ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ফাঁকা সড়কে চার নারীকে চাপা দেওয়ার ঘটনায় এক নারী মারা গেছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
নিহত ওই নারীর নাম তানিয়া আক্তার। তার স্বামীর নাম রনি চৌধুরী।
পুলিশ ওই নারীর পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারেনি। ওই নারীর সঙ্গে আহত অন্যরা রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিরা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার সকালে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে চার নারীকে ধাক্কা দেয় একটি প্রাইভেটকার।
ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, একটি তুলনামূলক ফাঁকা সড়ক দিয়ে চারজন নারী পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার এসে তাঁদের ধাক্কা দেয়। এতে অন্তত একজন গাড়ির নিচে চাপা পড়েন। বাকিরা ধাক্কা খেয়ে আশপাশে ছিটকে পড়েন।
সঙ্গে সঙ্গে প্রাইভেটকারটি থেমে যায়। এ সময় চালকের পাশের সিটে বসা ব্যক্তি চালকের আসনে গিয়ে গাড়ি ব্যাক গিয়ারে দিয়ে ফের দুইবার চাপা দেয় পড়ে থাকা নারীকে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে থানা-পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করলেও প্রাইভেটকারটি শনাক্ত করতে পারেনি।
এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাইভেটকারে চাপা পড়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এ কারণে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া তানিয়া আক্তারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীতে মশার উপদ্রব লাগামহীন। মশা মারতে ‘কামান দাগানো’র মতো হাজার কোটি টাকা খরচেও রাজধানীবাসীর জন্য তা স্বস্তি এনে দিতে পারেনি। উল্টো মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে ‘কচু পাতার পানি’র মতো। এখানে একটি ছোট মশা নগরবাসীর জীবন বিপন্ন করে তুলছে।যখন-তখন প্রাণ চলে যাচ্ছে মানুষের। একেকটি পরিবার স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব-অসহায় হয়ে পড়ছে। দুই সিটির বিশেষজ্ঞ, অঢেল টাকা খরচ আর প্রচার-প্রচারণা সবই যেন জলে যাচ্ছে। শুধু চলতি বছরই মারণব্যাধি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ময়কর হলো দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৫ জন মারা গেলেও উত্তর সিটিতে মারা গেছে ২৯ জন।একই শহরের একাংশে কম মৃত্যু আর আরেক অংশে কয়েক গুণ বেশি মৃত্যুতেও দক্ষিণ সিটির তেমন বিকার নেই। উদ্যোগ আর হাঁকডাকেরও শেষ নেই। কিন্তু মশার উপদ্রব কমে না। মশার কামড়ে সৃষ্ট ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যুর মিছিলও থামে না। এতে নগরবাসীর দিন কাটছে চরম দুর্দশায়।এই যেমন রাজিবুল হক ও সানজিদা ইসলাম দম্পতি। তারা থাকেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে। একমাত্র মেয়ে জাইমা নিদাতের বয়স চার বছর।জাইমা চঞ্চল প্রকৃতির হলেও কাটাতে হচ্ছে বন্দি জীবন! এই দম্পতির বাসায় তিনটি জানালা ও একটি বারান্দা থাকলেও সূর্যের খানিক আলোতেই ভরসা করতে হয়। মশা তথা ডেঙ্গু আতঙ্কে তিন জানালায় নেট লাগানো। এতে হালকা আলো এলেও বাতাস আর প্রবেশ করতে পারে না। একটি মাত্র বারান্দায় নেট লাগানোর ব্যবস্থাও না থাকায় রাতদিন বন্ধই রাখতে হচ্ছে। এমন বন্দি দশায়ই কেটে যাচ্ছে জাইমার শৈশব।একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করা রাজিবুল হক বলেন, ‘কী আর বলব। এভাবেই কেটে যাচ্ছে। মেয়ের মাকে বলেছি দিনের বেলায় বারান্দার পাশটা একটু খুলে দিতে। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য খুললেও বাসা মশার দখলে চলে যায়। ভয়ে ভয়ে থাকি। কারণ ডেঙ্গুতে আক্রান্তে মৃত্যুর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি দেখছি।’সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই দম্পতির মতো একই অবস্থা রাজধানীর বেশির ভাগ বাসিন্দারই। সম্প্রতি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মশার উপদ্রব বাড়ায় ভয় ও ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে নাগরিকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব আরো বাড়তে থাকবে। আগে শীতকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও এবার দেখা যেতে পারে ভিন্ন চিত্র।দুই সিটিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডিএনসিসিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৪২ জন, ডিএসসিসিতে সাত হাজার ৭৭৬ জন। ডিএনসিসি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ২৯ জনের আর ডিএসসিসিতে ১০৫ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন করে দুই সিটিতে আরো ২৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরে ১৪১ জন, দক্ষিণে ১১৪ জন ভর্তি হয়। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত উত্তরে একজন এবং দক্ষিণে আরো একজন মারা গেছে। বর্তমানে দুই সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছে ৮৫৯ জন।ঢাকার দুই সিটির মশক পরিস্থিতি এবং সাবধানতা নিয়ে মশা বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ যদি সব কাজ করেই থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণ কেন হচ্ছে না? এটি একটি বড় প্রশ্ন। কে কী করছে, সচেতনতা কতটা বাড়ল, এগুলো ছাড়িয়ে বড় কথা হচ্ছে ডেঙ্গু আরো বাড়বে। এখন যে চিত্র আমরা দেখছি এটি কিন্তু স্বাভাবিক চিত্র নয়। চলতি মাসে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে। এই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে শীতেও ডেঙ্গু থাকবে। হয়তো কিছুটা কমে আসবে, তবে অন্যান্য বছর এই সময়ে ততটা না থাকলেও এবার থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মশক কার্যক্রমে গতি আনা উচিত।’