জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:২৯ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
জীবননগরে আমন ও রবি শস্যের ভরা মৌসুমে রাসায়নিক সারের তীব্র সংকট দেখা গেছে। এতে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারা সহ বিভিন্ন ফলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া মাঠে শীতকালীন সবজি, পেঁপে, কলা, আখ, ধান সহ নানা শস্যের চাষ রয়েছে। এসব ফসল চাষে যে পরিমাণ রাসায়নিক সারের প্রয়োজন সে তুলনায় সার পাচ্ছে না বলে কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জীবননগরে ইউরিয়া ও এমওপি সারের তেমন ঘাটতি না থাকলেও টিএসপি ও ডিএপি সারের তীব্র সংকট রয়েছে। চাষিরা ডিলারদের কাছে সার নিতে গিয়ে বারবার খালি হাতে ফিরে আসছে। অনেক জায়গায় সার কিনতে কৃষকের লম্বা লাইন দিতে দেখা গেছে।
চাষিরা অভিযোগ করে বলেছেন, ডিলারদের কাছে সার থাকে না অথচ বেশি টাকা দিলে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সার পাওয়া যায়।
শামিম হোসাইন নামের এক চাষি বলেন, বৃষ্টির পরে জমিগুলো জো হচ্ছে। এখন সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময়। কিন্তু কোথাও সার পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলারের কাছে যখনই যাই তারা বলে সার নেই। আমি পেয়ারা, আখ, শীতকাল সবজি ও আমন ধান চাষ করেছি। এখন আমার ৩/৪ বস্তা সার দরকার। কিন্তু সার পাচ্ছি না।
আরেক কৃষক আসকার আলী জানান, টিএসপি সার কেনার জন্য গতকাল ভোর থেকে ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ২৫ কেজি সার পেয়েছি। আমার ৭ বিঘা জমিতে চাষ। কতোটুকু সারে কিছুই হবে না।
ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, টিএসপি সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। এই পরিমাণ সার দিয়ে কৃষকের এতো বেশি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দের সার আসলেই সেটা ২/১ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষদের কৃষক সাজিয়ে ডিলারের নিকট থেকে সার তুলে সেগুলো দোকানে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জীবননগর কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, জীবননগর উপজেলায় সারের তেমন সংকট নেই। আমাদের জমিতে যতটুকু প্রয়োজন তার ছাড়া ৫/৬ গুণ বেশি সার প্রয়োগ করে সারের সংকট তৈরি করছি। যে জমিগুলোতে ২০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগের দরকার সেখানে আমরা ১০০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করছি। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমাদের জমির স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির উর্বরতা শক্তি কমে আসছে। এমন হতে থাকলে আগামী ২০/২৫ বছর পর এসব জমি গুলো প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে।
রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কৃষি জমিতে বেশি বেশি করে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও সারের সংকট তৈরি হবে না।
ভোরের আকাশ/জাআ