ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ, জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের বৈঠক চূড়ান্ত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া ফোনালাপের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের মুখোমুখি বৈঠক চূড়ান্ত হয়েছে। এই খবর জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ সোমবার রাতে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।মের্জ বলেন, ‘পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও বৈঠকের স্থান এখনও নির্ধারিত হয়নি।’ তিনি আরও জানান, বৈঠকের জন্য ভালো প্রস্তুতি প্রয়োজন, কিন্তু পুতিন কি আসলে এই সাহস দেখাবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।জেলেনস্কির শর্তহীন আগ্রহবৈঠকের ব্যাপারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া প্রথমে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক প্রস্তাব দিয়েছে, যার পর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি যেকোনো ফর্ম্যাটে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। আমি শর্ত আরোপ করতে চাই না, কারণ পুতিন নিজেই শর্ত নিয়ে আসবেন। আমাদের নিঃশর্তভাবে মিলিত হয়ে যুদ্ধ শেষের পথ বের করতে হবে।’তবে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।নিরাপত্তা গ্যারান্টির জন্য ৯০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তিজেলেনস্কি আরও জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির অংশ হিসেবে ইউরোপীয় অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনে ড্রোন উৎপাদনের একটি প্রকল্পের কথা চলছে, যার কিছু ড্রোন যুক্তরাষ্ট্র কিনবে। তিনি জানান, এই আলোচনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং আগামী এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।ট্রাম্পের কূটনৈতিক ভূমিকাপ্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৈঠক ও আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ দিতে পারছি না, তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেব।’এই ঘোষণায় জেলেনস্কি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য শক্তিশালী বার্তা।’ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ও ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটেও ট্রাম্পের ভূমিকাকে প্রশংসা করেছেন এবং ইউক্রেন সংকট সমাধানের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।সামরিক পরিস্থিতি ও কূটনৈতিক প্রসঙ্গট্রাম্প যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধ থামবে কি না তা জানা যাবে,” তবে বিষয়টি অনেক বেশি জটিল বলেও স্বীকার করেন।জার্মান চ্যান্সেলর মের্জ বলেন, ‘রাশিয়া ডনবাস ছেড়ে দিতে চায়, যা একরকম ইউক্রেনের ফ্লোরিডা ছেড়ে দেয়ার মতো।’কূটনৈতিক আবহ ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাএই বৈঠকের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও দীর্ঘমেয়াদী শান্তির পথে বড় পদক্ষেপ নেওয়ার আশা তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও পুতিনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে সংলাপ আরও এগিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়া এই সংকট সমাধান সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দকেও এতে যুক্ত করা হতে পারে।’ভোরের আকাশ/মো.আ.