× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্ক আর কত বাড়াবে

ইমরুল শাহেদ

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০২ পিএম

যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্ক আর কত বাড়াবে

যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্ক আর কত বাড়াবে

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি শুল্ক আরোপের ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যে বাড়তি ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। আগে এই শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ। ফলে বর্তমান শুল্ক ১৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে। ১২৫ শতাংশ করেছে। আজ শনিবার এই বাড়তি শুল্ক কার্যকর হবে।

চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র এভাবে চীনের স্বার্থ বিঘ্নকারী পদক্ষেপ নিতেই থাকে, তাহলে চীনও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে থাকবে এবং এর শেষ দেখে ছাড়বে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তিপণ্যের ওপর। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য তৈরি প্রায় ৮০ শতাংশ অ্যাপল পণ্যই উৎপাদিত হয় চীনে। যদি শুল্কজনিত খরচ ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে একটি আইফোনের দামই কয়েকশ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, ডলারের মূল্য ওঠানামার কারণে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপসহ অন্য দেশগুলোতেও আইফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এ ধরনের একতরফা শুল্ক বৃদ্ধিকে ‘গুণ্ডামি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন। সেই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দায়ের করেছে বেইজিং।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ একটি ভুলের ওপর আরেকটি ভুল, যা যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা দমনমূলক আচরণকেই প্রতিফলিত করে।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, আমরা পেছাবো না। চীন উসকানিকে ভয় পায় না। তিনি কোরিয়ান যুদ্ধের সময় চীনা নেতা মাও সেতুংয়ের একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে বলা হয়, এই যুদ্ধ যত দীর্ঘই হোক, আমরা কখনো আত্মসমর্পণ করবো না। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বেইজিংয়ের সঙ্গে একত্র হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফা নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা আসলো।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একতরফা চাপ সৃষ্টিকারী শুল্কনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চীনের সঙ্গে যেন তারা হাত মেলায়। কারণ ট্রাম্পের এই নীতিতে বিশ্ব বাজারে আতঙ্ক তৈরি হয়ে তা আর্থিক কসাইখানায় পরিণত হতে চলেছে। চীন এবং ইউরোপের উচিত আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা পূরণ করা ও যৌথভাবে এই স্বেচ্ছাচারী অভ্যাসকে প্রতিহত করা।

চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমান শুল্কহারের প্রেক্ষাপটে মার্কিন পণ্যের জন্য চীনা বাজারে গ্রহণযোগ্যতার কোনো সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্র বারবার অস্বাভাবিকভাবে উচ্চহারে যে শুল্ক আরোপ করছে, তা এখন শুধুই একটি সংখ্যার খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটির কোনো অর্থনৈতিক বাস্তব ভিত্তি নেই।

বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি, বাজার ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাগুলো বড় ধাক্কা খেয়েছে। এই বৈশ্বিক অস্থিরতার সম্পূর্ণ দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে। জিনপিং প্রশাসন আরও দাবি করেছে, ট্রাম্প অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চীনের চাপের ফলেই।

এদিকে, ট্রাম্প বুধবার চীনের বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওপর ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিতের ঘোষণা দেন, তবে চীনের ক্ষেত্রে শুল্ক আরও বাড়ানোর কথা বলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে ‘সম্মানবোধের অভাব’ অনুভব করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা : চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক আরোপে পাল্টা-পাল্টি শুরু হওয়ার পরই বিশ্ব বাজারে একটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাণিজ্যযুদ্ধের এই পাল্টা-পাল্টি সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও তা বাজারে স্থিতি ফেরাতে পারেনি। গতকাল শুক্রবার বিশ্বের শেয়ারবাজারগুলো আবারও নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। ডলার দুর্বল হয় এবং মার্কিন সরকারি বন্ডের দাম আরও পড়ে যায়। বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় স্বর্ণের দাম পৌঁছে যায় রেকর্ড উচ্চতায়। কিন্তু ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একে ‘নাজুক বিরতি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই ৯০ দিনের বিরতি মানে ৯০ দিন অনিশ্চয়তা।

