ফের লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫ ১২:৪৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কয়েক দিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে, যার প্রভাব আজও বাজারে দেখা গেছে। একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে মৌসুমের শেষ— এই দুই কারণের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সবজির চাহিদা আরও বেড়ে যাওয়ায় দাম চড়ছে বলে উল্লেখ করছেন বিক্রেতারা।
এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার করতে গিয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সবজির বাজারে এমন বাড়তি দামের চিত্র দেখা গেছে।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫ টাকায়, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৯০ টাকা, ধুন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করোলা প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া, প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, প্রতি কেজি শসা ১০০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২৮০ টাকা, কঁচু প্রতি কেজি ৬০ টাকা এবং গাজর প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী খুরশিদ আলম। তিনি বলেন, আজকে বাজারে দেখছি সব ধরনের সবজির অতিরিক্ত দাম। বিগত কিছুদিন যাবত সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে, অথচ কী কারণে বাড়তি যাচ্ছে বা বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। যদি সবজির এত দাম হয়, তাহলে সাধারণ ক্রেতা খাবে কী?
মালিবাগ ও মুগদা বাজারের কয়েকজন ক্রেতা বলেন, বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে, কোনো সবজি নাই। কিছু কিছু সবজির এর চেয়েও বেশি দাম। এত দাম যদি সবজির হয় তাহলে আমরা কিনব কীভাবে? বিক্রেতারা কারণ হিসেবে বলছেন— থেমে থেমে বৃষ্টি আর বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ। কিন্তু আমরা ক্রেতা হিসেবে দেখতে পাচ্ছি বিগত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সবজির দাম অতিরিক্ত বেশি যাচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি প্রোটিনের বাজারেও ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। এক ডজন ব্রাউন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ডজনপ্রতি ২৪০ টাকা। মাংসের বাজারে গরুর মাংস কেজি ৭৪০ টাকা, খাসির মাংস কেজি ১১০০ টাকা। দেশি মুরগী কেজি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও দাম চড়া। বড় ইলিশ কেজি ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা, ছোট ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা, বড় রূপচাঁদা ১৬০০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা ১০০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাঙ্গাস ৬০০ টাকা, বোয়াল ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত অভিযান, মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমানো এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা জরুরি। অন্যথায় মৌসুমি কারণে নয়, সারা বছরই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
সবজির অতিরিক্ত দামের কারণ জানিয়ে মগবাজারের সবজি বিক্রেতা মুকিদুর রহমান বলেন, পাইকারি বাজারে আমাদের অতিরিক্ত দামে সব সবজি কিনতে হচ্ছে। আড়তে মালের সরবরাহ খুবই কম। যে কারণে সবজিগুলো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। একদিকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে সেজন্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সেই সঙ্গে ঢাকায় সরবরাহ কমেছে। অন্যদিকে বাজারে বর্তমানে থাকা বেশিরভাগ সবজির মৌসুম এখন শেষ হয়েছে, নতুন করে সবজি বাজারে ওঠার আগ পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.