রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫ ০২:২৭ পিএম
গাইবান্ধায় বেড়েছে কচুর কদর
কচু আর হেলাফেলা নয়। শুধুই গরিবের খাবারও নয়। কচু এখন সবজির তালিকায় ওপরের দিকে। গ্রামের মাটির হাঁড়ির রান্না থেকে শুরু করে দেশের নামি-দামি হোটেলেও রান্না হচ্ছে কচু। এমনকি- বিদেশ বিদেশে ও কচু খাওয়া নিয়ে হাসাহাসি করতো এবং বলতো কচু খাও কাঁচকলা খাও। কিন্তু রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে লোকজন এখন প্রচুর পরিমাণে কচু খাচ্ছে। অতীতের পাতা থেকে সরিয়ে দেয়া উত্তরবঙ্গের কথিত অভাবে (মঙ্গা) কচু-ঘেঁচু ছিল গরিবের খাবার। ধনি ও উচ্চবিত্তের লোকজন কচু দেখে মুখ সরিয়েছে। লক্ষ করা যেত বড় বড় দোকানিরাও পারতো পক্ষে কচু রাখতো না। কোনো বাড়িতে কচুশাক, ওলকচু রান্না হলে ভ্রান্ত ধারণায় বলা হতো, ওই বাড়িতে, অভাব। এসব কথা এখন শুধুই অতীত।
এ জেলার সদর, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী, ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় মান কচু, মুখিকচু, লতিরাজকচু,ওলকচু ও পানিকচু আবাদ হয়।
রবিবার (০৪ মে) দুপুরে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যমকুমোদপুর এলাকার কৃষক নুরুজ্জামান ব্যাপারি তার কচুক্ষেতে নিড়ানি দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
চাষি নুরুজ্জামান ব্যাপারি (৬৫) বলেন, প্রতি বছরের মতো এবছরেও তার ১৬ শতাংশ জমি মুখিকচু চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত কচু গান ভালো অবস্থায় আছে।আবহাওয়া ভালো থাকলে কচুর ফলন ভালো হবে এবং বাজারদর ভালো পাওয়া যাবে।
কচু মুলত সামান্য পরিচর্যায় দ্রুত বেড়ে ওঠে। রাস্তার ধারে বাড়িতে আনাচে-কানাচে ও পতিত জমিতে অনেকটা অনাদরে অবহেলায় কচু জন্মায়। কচু অনেক জাতের। কিছু কচু বনে-জঙ্গলে আপনা-আপনি জন্মায়। এ গুলো হলো বুনো কচু। কচুর বেশির ভাগ জাতই মানুষের খাবার উপযোগী। অন্যন্য সবজির মতো কচু একটি সবজি। তবে কচুপাতার ডাল বেশ সুস্বাদু। তবে কচুপাতা শাক হিসেবেও বেশি সমাদৃত।
কচু চাষে স্থল ভূমি ও জল ভূমি দুই-ই উপযুক্ত। কচুতে মূল উপাদান আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে অক্সিজেন সরবারাহ স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া পুষ্টিসমৃদ্ধ অন্য উপাদান আছে। কচুতে অক্রেনিক এসিডের উপস্থিতি থাকায় গলা চুলকাতে পারে। কচুর গুণাগুণ নিয়ে গবেষণা হওয়ায় বাংলাদেশের কচুর প্রচুর কদর বেড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী ভোরের আকাশকে বলেন, মুখি কচু চাষে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। উৎপাদনে খরচের দ্বিগুণ লাভ হয় বলে কৃষকরা দিন দিন মুখি কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। মাঠ পর্যায়ে সকল চাষিদের সর্বাত্বক পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবং সরকারিভাবে চাষিদের সার বীজ দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