ফাইল ছবি
ঈদুল আজহার ষষ্ঠদিন আজ। ছুটি প্রায় শেষের পথে। তাই এ ছুটিতে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় ভিড় করেছেন সব বয়সী মানুষ। কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে। কেউ বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। কেউ এসেছেন ছায়াঘেরা বিনোদনকেন্দ্রটিতে গরমে একটু প্রশান্তির খোঁজে। গাছের ছায়ায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখি দেখছেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়।
সরেজমিন চিড়িয়াখানার বাইরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছে অনেকে। ঢাকার বাইরে থেকেও এসেছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে আবার চিড়িয়াখানার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা হকারদের কাছ থেকে কিনছেন বাঁশি, ময়ূরের পালক ও ফুলসহ নানা রকম খেলনা।
ঈদের ছুটিতে যানজটমুক্ত রাজধানীতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে স্বস্তি নগরবাসীর। শিশু-কিশোরদের আবদার মেটাতে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসছেন অনেকে। নানা প্রজাতির প্রাণীর দেখা পাওয়ার পাশাপাশি স্বস্তি মিলছে গাছের ছায়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে। সাভার নবীনগর থেকে ৯ বছরের ছেলে তামিমকে নিয়ে এসেছেন হামিদ-রোজিনা দম্পতি।
হামিদ হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের বাসা আদাবরে। চিড়িয়াখানায় আসার পরিকল্পনা করেই আজ ঢাকায় এসেছি। আজকে চিড়িয়াখানায় এলাম। বাচ্চাকে পশু-পাখি দেখাতে। রাতে আবার ফিরে যাব।
গাজীপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সিরাজুল মিয়া বলেন, মেয়েকে চিড়িয়াখানা দেখাতে কাপাসিয়া থেকে এসেছি। অনেক পশুপাখি আছে, মেয়েকে সেগুলোর নামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাবে।
প্রচণ্ড রোদে খানিকটা অসুবিধার কথা জানালেন এক দর্শনার্থী। দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে আসা ওই দর্শনার্থী বলেন, ছেলের আবদার মেটাতে তাকে বানর-হাতি-বাঘ দেখতে চিড়িয়াখানায় এসেছি। কিন্তু প্রচণ্ড রোদে খুব একটা ঘুরতে পারিনি। কয়েকটি খাঁচা ঘুরে বের হয়ে এসেছি।
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধার বিষেয়ে নানা পদক্ষেপের কথা জানান জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের যাতে সুন্দর ও নিরাপদে চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি পুলিশ রয়েছে। দর্শনার্থীরা ১৮টি ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে পারছেন। পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
রাজধানীতে মশার উপদ্রব লাগামহীন। মশা মারতে ‘কামান দাগানো’র মতো হাজার কোটি টাকা খরচেও রাজধানীবাসীর জন্য তা স্বস্তি এনে দিতে পারেনি। উল্টো মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে ‘কচু পাতার পানি’র মতো। এখানে একটি ছোট মশা নগরবাসীর জীবন বিপন্ন করে তুলছে।যখন-তখন প্রাণ চলে যাচ্ছে মানুষের। একেকটি পরিবার স্বজন হারিয়ে নিঃস্ব-অসহায় হয়ে পড়ছে। দুই সিটির বিশেষজ্ঞ, অঢেল টাকা খরচ আর প্রচার-প্রচারণা সবই যেন জলে যাচ্ছে। শুধু চলতি বছরই মারণব্যাধি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ময়কর হলো দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৫ জন মারা গেলেও উত্তর সিটিতে মারা গেছে ২৯ জন।একই শহরের একাংশে কম মৃত্যু আর আরেক অংশে কয়েক গুণ বেশি মৃত্যুতেও দক্ষিণ সিটির তেমন বিকার নেই। উদ্যোগ আর হাঁকডাকেরও শেষ নেই। কিন্তু মশার উপদ্রব কমে না। মশার কামড়ে সৃষ্ট ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যুর মিছিলও থামে না। এতে নগরবাসীর দিন কাটছে চরম দুর্দশায়।এই যেমন রাজিবুল হক ও সানজিদা ইসলাম দম্পতি। তারা থাকেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে। একমাত্র মেয়ে জাইমা নিদাতের বয়স চার বছর।জাইমা চঞ্চল প্রকৃতির হলেও কাটাতে হচ্ছে বন্দি জীবন! এই দম্পতির বাসায় তিনটি জানালা ও একটি বারান্দা থাকলেও সূর্যের খানিক আলোতেই ভরসা করতে হয়। মশা তথা ডেঙ্গু আতঙ্কে তিন জানালায় নেট লাগানো। এতে হালকা আলো এলেও বাতাস আর প্রবেশ করতে পারে না। একটি মাত্র বারান্দায় নেট লাগানোর ব্যবস্থাও না থাকায় রাতদিন বন্ধই রাখতে হচ্ছে। এমন বন্দি দশায়ই কেটে যাচ্ছে জাইমার শৈশব।একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করা রাজিবুল হক বলেন, ‘কী আর বলব। এভাবেই কেটে যাচ্ছে। মেয়ের মাকে বলেছি দিনের বেলায় বারান্দার পাশটা একটু খুলে দিতে। