ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫ ১১:১২ এএম
ফাইল ছবি
বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান কথা-সাহিত্যিক প্রফুল্ল রায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টিভি নাইনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্যাঙ্গনে।
বাংলাদেশের বিক্রমপুরে ১৯৩৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জন্ম নেন প্রফুল্ল রায়। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে তিনি চলে যান ভারতে। কলকাতাই হয়ে ওঠে তার নতুন ঠিকানা। ভারতে চলে গেলেও দেশভাগের যন্ত্রণা তাকে ছাড়েনি। তারই লেখা কালজয়ী উপন্যাস ‘কেয়া পাতার নৌকো’ আজও প্রাসঙ্গিক।
বিক্রমপুর অঞ্চলের রাজদিয়া গ্রামের পটভূমিতে লেখা এই উপন্যাস। আর ওই রাজদিয়াতেই জন্ম নেন প্রফুল্ল রায়। তার লেখায় শহর ও গ্রামীণ উভয় অবস্থারই শক্তিশালী বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। তিনি উপন্যাস এবং ছোটগল্পসহ ১৫০টিরও বেশি বই লিখেছেন। তার প্রথম উপন্যাস ছিল পূর্ব পার্বতী, যা নাগাল্যান্ডে লেখা এবং ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
তিনি শরণার্থী জীবনের ওপর উপন্যাস লিখেছেন- কেয়া পাতার নৌকো (২০০৩), শতধারায় বয়ে যায় (২০০৬), উৎতল সময়ের ইতিকথা (২০১৪), নোনা জল মিঠে মাটি (বঙ্গ ১৩৬)। যদিও এটি কেয়া পাতার নৌকা, শতধারায় বয়ে যায়, উৎতল সময় ইতিকথা থেকে রূপ এবং নামে ভিন্নÑ এটি আসলে একটি ত্রয়ী।
প্রফুল্ল রায়ের গল্প ও উপন্যাস অবলম্বনে ৪৫টির মতো টেলিফিল্ম, টেলি-ধারাবাহিক, ফিচার-ফিল্ম নির্মিত হয়েছে। তার মধ্যে এখানে পিঞ্জর (১৯৭১), বাঘবন্দী খেলা (১৯৭৫), ‘মোহনার দিকে’ (১৯৮৪), ‘আদমি অউর অউরত’ (১৯৮৪), ‘একান্ত আপন’ (১৯৮৭), ‘চরাচর’(১৯৯৪), ‘টার্গেট’ (১৯৯৭), ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ (২০০৩), ‘ক্রান্তিকাল’ (২০০৫), কেয়া পাতার নৌকো... তালিকাটা লম্বা। জীবনে বহু পুরস্কার পেয়েছেন এই সাহিত্যিক।
‘ক্রান্তিকাল’-এর জন্য ২০০৩ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ‘শরৎস্মৃতি’ তালিকাটা লম্বা। তার বিখ্যাত কাজের মধ্যে রয়েছে, ‘প্রতিধ্বনি’, ‘আগুনের কাছাকাছি’, ‘ভাতের গন্ধ’, ‘উত্তাল সময়ের ইতিকথা’, ‘রথযাত্রা’, ‘পিতৃভূমি’সহ অগুন্তি। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সাহিত্য জগৎ। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একজন তারকার পতন হলো বলা যায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