হবু স্বামীর সঙ্গে কথা বলা: শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ কি?
বিয়ে ইসলামে শুধু একটি সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি মানব জীবনের জন্য বরকতময় ও পবিত্র ইবাদতেরূপে বিবেচিত। প্রাপ্তবয়স্ক ও বিয়ের সামর্থ্য থাকা ব্যক্তি যেন দেরি না করে বিয়ে করে নেয়, তা নবী করিম (সা.) সুন্নতের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী দেখা
বর্তমান সময়ে ভালো পাত্র-পাত্রী নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই বিয়ের আগে পাত্রী বা পাত্রকে দেখা ও যাচাই করা নবীজির (সা.) সুন্নত। আবু দাউদ থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো নারীর মধ্যে এমন বৈশিষ্ট্য খুঁজে পায় যা তাকে বিয়েতে আগ্রহী করে, সেই ব্যক্তির জন্য তা বিবাহের সিদ্ধান্তে সহায়তা করে।
হবু স্বামীর সঙ্গে কথাবার্তা
মাদরাসাতুত তাকওয়া ঢাকা’র মুফতি শায়খ ইবনুল কালাম জানান, বিয়ের আগে হবু স্বামী গায়রে মাহরাম হিসেবে গণ্য হন। তাই সাধারণভাবে কোনো রোমান্টিক বা ব্যক্তিগত কথাবার্তা জায়েজ নয়। তবে জরুরি তথ্য জানার প্রয়োজন হলে কথাবার্তা সীমিতভাবে এবং ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে করা যেতে পারে।
বিয়ে দ্রুত সম্পন্ন করার গুরুত্ব
বিয়ের প্রক্রিয়া পাকাপোক্ত হয়ে গেলে দ্রুত বিবাহ সম্পন্ন করা উভয়পক্ষের কল্যাণে। এ ক্ষেত্রে ফাতওয়ায়ে শামী ও ফাতওয়ায়ে রহিমিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী দেরি করা উচিত নয়।
দোয়া ও কোরআনি আমল
বিবাহ সহজে সম্পন্ন করতে বিশেষ দোয়া এবং কোরআনের কিছু আয়াতের তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা যায়। বিশেষ দোয়া যেমন:
দোয়া:
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ: রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।
অর্থ: হে আমাদের রব, আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন, যারা আমাদের চোখ শীতলকারী হবে।
বিয়ের আগে হবু স্বামী বা স্ত্রীকে সীমিত ও প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য কথাবার্তা বলা যায়, কিন্তু ব্যক্তিগত ও রোমান্টিক আলাপ শারিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়। দেরি না করে বিয়ে সম্পন্ন করা এবং আল্লাহর সাহায্যের জন্য নিয়মিত দোয়া ও কোরআনের তেলাওয়াত করা উভয়পক্ষের কল্যাণে সহায়ক।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
পবিত্র কোরআন শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয়, এটি চিরন্তন সত্য ও সার্বজনীন এক জীবনবিধান। এতে আছে ঈমান, আমল, ন্যায়, নীতি, বিজ্ঞান ও ইতিহাস।শুধু অতীতের শিক্ষা নয়; বর্তমান ও ভবিষ্যতেরও পথনির্দেশ। তাই এই কোরআন শুধু পাঠের জন্য নয়; বরং চিন্তা, উপলব্ধি ও বাস্তব জীবনে প্রয়োগের জন্য নাজিল হয়েছে।পবিত্র কোরআনের অনন্য বৈশিষ্ট্য—১. আল্লাহর বাণী হিসেবে কোরআন: কোরআন মহান আল্লাহর বাণী, যা প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে মানবজাতির পথনির্দেশ হিসেবে। এটি সুরা আল-ফাতিহা দিয়ে শুরু হয়ে সুরা আন-নাস দিয়ে সমাপ্ত। এটি কোনো মানুষের রচনা নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ।২. কোরআন পাঠ এক ইবাদত: কোরআন পাঠ করা সতন্ত্র একটি ইবাদত।নামাজে এবং নামাজের বাইরে এর তেলাওয়াতের জন্য আল্লাহ তাআলা অসীম সওয়াব দান করেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর পাঠ করবে, তার জন্য একটি নেকি থাকবে, আর প্রতিটি নেকি ১০ গুণ বৃদ্ধি পাবে...। