টিকিট জটিলতায় ক্ষোভ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫ ০৮:৫৭ এএম
সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘সি’ এখন উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। চারটি দল বাংলাদেশ, ভারত, হংকং ও সিঙ্গাপুর নিজেদের প্রথম ম্যাচে ড্র করায় প্রত্যেকেরই পয়েন্ট সমান ১ করে। গোল পার্থক্যও শূন্য। ফলে পরের রাউন্ডে ওঠার লড়াইয়ে প্রতিটি ম্যাচ এখন হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই সমীকরণের মধ্যেই আগামী ১০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটিকে ঘিরে এখন থেকেই তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তাপ। কারণ, এই ম্যাচেই গ্রুপের পয়েন্ট টেবিল বদলে যেতে পারে। আর সে উত্তাপ আরও বেড়ে গেছে হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমের খেলার সম্ভাবনায়। ব্রিটেনে জন্ম নেওয়া এই দুই ফুটবলারের উপস্থিতি ঘিরে সমর্থকদের আগ্রহ তুঙ্গে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়ালও ম্যাচটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। তিনি বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করি বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে আমাদের গ্রুপটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, এখন পর্যন্ত সব দলেরই এক পয়েন্ট। তবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয় পেলে আমাদের অবস্থান বদলে যাবে। আমরা সে লক্ষ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তবে ম্যাচটিকে ঘিরে শুধু মাঠেই নয়, গ্যালারিতেও তৈরি হয়েছে জটিলতা। টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা টিকিফাই অনলাইন কার্যক্রম শুরু করলেও প্রথম দিনেই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার রাত ৮টার পর মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে টিকিফাই টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয়।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে, যার ফলে সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। রোববার রাতে আবার টিকিট বিক্রি শুরুর কথা জানালেও সোমবার দিনভর সেই কার্যক্রম চালু হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাধারণ সমর্থকরা। বাফুফের পক্ষ থেকে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও উঠেছে সমালোচনা।
এ বিষয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, বাফুফে সব সময় নতুন কিছু করতে চায়। তবে প্রথমবার ভুল হতে পারে। আমরা সেটা স্বীকার করছি। দুটি আইপি থেকে সাইবার হামলা হয়েছে, তাই সার্ভার ডাউন ছিল। কিন্তু আমরা নজরদারি বাড়াচ্ছি। টিকিট সংগ্রহ থেকে স্টেডিয়ামে প্রবেশ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে আমরা তদারকি করব। এখনো কিছুটা সময় হাতে আছে, সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে সাধারণ গ্যালারির আসন সংখ্যা ১৮ হাজার ৩০০, এর সঙ্গে ভিআইপি ও অন্যান্য মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। এত কম সংখ্যক টিকিটে সবাইকে প্রবেশ করানো সম্ভব নয় এটা স্পষ্ট। তাই বিকল্প ব্যবস্থাও রেখেছে বাফুফে। আটটি বিভাগীয় শহরে খোলা হবে ফ্যান জোন, যেখানে বড় পর্দায় খেলা উপভোগ করতে পারবেন সমর্থকেরা।
তাবিথ আউয়াল বলেন, সবাইকে তো স্টেডিয়ামে ঢোকানো সম্ভব না। তাই আটটি বিভাগীয় শহরে আমরা ফ্যান জোন করব। যাতে যারা ঢাকায় আসতে পারবেন না, তারাও একসঙ্গে বসে খেলাটি উপভোগ করতে পারেন। দর্শকদের এই আগ্রহ দেখে অনেকে বলছেন, দেশের ফুটবলে যেন নতুন সুবাতাস বইছে। এর পেছনে অনেকের মতে, মূল ভূমিকা রাখছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরী। যদিও বাফুফে সভাপতি এ উচ্ছ্বাসকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ফল বলেই মনে করেন।
তাবিথ বলেন, ফুটবলের উন্নয়নে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। শুধু জাতীয় পুরুষ দল নয় নারী দল, কোচিং, রেফারিং, টেকনিক্যাল বিভাগ সব জায়গাতেই আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি। এখন ফলাফল আসছে, এটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ১০ জুন বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয় পেলে এশিয়ান কাপে পরের রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে অনেকটাই। সেইসঙ্গে দেশের ফুটবলে ফের জেগে উঠবে হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন।
ভোরের আকাশ/জাআ