ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫ ০৮:১৭ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
গাজীপুরের শ্রীপুরে কাঁচা চামড়া গলিয়ে আঠা তৈরির ফলে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।ব্যবহৃত কাঁচামাল এবং বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল।
এমন অভিযোগ উপজেলার বরমি ইউনিয়নে কাশিজলি গ্রামের কাওরাইদ সাতখামাইর আঞ্চলিক সড়কের পাশে জনবসতিপূর্ণ এলাকার মানুষজনের।
অতিমুনাফা লোভী শাখাওয়াত নামের এক ব্যক্তি কোন সরকারি অনুমতি ছাড়াই গরু, মহিষ ও ছগলের কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়া করে আঠা তৈরি করছেন, এতে করে এই এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে।
এলাকার কয়েকজন কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সাখাওয়াত দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচা চামড়া এনে চুল্লিতে গলিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে আঠা তৈরি করে। এতে এলাকার আশপাশে কাঁচা চামড়া পুড়ানোর দুর্গন্ধে শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মহিলাদের শ্বাসকষ্ট, বমি সহ নানা রকম অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া কাঁচা চামড়ার পঁচা গন্ধে আশপাশের মানুষজন এলাকায় থাকতে পারছে না। চামড়া গলিয়ে আঠা তৈরীর সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক জমিতে পরে নষ্ট হয়ে হচ্ছে ফসল। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান এলাকাবাসী।
কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সাখাওয়াত সংশ্লিষ্ট সকলকে মেনেজ করে চলেন বলে তার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে চায় না জানান এক কৃষক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা সাঈদ চৌধুরী বলেন, চামড়ার বর্জ্য এবং রাসায়নিক পদার্থের কারণে পানি ও মাটি দূষিত হয়, যা একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। চামড়া প্রক্রিয়াকরণে বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যা বর্জ্যের সাথে মিশে পরিবেশকে দূষিত করে। চামড়া পচন ও গলানোর সময় উৎপন্ন দুর্গন্ধ এবং বায়ুতে রাসায়নিক কণা ছড়িয়ে বায়ু দূষণ ঘটায়।
চামড়ার বর্জ্য মাটিতে মিশে মাটির গুনগুন ধ্বংস করে এবং পানিতে মিশে জলজ বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে, যা স্থানীয় জীববৈচিত্র্যকেও প্রভাবিত করে। দূষিত পানি ও বায়ু মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে চামড়া থেকে আঠা তৈরি নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দূষণ কমানো সম্ভব।
কাঁচা চামড়া থেকে আঠা প্রস্তুতকারক শাখাওয়াত বলেন, আমি ছয় বছর ধরে এ ব্যবসা করছি, শ্রীপুরে সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক, একটু গন্ধ তো হবেই, সবাই মানিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া আমার চামড়ার পানিতে যে সকল কৃষকের ফসলের জমি নষ্ট হচ্ছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেই।
এবিষয় জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যারিস্টার সজিব আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই, তাছাড়া কেউ অভিযোগও করেনি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