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)৩. নামাজে কোরআন তেলাওয়াত অপরিহার্য: কোরআন তেলাওয়াত ছাড়া নামাজ কখনোই সম্পূর্ণ হয় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের কোনো অংশ পাঠ করে না, তার নামাজ নেই। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭৫৬)৪. কোরআন বিকৃতি থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ: কোরআন আল্লাহর বিশেষ হেফাজতে রয়েছে। কেউ এর একটি অক্ষরও পরিবর্তন করতে পারে না। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং অবশ্যই আমিই এর সংরক্ষণকারী। ’ (সুরা: হিজর, আয়াত: ৯)পূর্ববর্তী ঐশী কিতাবসমূহ তাওরাত, ইঞ্জিল প্রভৃতি মানবহস্তে বিকৃত হয়েছে, কিন্তু কোরআন কিয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত ও অক্ষুণ্ন থাকবে।৫. কোরআন বিরোধ ও অসংগতি থেকে মুক্ত: কোরআনের প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি বার্তা পরিপূর্ণ সংগতিপূর্ণ ও যুক্তিসম্মত।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি কোরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে না? যদি এটি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে তা আসত, তবে তারা এতে অনেক বিরোধ দেখতে পেত। ’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৮২)৬. কোরআন মুখস্থ করা সহজ: আল্লাহ তাআলা কোরআনকে এমনভাবে অবতীর্ণ করেছেন, যা মানুষের জন্য সহজে মুখস্থ ও স্মরণযোগ্য। ইতিহাসে কোটি কোটি মুসলমানের মুখে মুখে এই কিতাব সংরক্ষিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি অবশ্যই কোরআনকে স্মরণের জন্য সহজ করে দিয়েছি; অতএব আছে কি কেউ শিক্ষা গ্রহণকারী?’ (সুরা: কামার, আয়াত: ৪০)৭. কোরআন এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ: কোরআন এমন এক মহা অলৌকিক কিতাব, যার তুলনা পৃথিবীতে আর কিছুই নেই। কেউই এর মতো একটি সুরা রচনা করতে সক্ষম নয়। আল্লাহ তাআলা সেই সময়ের আরবদের—যারা ভাষা ও সাহিত্যগুণে ছিল অগ্রগণ্য—চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছিল। আল্লাহ বলেন, ‘অথবা তারা কি বলে, ‘তিনি এটি নিজে বানিয়েছেন?’ বলুন, ‘তাহলে তোমরা এর মতো একটি সুরা তৈরি করে দেখাও। ’ (সুরা: ইউনুস, আয়াত: ৩৮)এই চ্যালেঞ্জ আজও অটুট রয়েছে। যুগে যুগে কেউ এর সমতুল্য কিছু আনতে পারেনি, পারবেও না।৮. কোরআন পাঠকারীর ওপর রহমত বর্ষিত হয়: যে স্থানে মানুষ একত্র হয়ে কোরআন পাঠ করে এবং তা নিয়ে পর্যালোচনা করে, সেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশান্তি, রহমত ও বরকত নেমে আসে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যেকোনো দল আল্লাহর ঘরে একত্র হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং পরস্পরের মাঝে তা অধ্যয়ন করে, তাদের ওপর প্রশান্তি নেমে আসে, রহমত তাদের আচ্ছাদিত করে, ফেরেশতারা তাদের ঘিরে রাখে এবং আল্লাহ তাদের কথা উল্লেখ করেন তাঁর নিকটবর্তীদের মধ্যে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৯৯)৯. কোরআন সব মানুষের জন্য পথপদর্শক ও সতর্কবার্তা: কোরআন জীবিত মানুষের জন্য হিদায়াত ও সতর্কবার্তা হিসেবে নাজিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাতে তিনি মানুষকে সতর্ক করতে পারেন। ’ (সুরা: ইউনুস, আয়াত: ৭০)১০. কোরআন দেহ-মনের রোগের প্রতিকার: কোরআন শিরক, কপটতা, সন্দেহ ও অন্যান্য আত্মিক রোগের নিরাময়। এটি শুধু আত্মার নয়, শরীরেরও চিকিৎসা। সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাসসহ অনেক আয়াত দ্বারা রোগ নিরাময়ের