জেনাস হেন্ডারসনের গ্লোবাল মাল্টি অ্যাসেট প্রধান অ্যাডাম হেটস বলেন, দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় এখন মন্দার ঝুঁকি অনেক বেশি। শুক্রবার এশীয় শেয়ারবাজারগুলো ওয়াল স্ট্রিটের ধারাবাহিক পতন অনুসরণ করে। ইউরোপেও চীনের নতুন শুল্কবৃদ্ধির প্রভাবে এসটিওএক্সএক্স ৬০০ সূচক ১ শতাংশের বেশি পড়ে যায়, যা সপ্তাহজুড়ে আরও পতনের ইঙ্গিত দেয়। কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম দিকের পর এতটা অস্থিরতা আর দেখা যায়নি।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বৃহস্পতিবার বাজারের অস্থিরতাকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি মার্কিন অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাবে। হোয়াইট হাউস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।

ভিয়েতনাম জানিয়েছে, তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যেন চীনা পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ না করতে পারে, সে ব্যবস্থা তারা নেবে। হোয়াইট হাউসে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করেন চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্ভব এবং তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে সম্মান করেন। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত এমন একটি সমাধান আসবে যা উভয় দেশের জন্য ভালো হবে।

পক্ষান্তরে বর্তমান সময়ে বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থার সামনে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইউরোপ, এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চল এখন যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্বের আলোকে নিজেদের অবস্থান পর্যালোচনা করছে। শেয়ারবাজারে ধস, মুদ্রার অস্থিরতা ও বন্ডবাজারের পতনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির আড়ালে স্পষ্ট হচ্ছে অর্থনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের এক বিপজ্জনক প্রতিযোগিতা। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি দীর্ঘ হলে তা কেবলমাত্র ব্যবসা নয়, শ্রমবাজার, ভোক্তা মূল্য ও বিশ্ব রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলবে।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
 সাভারে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

সাভারে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

 চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ

 ১৫ শিক্ষার্থীর মাদ্রাসায় ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী! বছরে ব্যয় অর্ধকোটি টাকা

১৫ শিক্ষার্থীর মাদ্রাসায় ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী! বছরে ব্যয় অর্ধকোটি টাকা

 আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে দোয়া করলেন ইনকিলাবের হাদি

আ.লীগের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কেঁদে দোয়া করলেন ইনকিলাবের হাদি

 কন্যাশিশুদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

কন্যাশিশুদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

 গাজার পথে ফ্লোটিলার নতুন ত্রাণবাহী নৌবহর

গাজার পথে ফ্লোটিলার নতুন ত্রাণবাহী নৌবহর

 পবিত্র কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও অনন্য বৈশিষ্ট্য

পবিত্র কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও অনন্য বৈশিষ্ট্য

 ঢাকার দুই সিটি : মশায় নাগরিক দুর্দশা চরমে

ঢাকার দুই সিটি : মশায় নাগরিক দুর্দশা চরমে

 বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক, রংপুর-গাইবান্ধায় অনুসন্ধান দল

বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক, রংপুর-গাইবান্ধায় অনুসন্ধান দল

 টানা ১২ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

টানা ১২ দিনের ছুটি শেষে খুলেছে নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

 যাদের অর্থ-অস্ত্রে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল!

যাদের অর্থ-অস্ত্রে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল!

 ঢাকায় বাড়বে গরমের অনুভূতি, হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টিও

ঢাকায় বাড়বে গরমের অনুভূতি, হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টিও

 ভারতীয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তই কাল হলে বাংলাদেশের

ভারতীয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তই কাল হলে বাংলাদেশের

 শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাকে আজ ফের জেরা করবেন স্টেট ডিফেন্স

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাকে আজ ফের জেরা করবেন স্টেট ডিফেন্স

সংশ্লিষ্ট

যাদের অর্থ-অস্ত্রে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল!

যাদের অর্থ-অস্ত্রে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল!

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ মার্কিন বিজ্ঞানী

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ মার্কিন বিজ্ঞানী

পিটিআইয়ের সানাম জাভেদ গ্রেপ্তার

পিটিআইয়ের সানাম জাভেদ গ্রেপ্তার

গাজা নিয়ে পুতিন-নেতানিয়াহু ফোনালাপ

গাজা নিয়ে পুতিন-নেতানিয়াহু ফোনালাপ