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য খুললেও বাসা মশার দখলে চলে যায়। ভয়ে ভয়ে থাকি। কারণ ডেঙ্গুতে আক্রান্তে মৃত্যুর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি দেখছি।’সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই দম্পতির মতো একই অবস্থা রাজধানীর বেশির ভাগ বাসিন্দারই। সম্প্রতি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মশার উপদ্রব বাড়ায় ভয় ও ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছে নাগরিকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব আরো বাড়তে থাকবে। আগে শীতকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও এবার দেখা যেতে পারে ভিন্ন চিত্র।দুই সিটিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডিএনসিসিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৪২ জন, ডিএসসিসিতে সাত হাজার ৭৭৬ জন। ডিএনসিসি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ২৯ জনের আর ডিএসসিসিতে ১০৫ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন করে দুই সিটিতে আরো ২৫০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরে ১৪১ জন, দক্ষিণে ১১৪ জন ভর্তি হয়। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত উত্তরে একজন এবং দক্ষিণে আরো একজন মারা গেছে। বর্তমানে দুই সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছে ৮৫৯ জন।ঢাকার দুই সিটির মশক পরিস্থিতি এবং সাবধানতা নিয়ে মশা বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ যদি সব কাজ করেই থাকে তাহলে নিয়ন্ত্রণ কেন হচ্ছে না? এটি একটি বড় প্রশ্ন। কে কী করছে, সচেতনতা কতটা বাড়ল, এগুলো ছাড়িয়ে বড় কথা হচ্ছে ডেঙ্গু আরো বাড়বে। এখন যে চিত্র আমরা দেখছি এটি কিন্তু স্বাভাবিক চিত্র নয়। চলতি মাসে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাবে। এই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে শীতেও ডেঙ্গু থাকবে। হয়তো কিছুটা কমে আসবে, তবে অন্যান্য বছর এই সময়ে ততটা না থাকলেও এবার থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মশক কার্যক্রমে গতি আনা উচিত।’বছর বছর মশা নিধনে বাজেট বাড়লেও উপদ্রব কমে না: দুই সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ বছরে ঢাকার মশা নিধনের নানা পদক্ষেপের পেছনে খরচ হয়েছে এক হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে দুই সিটিতে মশা নিধনে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫৪ কোটি টাকা। ডিএসসিসি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় রাখা হয়। অন্যদিকে উত্তরে প্রায় ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে মশা নিধনে কীটনাশক কিনতে রাখা হয় ৬৫ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন ও পরিবহন, ব্লিচিং পাউডার ও জীবাণুনাশক এবং মশা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি কিনতে বরাদ্দ রাখা হয়।২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরে এক কোটি টাকা বাড়িয়ে মশা নিধনে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে ডিএসসিসি। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে মশা নিধনে ফগার, হুইল ও স্প্রে মেশিন বাবদ আরো দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য ১৮৭ কোটি টাকা টাকা, মোট বাজেটের ৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অথচ আগের বছরে ছিল ১১০ কোটি টাকা।মশা নিধনে দুই সিটির কার্যক্রম: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল-বিকাল প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করা হয়। এ বছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর জনসচেতনতার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে ছোট ছোট টিম করে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে। ওয়ার্ড সচিবদের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে যে যাই বলুক শুধু কীটনাশক ছিটিয়ে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যদি তাই হতো নিয়মিত ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, লার্ভিসাইড বা কীটনাশক প্রয়োগ করা হলেও কেন মশা কমছে না। আসল সমস্যা এই শহরের কাঠামোতে। কারণ এ শহরে ড্রেন, ডোবা, নর্দমা, বিল, ঝিল ও খালে পানির প্রবাহ নেই। এসব স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এতে পানির ঘনত্ব বেড়ে মশা প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর সবাই সিটি করপোরেশনকেই দোষ দিচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশন এমনটা বললেও দক্ষিণে প্রতিটি ওয়ার্ডে লার্ভিসাইডিং করার জন্য সকালে সাত মশককর্মী আর বিকেলে ছয় মশককর্মী থাকার কথা থাকলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ বাস্তবে এমনটা দেখা যায় না।