নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০২:৩৯ পিএম
ছবি : ভোরের আকাশ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন পিরোজপুরের প্রতিমা কারখানার মৃৎশিল্পীরা। তাদের হাতের ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিটি প্রতিমা।
পিরোজপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী পালপাড়া এলাকায় চলছে সবচেয়ে বেশি কর্মচাঞ্চল্য।
দুই শত বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিমা তৈরির জন্য বিখ্যাত পিরোজপুর শহরের পালপাড়া এলাকা। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম প্রতিমা শিল্প কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই এলাকা। এখানকার প্রতিমার চাহিদা শুধু পিরোজপুরেই নয়, বরিশাল, ঝালকাঠি, বাগেরহাট সহ আশপাশের জেলাগুলোতেও ব্যাপক। ফলে প্রতিমা বিক্রিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অর্থনীতিতে ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেবী দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিককে আকৃতি দিতে রাত দিন পরিশ্রম করছেন মৃৎশিল্পীরা। দম ফেলারও যেন সময়টুকু নেই তাদের। কেউ কাদা তৈরি করছেন, কেউ আবার কাদা দিয়ে প্রতিমার আকৃতি তৈরি করছেন। বেশিরভাগ এলাকাতেই প্রতিমাতে কাদামাটি লাগানোর কাজ শেষ। তবে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, বাড়তি খরচের চাপ তাদের দীর্ঘদিনের এ ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। কাঁচামাল ও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে অনেক, কিন্তু প্রতিমার দাম বাড়েনি সেই অনুপাতে। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
প্রতিমা শিল্পের কারিগর জগদীশ জানান, আমাদের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী শিল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু খরচ বাড়ছে,আয় বাড়ছে না। এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়তো এই শিল্প আর থাকবে না। প্রতিমা শিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। না হলে এ শিল্প ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট পিরোজপুরে জেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক ও দৈনিক আমার পিরোজপুর পত্রিকার সম্পাদক অনুপ কুমার সিকদার জানান,পিরোজপুর জেলায় এ বছর ৪৫৬ মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে। এ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা আর ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে প্রতিমা কারখানাগুলো। চারদিকে এখন একটাই অপেক্ষা—দুর্গা মা আসছেন, শুরু হতে যাচ্ছে বাঙালির সর্ববৃহৎ শারদীয় উৎসব।
ভোরের আকাশ/মো.আ.