ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫ ০১:৪৪ এএম
দুশ্চিন্তা দূর করার আমল ও দোয়া
মানুষের জীবনে দুশ্চিন্তা, হতাশা ও অশান্তি আসা স্বাভাবিক। ইসলামের দৃষ্টিতে এগুলো শয়তানের কুমন্ত্রণা, যা মানুষকে দারিদ্র্যের ভয় দেখায় ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠিত করে তোলে। এর বিপরীতে তকদিরে বিশ্বাস, আল্লাহর ওপর নির্ভরতা, রহমতের আশা এবং দোয়ার মাধ্যমে একজন মুসলিম অন্তরে প্রশান্তি খুঁজে পান।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন: “শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়। আর আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।” (সূরা বাকারা: ২৬৮)
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য কোরআন-সুন্নাহর আলোকে করণীয়
১. তাকদিরে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা
অতীত নিয়ে হতাশ না হয়ে বর্তমানের প্রাপ্তিতে কৃতজ্ঞ থাকা এবং ভবিষ্যৎ আল্লাহর হাতে সোপর্দ করা—এমন মানসিকতা দুশ্চিন্তা দূর করে। আল্লাহ বলেন:
“তোমাদের যে বিপদ আসে, তা আমি ঘটার আগেই লিখে রাখি... যাতে ক্ষতির জন্য তোমরা অতিমাত্রায় হতাশ না হও এবং প্রাপ্তির জন্য অহংকার না করো।” (সূরা হাদীদ: ২২-২৩)
২. কষ্টকে নেয়ামত ভাবা
মুসলমানের জীবনে বিপদ-আপদ গুনাহ মোচনের মাধ্যম। নবিজি (সা.) বলেছেন:
“কোনো রোগ, দুঃখ, কষ্ট কিংবা দুশ্চিন্তা একজন মুসলমানের ওপর এলে—এমনকি শরীরে কাঁটা বিঁধলেও—আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন।” (সহিহ বুখারি: ৫৬৪১)
৩. ভবিষ্যতের ব্যাপারে আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা করা
আল্লাহ বলেন:
“যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” (সূরা তালাক: ৩)
৪. বিশেষ দোয়া পাঠ করা
রাসুলুল্লাহ (সা.) দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ দূর করার জন্য এ দোয়া পড়তেন:
اللهمَّ إنِّي أعوذُ بك من الهمِّ والحزنِ، والعجزِ والكسلِ، والبُخلِ والجُبنِ، وضَلَعِ الدَّينِ وغَلَبَةِ الرجالِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুব্ন, ওয়া যালাইদ-দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা, শোক, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋণভার এবং মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে। (সহিহ বুখারি: ৬৩৬৯)
৫. দরুদ শরিফ বেশি পড়া
উবাই ইবনে কাব (রা.) বর্ণনা করেন, নবিজি (সা.) বলেছেন:
“তুমি যদি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, তবে আল্লাহ তোমার চিন্তা দূর করে দেবেন এবং গুনাহ ক্ষমা করবেন।” (সুনানে তিরমিজি: ২৪৫৭)
দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন পেতে একজন মুসলিমকে আল্লাহর তাকদিরে বিশ্বাস রাখতে হবে, কষ্টকে ধৈর্যের মাধ্যমে নেয়ামত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে, আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা রাখতে হবে, দোয়া ও দরুদে মনোযোগী হতে হবে। এতে অন্তর শান্ত হবে এবং আল্লাহর কাছে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়া সম্ভব হবে।
ভোরের আকাশ/হ.র