বছর বছর মশা নিধনে বাজেট বাড়লেও উপদ্রব কমে না: দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ বছরে ঢাকার মশা নিধনের নানা পদক্ষেপের পেছনে খরচ হয়েছে এক হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে দুই সিটিতে মশা নিধনে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫৪ কোটি টাকা। ডিএসসিসি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় রাখা হয়। অন্যদিকে উত্তরে প্রায় ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে রাখা হয় ৬৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন ও পরিবহন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক এবং মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে বরাদ্দ রাখা হয়।২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরে এক কোটি টাকা বাড়িয়ে মশা নিধনে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ডিএসসিসি। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে মশা নিধনে ফগার, হুইল ও স্প্রে মেশিন বাবদ আরো দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য ১৮৭ কোটি টাকা টাকা, মোট বাজেটের ৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অথচ আগের বছরে ছিল ১১০ কোটি টাকা।মশা নিধনে দুই সিটির কার্যক্রম: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল-বিকাল প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করা হয়। এ বছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর জনসচেতনতার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ছোট ছোট টিম করে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে। ওয়ার্ড সচিবদের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে যে যাই বলুক শুধু কীটনাশক ছিটিয়ে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যদি তাই হতো নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, লার্ভিসাইড বা কীটনাশক প্রয়োগ করা হলেও কেন মশা কমছে না। আসল সমস্যা এই শহরের কাঠামোতে। কারণ এ শহরে ড্রেন, ডোবা, নর্দমা, বিল, ঝিল ও খালে পানির প্রবাহ নেই। এসব স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এতে পানির ঘনত্ব বেড়ে মশা প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর সবাই সিটি করপোরেশনকেই দোষ দিচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশন এমনটা বললেও দক্ষিণে প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং করার জন্য সকালে সাত মশককর্মী আর বিকেলে ছয় মশককর্মী থাকার কথা থাকলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ বাস্তবে এমনটা দেখা যায় না।জানা গেছে, উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক সময়ের স্প্রে থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া অনেক ধরনের কমিটি করা হয়েছে। কারিগরি কমিটি, স্পেশাল টাস্কফোর্স কমিটি, ওয়ার্কিং কমিটি, ওয়ার্ড লেভেল কমিটি, এখন আবার নতুন কীটনাশকের গুণাগুণ যাচাইয়ের জন্য কমিটি। এসব কমিটিতে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। কিন্তু এর পরও মশা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।তবে উত্তরে এই মশককর্মীর কার্যক্রম তদারকির জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সহযোগিতা নিলেও দক্ষিণ সেটি করেনি বলে জানা গেছে। ডিএনসিসি জলাশয়গুলোতে নোভালরুন ট্যাবলেট ছিটিয়েছে। দুই সিটিতেই জলাশয়গুলোর কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারেও এবার গতি কম।এমন পরিস্থিতিতে মাঝেমধ্যেই ভারি বৃষ্টিতে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের আগে উন্মুক্ত ড্রেন, বক্স-কালভার্টের বর্জ্য যেভাবে অপসারণের প্রয়োজন ছিল, সেখানেও এবার ঘাটতি আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। উত্তরে মশক নিধনের জন্য কিছু হুইলব্যারো মেশিন সংগ্রহ করা হলেও সেগুলো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টেকনিক্যাল কমিটি বুঝে না নিলে কিছু করা যাচ্ছে না। যে যা-ই বলুক বাসিন্দাদের ভোগান্তি আর কমছে না।ঢাকার লালবাগের শহীদনগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বসবাস ওয়াশিউর রহমান নামের এক টেকনিশিয়ানের। তিনি বলেন, ‘দিনরাত নাই। সব সময় মশার যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। কয়েল, মশারি কিছুতেই নিস্তার নেই। কিভাবে যে ঢুকে তা বুঝতে পারি না। বাসায় কারো জ্বর হলেই ভয়ে থাকি।’মিরপুরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল করীম মাঝি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে আমাদের বাসার গলিতে পানি জমে। কয়েক ঘণ্টা পর পানি সরে গেলেও কিছু জায়গায় পানি আটকে থাকে। ড্রেন আর জমা পানিতে মশার বাচ্চা কিলবিল করতে দেখি। আগে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের যে পরিমাণ স্প্রে করতে দেখতাম এখন ততটা দেখি না। মনে হয় দায়সারা কাজ করে।’জানা গেছে, বর্তমানে ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তারা ওয়ার্ড সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞাত না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ফলে কোন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে, সেটি তারা বুঝতে পারছেন না। আগে ড্রোন দিয়ে ওপর থেকে মশার ক্লাস্টার চিহ্নিত করে সেখানে ওষুধ ছিটানোর কাজও চলেছে কখনো কখনো। ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্মীয়মাণ ভবন বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা, মশা বা মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পেলেই জরিমানা করা হয়েছে। গুণী ও জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে ডেঙ্গুবিষয়ক নানা প্রচারাভিযানও চালাতে দেখা গেছে। এখন এসব দেখা যায় না।