বিএনপির ৮ দিনের কর্মসূচি
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আট দিনের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
যৌথ সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এসময় রিজভী বলেন, যেহেতু ৭ জুন কোরবানি ঈদ সে জন্য আমাদের কর্মসূচি কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
কর্মসূচি হবে ৮ দিনব্যাপী। অর্থাৎ ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আলোচনা সভা, দুস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দুইদিন নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনমিত রেখে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ করবে এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা নেবে দলটি।
কর্মসূচির মধ্যে আছে ২৯ মে বিকেল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ এবং মসজিদে মসজিদে গণ দোয়া প্রভৃতি।
ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে দুস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও সারাদেশে জেলা ও উপজেলা-থানা-পৌর ইউনিটগুলোও জিয়াউর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা, দুস্থদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করবে।
যৌথ সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। তার আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জুলাই-আগস্টে সারাদেশে গণহত্যা চালায়। সেই গণহত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিচার দাবি করেছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ দাবি তোলেন।তাজউদ্দীনপুত্র শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যা নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘দ্য ব্যাটল ফর বাংলাদেশ: ফল অব শেখ হাসিনা’ শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সাহসী যোদ্ধাদের, যারা তাদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বৈরশাসনের হাত থেকে মুক্ত করেছে- এই গণহত্যার জন্য দায়ী সকলের বিচার করতেই হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গণহত্যার দায়ে শুধু শেখ হাসিনা নয়, দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগেরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুসকে দেখতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি রোষানলের শিকার বিএনপি। আর সর্বশেষ গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন শেখ হাসিনা। গণহত্যার জন্য শুধু শেখ হাসিনা নয়, দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগেরও বিচার হওয়া উচিত।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নিপীড়ন-নির্যাতন, হত্যা, গুম-খুনের সবচেয়ে বড় ভিকটিম আমাদের দল বিএনপি।তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আর সংস্কার কখনও সাংঘর্ষিক নয়। দেশের জনগণ নির্বাচন চায়। যারা নির্বাচন পেছানোর কথা বলছেন, তারা বিষয়টি আরও ভেবে দেখবেন। দেশ বাঁচাতে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারকে সঠিক সময়ে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।গণহত্যার বিচারে উদাসীনতা রয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে হাজার মানুষ হত্যার দায় নিয়ে ১১ মাস আগে ভারতে পালিয়ে যান জনরোষে পদচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এত দীর্ঘ সময় পরও শেখ হাসিনা ও তার দলের বিচার না হওয়া দুঃখজনক।এ সময় সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।ভোরের আকাশ/এসএইচ
তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে একটি আধুনিক ও পরিবর্তিত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষায়, বর্তমান প্রজন্ম আগের তুলনায় অনেক বেশি অগ্রসর এবং তারা একদিন দেশের ভবিষ্যৎ রূপদান করবে।৮ জুলাই (মঙ্গলবার) বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস–২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ আয়োজনটি যৌথভাবে পরিচালনা করে ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি ও দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ।গণতন্ত্রের ঘাটতির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে গণতন্ত্র চর্চা অব্যবহৃত থেকেছে। পাকিস্তান আমল থেকেই আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছি। কিছু সময়ের জন্য সুযোগ মিললেও তা স্থায়ী হয়নি।