যুদ্ধব্যবস্থা ও ‘ফ্রেন্ড অর ফো’ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি দিচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনীর শিল্প ঘাঁটি পাইনে ব্লাফ আর্সেনাল উৎপাদন করছে হোয়াইট ফসফরাস মিউনিশনস, যা জনবহুল এলাকায় ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছে।জার্মানিসিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরায়েলের অস্ত্র আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এসেছে জার্মানি থেকে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের বিপরীতে, বার্লিন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে আছে।২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মে’র মধ্যভাগ পর্যন্ত জার্মানি ৪৮৫ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। যদিও ২০২৪ সালে সরবরাহ কিছুটা কমেছে, তবে সামগ্রিকভাবে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে জার্মানি।প্রধান সরবরাহের মধ্যে আছে নৌবাহিনীর ফ্রিগেট, টর্পেডো এবং রাইনমেটালের তৈরি ১২০ মিমি নির্ভুল ট্যাংক গোলা। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডার স্পাইজেলের তথ্যে বলা হয়েছে, এগুলো গাজায় স্থল অভিযানে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। ২০২৪ সালে রাইনমেটালের বিক্রি ৫৮ শতাংশ বেড়েছে।এ ছাড়া, আ্যাটলাস ইলেকট্রনিক ইসরায়েলের ডলফিন-ক্লাস সাবমেরিন রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করছে ইসরায়েলি কোম্পানি Vsense Technologies-এর সঙ্গে। অন্যদিকে বেসামরিক খাতও জড়িত। জার্মানির মার্সিডিজ-বেঞ্জ তৈরি করছে ভারী ট্রাক, যা ইসরায়েলের মেরকাভা ট্যাংক বহন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।ইতালিসিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরায়েলের মোট অস্ত্র আমদানির ১ শতাংশ এসেছে ইতালি থেকে। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ হালকা হেলিকপ্টার এবং ৪১ শতাংশ জার্মান ফ্রিগেটের জন্য নৌ কামান। ইতালি এফ-৩৫ প্রোগ্রামেও অংশ নিচ্ছে এবং উপাদান তৈরি করছে। আলত্রেকোনোমিয়ার এক তদন্তে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালি ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র রপ্তানি করেছে ইসরায়েলে।যুক্তরাজ্যযুক্তরাজ্য সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলেও ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৫ সালের আগস্টে ব্রিটেন থেকে ইসরায়েলে ১ লাখ ১০ হাজার গুলি পাঠানে হয়েছে বলে জানিয়েছে চ্যানেল ৪। ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য সরকার ইসরায়েলের জন্য দেওয়া প্রায় ৩৫০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে ৩০টি স্থগিত করে। কারণ ছিল, এগুলো গাজায় ব্যবহারের ‘স্পষ্ট ঝুঁকি।’ তবে বাকি অনেক লাইসেন্স বহাল ছিল, যার মধ্যে আছে নৌ প্ল্যাটফর্ম, প্রশিক্ষণ বিমান ও দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশ।এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরির প্রোগ্রামে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা বড়। প্রতিটি জেটের প্রায় ১৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ উৎপাদন করে তারা, যা বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের মাধ্যমে ইসরায়েল ব্যবহার করছে। যুক্তরাজ্যের মুগ কোম্পানি ইসরায়েলের এম-৩৪৬ প্রশিক্ষণ বিমানের জন্য ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম সরবরাহ করছে।ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কোম্পানিগুলো অনেক সময় যুক্তরাজ্যে তৈরি উপাদান অন্য অস্ত্রের সঙ্গে মিশিয়ে পুনরায় রপ্তানি করছে।অন্যান্য সরবরাহকারীযুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের বাইরে ইসরায়েল পাচ্ছে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা। ফ্রান্সের সাফরান বিমান ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার হুনিড টেকনোলজিস সরবরাহ করছে ওয়্যারিং হারনেস ও ককপিট সিস্টেম।সব মিলিয়ে এই যুদ্ধ কেবল ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত এক অস্ত্র নেটওয়ার্ক। ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু বাড়লেও এই নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
স্কটল্যান্ডের এক নারী তুর্কি ড্রামা সিরিজ ‘কুরলুস উসমান’ দেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ড্রামাটি নির্মাণ করেছে বোজদাগ ফ্লিম, যা ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।ড্রামার প্রতি আগ্রহের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া নারীটির নাম জুলিয়েটা লোরেঞ্জা মার্টিনেজ। সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জানিয়েছে, তিনি ড্রামা দেখার সময় তুরস্কের সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক কাহিনির প্রতি মুগ্ধ হন।মার্টিনেজ বার্তাসংস্থা আনাদোলুকে বলেন, “করোনা মহামারির সময় আমি তুর্কি টিভি দেখতে শুরু করি। কুরলুস উসমানের গল্প, ইতিহাস এবং ইসলাম সম্পর্কে তথ্য আমাকে খুব প্রভাবিত করেছে। এর আগে আমি ইসলাম সম্পর্কে এত কিছু জানতাম না।”তিনি আরও জানান, “ড্রামা দেখার দুই বছর পর আমি শাহাদা পাঠ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করি। এরপর আমি তুরস্কের ইস্তাম্বুল সফর করি, যেখানে বোজদাগ ফ্লিমের ড্রামার সেট, দৃশ্যধারণের স্থান এবং কায়ি উপজাতির ক্যাম্প ঘুরে দেখেছি। এটি আমার জন্য একটি আবেগঘন অভিজ্ঞতা ছিল।”‘কুরলুস উসমান’ সিরিজটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে এটি অনুবাদ ও সম্প্রচারিত হয়েছে। ড্রামাটির মূল গল্পে অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা ও তার সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে।সূত্র: ডেইলি সাবাহভোরের আকাশ//হর
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় চাউং উ শহরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসব ও সামরিক শাসনের বিরোধী বিক্ষোভের সময় সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছেন। মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।পূর্বসূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উপলক্ষে চাউং উ শহরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উৎসব ও জান্তা বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন। এক নারী আয়োজক জানিয়েছেন, উৎসবে হাজির লোকজন কিছুক্ষণ পর বিক্ষোভ শুরু করলে সামরিক বাহিনী লক্ষ্যভ্রষ্ট করে বোমা নিক্ষেপ করে।তিনি আরও জানান, কমিটির পক্ষ থেকে আগেই মানুষকে সতর্ক করা হয়েছিল, যার ফলে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ হামলার আগেই নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সক্ষম হয়। তবে কিছুক্ষণ পর একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার উড়ে এসে অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে অনেকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থল থেকে মানবদেহের অংশ ও মাংসের টুকরা সংগ্রহ করতে হয়েছে।চাউং উ এলাকার এক স্থানীয় বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন কীভাবে তার দুই সহকর্মীসহ অনেক মানুষ বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তিনি অংশ নিয়েছেন।স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও সামরিক হামলায় ৪০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।মিয়ানমারে আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। জান্তা সরকার দাবি করেছে, নির্বাচন জাতীয় পুনর্মিলনের পথ সুগম করবে। তবে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই নির্বাচনকে ‘প্রতারণামূলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠীরাও নির্বাচনের সম্ভাব্য সাজানো প্রকৃতি চিহ্নিত করে বাধা দেয়ার হুমকি দিয়েছে।সূত্র: এএফপিভোরের আকাশ//হ.র