হাদিস প্রমাণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন—’হে মানবজাতি, তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে উপদেশ, অন্তরের রোগসমূহের নিরাময় এবং এটি মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও রহমত। ’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ৫৭)১১. কোরআন কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী হবে: কোরআন পাঠকারীর জন্য কিয়ামতের দিন এই মহান কিতাব নিজেই সুপারিশ করবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো। কারণ কিয়ামতের দিন এটি তার পাঠকারীদের জন্য সুপারিশকারী হয়ে আসবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮০৪)১২. পূর্ববর্তী সব কিতাবের ওপর কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব : কোরআন পূর্ববর্তী সব ঐশী কিতাবের সত্যতা নিশ্চিত করে এবং তাদের ওপর বিচারক ও মানদণ্ড হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যতা নিশ্চিত করে এবং তাদের ওপর মানদণ্ড হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে। ’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৪৮)১৩. কোরআনের বার্তা সত্য ও তার বিধান ন্যায়নিষ্ঠ: ইমাম কাতাদা (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাঁর বাণীতে সত্যবাদী এবং তাঁর রায়ে ন্যায়পরায়ণ। তিনি যা বলেন তা চির সত্য, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি যা আদেশ করেন তা ন্যায়বিচার, আর যা নিষেধ করেন তা মিথ্যা ও অন্যায়। যেমন আল্লাহ বলেন—‘তিনি তাদের সৎকাজের আদেশ দেন এবং অন্যায় থেকে নিষেধ করেন; তাদের জন্য পবিত্র বিষয়সমূহ হালাল করেন এবং অপবিত্র বিষয়সমূহ হারাম করেন। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭, তাফসির ইবনে কাসির ২/১৬৭)১৪. কোরআনের শিক্ষণীয় ঘটনা বাস্তবিক, কাল্পনিক নয়: কোরআনের প্রতিটি ঘটনা সত্য ও বাস্তব। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমার কাছে মুসা ও ফেরাউনের কাহিনি সত্যভাবে বর্ণনা করছি। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৩)একইভাবে, গুহাবাসীদের কাহিনিতেও আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাদের কাহিনি তোমার কাছে সত্যভাবে বর্ণনা করছি। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ১৩)১৫. কোরআন মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা: মানবজাতির জীবনের প্রতিটি প্রয়োজনীয় বিষয়ে—ইমান, আকিদা, ইবাদত, আহকাম, লেনদেনসহ সামাজিক জীবনের অন্যান্য দিক—সবকিছুর পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা আছে পবিত্র কোরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি কিতাবে কোন কিছুই বাদ দিইনি। ’ (সুরা: আনআম, আয়াত: ৩৮)পবিত্র কোরআন যুগে যুগে মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে এসেছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত দেখিয়ে যাবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের মধ্যে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি; যত দিন তোমরা এগুলোর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকবে, কখনো পথভ্রষ্ট হবে না—(১) আল্লাহর কিতাব (২) আমার সুন্নাহ...। ’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস: ৮৯৯)কোরআন শুধু একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়; কোরআন বিশ্ব জাহানের রব আল্লাহর কালাম। কোরআন মুসলিম জাতির শক্তি, চেতনা ও আত্মমর্যাদার উৎস।ভোরের আকাশ/মো.আ.