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ১০টি করে ২০টি অঞ্চলে ২০ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও আছেন ১১ জন। আগে মশককর্মীদের ওষুধ দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতেন প্রতিটি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর। দুই সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর ছিলেন ১২৬ জন। এখন কাঠামোতে সমস্যা হওয়ায় মাঠের কাজেও প্রভাব পড়ছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কী বলছেন: এসব বিষয়ে ডিএসসিসির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ডেঙ্গু ফোকাল পারসন ডা. ফারিয়া ফয়েজ বলেন, ‘আগে ওয়ার্ড সচিবদের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও এখন আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে। এখানে কোনো ঘাটতি নেই। বরং আগের চেয়ে এখন ভালোভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর বিভিন্ন ওয়ার্ডের মশককর্মীরা অনুপস্থিত থাকায় ঘাটতি তৈরি হয়। এটি পরবর্তী সময়ে পূরণ হয়ে গেছে। যদিও একটু অদক্ষ হওয়ায় তাদের সময় লাগছে।’১০৫ জন মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণে ২৪ জন মারা গেছে। আর যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা চিকিৎসা নিতে এসে মারা গেছে।’ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মশক নিধনে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। হুইলব্যারো মেশিনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন ডা. ইমদাদুল হক।’পরে উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হুইলব্যারো মেশিন এখনো রিসিভ করা হয়নি। দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে রিসিভ করা হবে। আমাদের কাছে এলেও এটি টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে রিসিভ করতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী স্যার কেন আমার সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন তা জানি না। এই বিষয়ে কথা বলবেন আমাদের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্যার। তিনি আমাকে বললে আমি কথা বলতে পারতাম। আমরা চাইলেই কথা বলতে পারব না। মিটিং হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপনও হয়েছে, আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলব না।’পরে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরীর অফিশিয়াল নাম্বারে বারবার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র: কালের কণ্ঠভোরের আকাশ/মো.আ.
রাজধানীর ধানমন্ডিতে ফাঁকা সড়কে চার নারীকে চাপা দেওয়ার ঘটনায় এক নারী মারা গেছেন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।নিহত ওই নারীর নাম তানিয়া আক্তার। তার স্বামীর নাম রনি চৌধুরী।পুলিশ ওই নারীর পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারেনি। ওই নারীর সঙ্গে আহত অন্যরা রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিরা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ।এর আগে গত সোমবার সকালে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে চার নারীকে ধাক্কা দেয় একটি প্রাইভেটকার।ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, একটি তুলনামূলক ফাঁকা সড়ক দিয়ে চারজন নারী পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকার এসে তাঁদের ধাক্কা দেয়। এতে অন্তত একজন গাড়ির নিচে চাপা পড়েন। বাকিরা ধাক্কা খেয়ে আশপাশে ছিটকে পড়েন।সঙ্গে সঙ্গে প্রাইভেটকারটি থেমে যায়। এ সময় চালকের পাশের সিটে বসা ব্যক্তি চালকের আসনে গিয়ে গাড়ি ব্যাক গিয়ারে দিয়ে ফের দুইবার চাপা দেয় পড়ে থাকা নারীকে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে থানা-পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করলেও প্রাইভেটকারটি শনাক্ত করতে পারেনি।এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাইভেটকারে চাপা পড়ার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এ কারণে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া তানিয়া আক্তারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ভোরের আকাশ/মো.আ.
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় উদ্ধার কাজ ও অন্যান্য কার্যক্রমে দ্রুত সহযোগিতা নিশ্চিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জোন-১ (উত্তরা) এর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।সোমবার (২১ জুলাই) ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জোবায়ের হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বরা হয়েছে, বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় যে কোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে ডিএনসিসি প্রস্তুত রয়েছে।ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগসহ সব বিভাগ এই সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।শোকবার্তায় ডিএনসিসি প্রশাসক মরদেহের শান্তি কামনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং সবাইকে ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান।ভোরের আকাশ/জাআ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা।ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ জন সদস্য সোমবার (৩০ জুন) নগর ভবনে এ সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভার শুরুতে ৫ মে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন। বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।” সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/আজাসা