পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫ ০৩:২৮ পিএম
জাটকা নিধন যজ্ঞে নেমেছে অসাধু জেলে চক্র
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে নির্বিচারে চলছে ইলিশের পোনা (জাটকা) নিধন। এক শ্রেণির অসাধু জেলে চক্র নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ বাঁধা, গোপ, বেহুন্দি ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে এই মাছ শিকার করছে। দেড়-দুই ইঞ্চি লম্বা এসব মাছ এলাকায় ‘চাপিলা’ নামে হাট-বাজারে বিক্রি করছেন জেলেরা, পাশাপাশি তৈরি করা হচ্ছে শুঁটকি।
মৎস্য সংরক্ষণ আইনে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁসের জাল ব্যবহার করা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও এসব নদীতে জেলেরা আধা ইঞ্চি বা তার চেয়েও কম ফাঁসের জাল দিয়ে অবাধে জাটকাসহ অন্যান্য পোনা নিধন করছেন। এসব মাছ শহর ও গ্রামের হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।
পদ্মা এলাকার কয়েকজন মাছ বিক্রেতা জানান, জেলেরা নদী থেকে কারেন্ট জালে ধরে জাটকা আমাদের কাছে বিক্রি করেন। আমরা দাদন দেওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে কিনি।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের কয়েকজন জেলে বলেন, অসাধু জেলেরা সরকারি আইন না মেনে নির্বিচারে জাটকা ধরছেন এবং তা মৎস্যঘাট, বাজার ও শুঁটকিপল্লিতে সরবরাহ করে ঢাকার আড়তদারদের কাছে বিক্রি করছেন। মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এতে ভবিষ্যতে ইলিশের সংকট এবং জেলে পল্লীতে অভাব দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
রুহিতা গ্রামের জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রতিদিন প্রকাশ্যে অবৈধ জাল দিয়ে মাছের পোনা ধ্বংস করা হচ্ছে। কাকচিড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আল আমিন পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে এসে জানান, জাটকা নিধনে বাধা দিলে জেলেরা হুমকি দেন।
পাথরঘাটা ইউএনও মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, অসাধু জেলেরা অবৈধ জাল দিয়ে পোনা নিধন করছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, গত মাস থেকে আমরা ৫০টির বেশি অভিযান চালিয়েছি। আমাদের জনবল সীমিত হওয়ায় প্রতিটি স্থানে নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। এই সুযোগে অসাধু জেলেরা ‘চাপিলা’ নামে জাটকা বিক্রি করছে।
ভোরের আকাশ/এসআই