এসএমসিপার, নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫ ০২:৩০ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
পিরোজপুরের নাজিরপুরের কৃষকদের বিষমুক্ত কৃষি সবজি উৎপাদনে কেঁচো সার ব্যবহার করার আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে উপজেলার জনসাধারণের বিষমুক্ত সবজির চাহিদা মিটিয়ে বাহিরের জেলাগুলোতে কৃষি সবজি রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা।
উপজেলার কেঁচো সার উৎপাদনের উদ্যোক্তা বদরুল হায়দার বেপারী জানান, তার সকালের শুরুটা হয় খামারের কেঁচো এবং খামার পরিচর্যার মাধ্যমে। কাঁচা গোবর থেকে কেঁচোর মাধ্যমে তৈরি করেন ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। নিজে যেমন তৈরি করেন সার তেমনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে তিনি উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কৃষি উদ্যোক্তা তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। কেঁচো সার উৎপাদনের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ কর্তৃক পুরস্কৃত করা হয় বদরুল হায়দারকে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক-১৪২৫ সহ ২০২০ সালের ২৭শে জুলাই কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রথমবারের মতো কৃষিক্ষেত্রে গুত্বত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা এবং মাটির হারানো গুণাগুণ ফিরে পেতে ভার্মি কম্পোস্ট উল্লেখযোগ্য কাজ করে।
সরকারি সহায়তায় কেঁচো সার ব্যবহারে দেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটতে পারে। নাজিরপুরে বর্তমানে বদরুল হায়দারের উৎসাহে একদিকে পরিত্যক্ত গোবর হয়ে উঠেছে মূল্যবান সম্পদে অপরদিকে বাড়ছে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের স্পৃহা।
উপকারভোগী মঞ্জুরানী দাশ ও নিখিল নামের দুই গোবর বিক্রেতা বলেন, আগে গোবর ফেলে দিতাম। কিন্তু এখন সেই গোবর বিক্রি করে আমরা সংসারের অভাব আর ইচ্ছাগুলো পূরণ করি। নাজিরপুরের কলারদোয়নিয়া ইউনিয়নের কৃষক, পরিতোষ বেপারী জানান, আমি এ বছর ২ বিঘা জমিতে কৃষি সবজি লাউ, করল্লা, শসা, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কুমড়া, বরবটি চাষ করেছি। আগে এসব কৃষি সবজিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করতাম। এ বছর সকল সবজিতে কেঁচো সার ব্যবহার করেছি আগের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইসরাতুন্নেছা এশা জানান, বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। বর্তমান প্রচলিত জৈব সারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো হলো ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা বিভিন্নভাবে প্রদর্শনী দিয়ে থাকি। বর্তমানে আমাদের নাজিরপুরে প্রায় পাঁচশতাধিক কৃষক ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করছে। দিন দিন এর সংখ্যা বেড়ে চলছে। কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে এবং ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারও বাড়ছে।
ভোরের আকাশ/জাআ