জানা গেছে, উত্তর সিটিতে মশা নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিক সময়ের স্প্রে থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া অনেক ধরনের কমিটি করা হয়েছে। কারিগরি কমিটি, স্পেশাল টাস্কফোর্স কমিটি, ওয়ার্কিং কমিটি, ওয়ার্ড লেভেল কমিটি, এখন আবার নতুন কীটনাশকের গুণাগুণ যাচাইয়ের জন্য কমিটি। এসব কমিটিতে বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। কিন্তু এর পরও মশা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।তবে উত্তরে এই মশককর্মীর কার্যক্রম তদারকির জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সহযোগিতা নিলেও দক্ষিণ সেটি করেনি বলে জানা গেছে। ডিএনসিসি জলাশয়গুলোতে নোভালরুন ট্যাবলেট ছিটিয়েছে। দুই সিটিতেই জলাশয়গুলোর কচুরিপানা ও আবর্জনা পরিষ্কারেও এবার গতি কম।এমন পরিস্থিতিতে মাঝেমধ্যেই ভারি বৃষ্টিতে মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের আগে উন্মুক্ত ড্রেন, বক্স-কালভার্টের বর্জ্য যেভাবে অপসারণের প্রয়োজন ছিল, সেখানেও এবার ঘাটতি আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। উত্তরে মশক নিধনের জন্য কিছু হুইলব্যারো মেশিন সংগ্রহ করা হলেও সেগুলো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টেকনিক্যাল কমিটি বুঝে না নিলে কিছু করা যাচ্ছে না। যে যা-ই বলুক বাসিন্দাদের ভোগান্তি আর কমছে না।ঢাকার লালবাগের শহীদনগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বসবাস ওয়াশিউর রহমান নামের এক টেকনিশিয়ানের। তিনি বলেন, ‘দিনরাত নাই। সব সময় মশার যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। কয়েল, মশারি কিছুতেই নিস্তার নেই। কিভাবে যে ঢুকে তা বুঝতে পারি না। বাসায় কারো জ্বর হলেই ভয়ে থাকি।’মিরপুরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা রেজাউল করীম মাঝি বলেন, ‘বৃষ্টি হলে আমাদের বাসার গলিতে পানি জমে। কয়েক ঘণ্টা পর পানি সরে গেলেও কিছু জায়গায় পানি আটকে থাকে। ড্রেন আর জমা পানিতে মশার বাচ্চা কিলবিল করতে দেখি। আগে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের যে পরিমাণ স্প্রে করতে দেখতাম এখন ততটা দেখি না। মনে হয় দায়সারা কাজ করে।’জানা গেছে, বর্তমানে ১০ থেকে ১২টি ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তারা ওয়ার্ড সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞাত না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। ফলে কোন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে, সেটি তারা বুঝতে পারছেন না। আগে ড্রোন দিয়ে ওপর থেকে মশার ক্লাস্টার চিহ্নিত করে সেখানে ওষুধ ছিটানোর কাজও চলেছে কখনো কখনো। ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্মীয়মাণ ভবন বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা, মশা বা মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পেলেই জরিমানা করা হয়েছে। গুণী ও জনপ্রিয় তারকাদের নিয়ে ডেঙ্গুবিষয়ক নানা প্রচারাভিযানও চালাতে দেখা গেছে। এখন এসব দেখা যায় না।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ১০টি করে ২০টি অঞ্চলে ২০ জন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও আছেন ১১ জন। আগে মশককর্মীদের ওষুধ দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতেন প্রতিটি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর। দুই সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর ছিলেন ১২৬ জন। এখন কাঠামোতে সমস্যা হওয়ায় মাঠের কাজেও প্রভাব পড়ছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কী বলছেন: এসব বিষয়ে ডিএসসিসির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ডেঙ্গু ফোকাল পারসন ডা. ফারিয়া ফয়েজ বলেন, ‘আগে ওয়ার্ড সচিবদের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও এখন আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে। এখানে কোনো ঘাটতি নেই। বরং আগের চেয়ে এখন ভালোভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর বিভিন্ন ওয়ার্ডের মশককর্মীরা অনুপস্থিত থাকায় ঘাটতি তৈরি হয়। এটি পরবর্তী সময়ে পূরণ হয়ে গেছে। যদিও একটু অদক্ষ হওয়ায় তাদের সময় লাগছে।’