গাজায় ইসরায়েলের টানা দুই বছরের আগ্রাসনে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, নিশানা হয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরাও। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ সময় ২৫০ জন ইমাম, খতিব ও ধর্মীয় নেতা নিহত হয়েছেন। ধ্বংস করা হয়েছে ৮৩৫টি মসজিদ, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৮০টি মসজিদ। হামলার বাইরে থাকেনি খ্রিস্টান উপাসনালয়ও।গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা জানান, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনি সমাজের আত্মিক ও নৈতিক কাঠামো ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য তারা ধর্মীয় নেতাদের টার্গেট করছে, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস করছে এবং সাধারণ নাগরিক স্থাপনাগুলোতে নির্বিচারে বোমা ফেলছে।তিনি বলেন, “ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জাতির নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক। ইসরায়েল তাদের হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করতে চাইছে।”তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিস্তিনের সাবেক ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও আল-আকসা মসজিদের খতিব ইউসুফ সালামা। এছাড়া গাজার বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা ওয়ায়েল আজ-জারদ এবং কোরআন শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ওয়ালিদ আওয়াইদাও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।গাজার বিভিন্ন গির্জাতেও একাধিকবার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত এসব গির্জায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন খ্রিস্টান নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গির্জাগুলোর মধ্যে রয়েছে—ঐতিহাসিক সেন্ট পারফিরিয়াস (রোমান অর্থডক্স), হোলি ফ্যামিলি চার্চ (ক্যাথলিক) ও ব্যাপটিস্ট ইভানজেলিকাল চার্চ।ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও নেতাদের ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন। এটি স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের শামিল।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ এখন এক নির্মম গণহত্যায় পরিণত হয়েছে। গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ১৩৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্য ও ওষুধ সংকটে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪৬০ জন, এদের মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।ধ্বংসস্তূপের মাঝেও গাজার মানুষ থেমে নেই। বেঁচে থাকা ইমামরা এখনো ভাঙা মিনারে দাঁড়িয়ে আজান দিচ্ছেন, উচ্চারণ করছেন—“আল্লাহু আকবার”।সূত্র : আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সিভোরের আকাশ//হর
মানুষের জীবনে আল্লাহর রহমত লাভ করা এক মহাসৌভাগ্যের বিষয়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে—যারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করে, তাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, “আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমাদের ওপর রহমত করা হয়।”(সুরা নূর, আয়াত: ৫৬)নামাজ কায়েমের গুরুত্ব:নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর একটি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কেয়ামতের দিনে বান্দার যে আমলের হিসাব সবার আগে নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। যদি নামাজ সঠিক হয়, তাহলে সে সফল হবে; আর যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ হবে।”(আবু দাউদ, হাদিস: ৮৬৪)অন্য এক হাদিসে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ আদায় করবে এবং প্রথম তাকবির পাবে, তার জন্য দুইটি মুক্তিপত্র লেখা হবে—একটি জাহান্নাম থেকে মুক্তির, অন্যটি নেফাক (কপটতা) থেকে মুক্তির।”(তিরমিজি, হাদিস: ২৪১)যাকাত প্রদানের ফজিলত:যাকাত শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, বরং এটি সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির প্রতীক। যাকাত আদায় না করলে এর কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.), “যে ব্যক্তি সোনা-রুপার জাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তার সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত হয়ে তাকে দগ্ধ করবে। যতক্ষণ না জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হয়, ততক্ষণ এই শাস্তি চলতে থাকবে।(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৮৭)রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য:আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, “তোমরা আল্লাহ ও তাঁর উম্মী নবী রাসুলের প্রতি ঈমান আনো, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীতে বিশ্বাস রাখেন। আর তোমরা তাঁর অনুসরণ কর, যাতে তোমরা সঠিক পথপ্রাপ্ত হও।”(সুরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৫৮)এই তিনটি আমল পালন করলে আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব—এ কথা কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত।ভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চরের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২৬ সালে রমজান মাস শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অথবা ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে শুরু হতে পারে রোজা।আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেত অ্যাস্ট্রেনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০২৬ সালের রমজান মাসের চাঁদের জন্ম হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১ মিনিটে এবং সেটি আকাশে চোখে পড়বে ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়। তবে সূর্যাস্তের পর মাত্র এক মিনিট আকাশে দেখা যাবে সেই চাঁদ।আল জারওয়ান আরও বলেছেন, এবারের রমজানের প্রথম দিকে আমিরাতের বাসিন্দাদের জন্য সেহেরি থেকে ইফতার শুরু পর্যন্ত সময়ের ব্যপ্তি হবে ১২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট এবং মাসের শেষের দিকে এই সময়সীমা পৌঁছাবে ১৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। তিনি আরও বলেছেন, রমজানের শুরুর দিকে আমিরাতের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করবে, আর শেষের দিকে তাপমাত্রা থাকবে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।প্রসঙ্গত, রোজা বা সিয়াম ইসলাম ধর্মের তৃতীয় স্থম্ভ। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রমজান মাসে প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানি ও খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা; রাতে এশার নামাজের পড়ে পড়েন তারাবিহ নামাজ।এক মাস পর শাওয়াল মাসের এক তারিখ ঈদুল ফিতর উদযাপনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা।ভোরের আকাশ/তা.কা