সবজিতে স্বস্তি, মাছ-মাংস নাগালের বাইরেই
রাজধানীর বাজারে সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে মাছ ও মাংসের দামে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়নি। অনেকটা আগের মতোই স্থিতিশীল। দাম নাগালের বাইরে বলে মনে করেন সাধারণ ক্রেতারা। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্রই জানা গেছে। ক্রেতারা বলছেন, গত এক সপ্তাহের তুলনায় পেঁপে, কাঁচা লঙ্কা, শসা, লাউ, ঝিঙ্গে, বরবটি, বেগুনসহ বেশ কিছু সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে। বাজারে রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি, আর দেশি চাষের পাঙ্গাশ ২০০ টাকার আশেপাশে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে, আর ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।ক্রেতারা বলছেন, সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি পেলেও মাছ-মাংসের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় সবজির দাম কমেছে, তবে মাছ ও মাংসের বাজারে চাহিদা ও খরচ একই থাকায় দাম স্থিতিশীল রয়েছে।আজ শুক্রবার (১৬ মে) সকালে যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, রায়েরবাগ, শনিরআখড়ার বিভিন্ন কাঁচাবাজার দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দাম কিছুটা স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।পেঁপে ২৫-৩০ টাকা প্রতি কেজি (আগে ছিল ৩৫-৪০ টাকা), লাউ ৫০-৬০ টাকা প্রতি পিস, বেগুন ৪৫-৫০ টাকা প্রতি কেজি (আগে ছিল ৬০ টাকা), ঝিঙ্গে/ঢেঁড়শ: ৫০-৫৫ টাকা প্রতি কেজি, বরবটি ৬০ টাকা প্রতি কেজি, টমেটোর কেজি ৪০-৪৫ টাকা, আলুর দাম ৩০ টাকা প্রতি কেজি (দাম অপরিবর্তিত)।যাত্রাবাড়ী আড়তের বিক্রেতা হানিফ মিয়া বলেন, সপ্তাহে সরবরাহ ভালো, তাই কিছু সবজি কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহান্তে আবার দাম বাড়তেও পারে। মাছ-মাংসে তেমন পরিবর্তন নেই। মাছের বাজারে গেল সপ্তাহের মতোই দাম স্থির রয়েছে।রুই মাছ: ২৮০-৩২০ টাকা প্রতি কেজি, কাতলা মাছ: ৩৫০-৪০০ টাকা, বিদেশি পাঙ্গাশ: ২০০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া/নিলোটিকা: ১৫০-১৮০ টাকা, তবে মুরগির দামে কিছুটা কমেছে।বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি: ১৭০-১৮০ টাকা প্রতি কেজি, সোনালী মুরগি: ৩২০-৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি: ৫৫০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের দামে কোনো প্রকার পরিবর্তন না থাকায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো বেশ চাপে রয়েছে।শ্যামপুর কাঁচা বাজার করতে আসা চাকরিজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, সবজির দামে একটু স্বস্তি পেলেও সপ্তাহের বাজার করতে গিয়ে মাছ-মাংসের দামের জায়গায় এসে আবার দম বন্ধ হয়ে যায়।অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, মাংসের উৎপাদন খরচ ও পরিবহন ব্যয় বেশি হওয়ায় দাম কমানোর সুযোগ কম। এক দোকানদার জানান, আমরা নিজেরা বেশি দামে কিনি, তাই কম দামে বেচা সম্ভব না।সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও, মাছ ও মাংসের দাম সাধারণ মানুষের আয়-ব্যয়ের ওপর বাড়তি চাপ ফেলছে। বাজার পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য সরকারের তরফ থেকে নিয়মিত মনিটরিং এবং সরবরাহ শৃঙ্খলা বজায় রাখা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।ভোরের আকাশ/আজাসা