রাজনীতিতে তরুণদের আগ্রহ কমে যাওয়ার একটি জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, মাত্র ১.৮৭ শতাংশ তরুণ রাজনীতিতে আগ্রহী—এই তথ্য তাকে হতাশ করেছিল। তবে অনুষ্ঠানে তরুণদের মধ্যে যে উদ্দীপনা দেখেছেন, তাতে আশাবাদ ফিরে পেয়েছেন বলে জানান।বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মতভেদ থাকবেই, সেটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। একজন বলবে, অন্যজন পাল্টা বলবে—এই ভাবনাই একটি উদার গণতন্ত্রের ভিত্তি।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের এক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সেই নেতা একজন দেহরক্ষী নিয়েই সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। অথচ আমাদের দেশে কেউ একবার মন্ত্রী হলেই গাড়ির বহর, প্রটোকল—সব মিলিয়ে একেবারে আলাদা এক জগতে প্রবেশ করেন। এই মানসিকতা বদলাতে হবে।তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই, যারা নেতৃত্ব দেবে, ভাববে, কাজ করবে—এবং বাংলাদেশকে বদলে দেবে। এই তরুণরাই হবে ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক হেলথ স্পেশালিস্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইলিয়াস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু এবং আইনজীবী রাশনা ইমাম। ভোরের আকাশ/হ.র
জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, ‘আমরা চেয়ারম্যানের চিঠি পেয়েছি। আপনার লাভ লেটার পেয়েছি। আমরা আপনাকে বহিষ্কার করিনি। আমরা আপনাকে ফেলে যেতে চাই না। আমরা দলকে শক্তিশালী করবো। আবার বৃহৎ ঐক্য করবো। আপনাকে আবারও বলবো, আসেন। আপনাকে আমরা সম্মান দেবো। কিন্তু দল ভাঙবে, দল ছোট হবে, এই রাজনীতি আমরা করবো না।’মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।এর আগে গতকাল জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর আজ সংবাদ সম্মেলনে আসেন অব্যাহতি পাওয়া নেতারা। গুলশানে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিন হাওলাদার দলের চেয়ারম্যানের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, ‘কাদের সাহেব কেন এই কাজটি করলেন? তার কী হয়েছিল? তার অসুস্থতা আছে না কি, এটা পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে। কারণ, মানুষকে ভালোবেসে আপন করা, সহযোগিতা নেওয়া, সহযোগিতা করা, এটা কঠিন কাজ। আর এখানে ইজি গো-ইন, আপনি আমাদের চিঠি দিলেন। আমরা চিঠি পেয়েছি। ’এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার আরও বলেন, ‘আমাদের ঘামে, আমাদের পরিশ্রমে, আমাদের টাকায়, আমাদের সারা দেশের মানুষের কাছে যাওয়া, আমাদের আবেদনে মানুষ সাড়া দিয়েছে। আর আজকে আমাদের দল থেকে অব্যাহতি দিলেন। সারা দেশের মানুষ আজ অবাক। প্রাথমিক সদস্য পর্যন্ত আপনি রাখেননি। আপনি কোন সাল থেকে রাজনীতি করছেন আমার জিজ্ঞাসা। এটা কী রাজনৈতিক আচরণ?’এ সময় কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ছোট হতে হতে আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একদম ধ্বংসের কিনারায়। সেখান থেকে জাতীয় পার্টিকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়, কী ভাবে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, রাজনীতিতে আবার আমাদের অবস্থান ফিরে পেতে পারি, সেই জন্য আজ এই সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘আনিস ভাই দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান, কী দেখছি, চট চট করে সবাইকে বাহির করে উনি (জিএম কাদের) একা থাকবেন। একা একটা কোম্পানি করা যায়, বউয়ের সাথে সংসার করা যায়, রাজনীতি করা যায় না। সব চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক উনি (জিএম কাদের) আমাদের দলের চেয়ারম্যান। একটা মাথা খারাপ লোক, অসুস্থ লোক, মেন্টালি সিক। তার সাথে রাজনীতি করা যায় না।’সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘উনি (জিএম কাদের) যে কী করেন নিজেই বুঝতে পারছেন না। তিনি কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন নিজেই জানেন না। উনার মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কি না ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করা দরকার। জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমরা পার্টি করি। জনাব, কাদের সাহেব আপনি আমাদের দল ও পদ থেকে অব্যাহতি দিলেন, ওকে। কিন্তু প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দিলেন, যাতে আগামী কাউন্সিলে কোনো চ্যালেঞ্জ না হয়। আপনি যাতে এক দফা ভাবে নেতা নির্বাচন হন।’ভোরের আকাশ/জাআ