১০৫ জন মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণে ২৪ জন মারা গেছে। আর যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা চিকিৎসা নিতে এসে মারা গেছে।’ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মশক নিধনে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। হুইলব্যারো মেশিনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন ডা. ইমদাদুল হক।’পরে উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হুইলব্যারো মেশিন এখনো রিসিভ করা হয়নি। দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে রিসিভ করা হবে। আমাদের কাছে এলেও এটি টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে রিসিভ করতে হবে।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী স্যার কেন আমার সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন তা জানি না। এই বিষয়ে কথা বলবেন আমাদের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্যার। তিনি আমাকে বললে আমি কথা বলতে পারতাম। আমরা চাইলেই কথা বলতে পারব না। মিটিং হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপনও হয়েছে, আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলব না।’পরে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরীর অফিশিয়াল নাম্বারে বারবার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র: কালের কণ্ঠভোরের আকাশ/মো.আ.
ঢাকাসহ সারা দেশে আজ দুপুরে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে ঢাকার আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকার আকাশ আজ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি। এ ছাড়া দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।এ সময় দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।গতকালকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৩ শতাংশ। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।এদিকে সবশেষ সারা দেশের জন্য দেওয়া ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আজ সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝাররি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু বা ভাসমান জনগোষ্ঠী এ কার্যক্রমের বাইরে থাকবে না।জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত কর্মশালায় জানানো হয়, টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত টিসিভি টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত শিশুদের ইপিআই কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়া হবে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের উরুর মাংসপেশিতে এবং দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের বাহুর উপরিভাগে ০.৫ এম.এল. ইনজেকশন দেওয়া হবে।বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই টাইফয়েডে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে। তাই এ বয়সী শিশুদের এক ডোজ টিকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম কর্মশালায় বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।’জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে যে সাফল্য দেখিয়েছে, তার পেছনে গণমাধ্যমের অবদান রয়েছে। এবারও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় টিসিভি টিকাদান কর্মসূচি সফল হবে।’আয়োজকদের মতে, কোনো শিশু বা ভাসমান জনগোষ্ঠী যেন টিকাদানের বাইরে না থাকে, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সচেতনতা বাড়লে শিশু-কিশোরদের মধ্যে টাইফয়েড সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।কর্মশালায় আরো জানানো হয়, বেদে সম্প্রদায়সহ দেশের কোনো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও এ কার্যক্রমের বাইরে থাকবে না। আয়োজকরা আশা করেন, গণমাধ্যমের সহযোগিতায় সচেতনতা ছড়িয়ে পড়লে শিশু-কিশোরদের মধ্যে টাইফয়েড সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।ভোরের আকাশ/জাআ
রাজধানীর সদরঘাটের পাইকারি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম। তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।তবে প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।ভোরের আকাশ/এসএইচ