শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫ ০৩:৩৫ পিএম
টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত রাস্তাঘাট
টানা এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টিতে মাদারীপুরের শিবচরের বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাতায়াত ব্যবস্থায় চরম ভোগান্তির কারণে ঘরে বসে দিন পার করছে নানা পেশার শ্রমজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, ডোবা, নালা, পুকুরসহ অধিকাংশ নিচু এলাকা। বিশেষ করে পাঁচ্চর,মাদবরের চর, কাঁঠাল বাড়ী, চরজানাজাত, বন্দরখোলা, সন্যাসিরচর সহ বেশ কটি ইউনিয়ন ভোগান্তি বেশি দেখো গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকায় ড্রেনের সুব্যবস্তা তেমন না থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে নামছে না বৃষ্টির পানি। আবার কিছু জায়গায় ড্রেনেজের ব্যবস্থা থাকলেও উঁচু অংশে রয়েছে পানি নামার ফোকা ,তাই দ্রুত গতিতে পানি না নেমে বরং টানা বৃষ্টির কারণে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা দেখা যায়।এতে করে একদিকে যেমন রাস্তায় যানবাহন চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। অপর দিকে নোংরা স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে রোগবালাই ছড়ানোর আশংকা করছে স্থানীয়রা।
টানা বর্ষণের ফলে বিভিন্ন হাট বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রসহ হয়ে পড়েছে জনশূন্য। চরম বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন যানবাহনের শ্রমিক, অটো চালক, ভ্যান চালকরা। উপজেলার রাস্তাঘাটে চলাচল কম,বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ দেখা যাচ্ছে।
উপজেলার পাঁচ্চর গার্লস স্কুলের সাথে রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যায়।
উপজেলার পদ্মাপাড়ের কাওড়া কান্দি পুরাতন ফেরিঘাটের চান মিয়া নামে এক জেলে বলেন, প্রতিদিন নদীতে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাই।কিন্তু কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারিনি।সারাদিন ঘরে বসেই দিন পার করতে হচ্ছে। এভাবে টানা বৃষ্টি আর দু-এক দিন হলে সংসার চালাতে কষ্ট হবে।
বোরহামগঞ্জ কলেজ মোড়ে অটো চালক গোলাম ফারুক বলেন, বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ থাকেনা। গাড়ীতে চার্জ দিতে পারি না।কোনো রকম চার্জ দিয়েই পেটের দায়ে বৃষ্টির বাধা না মেনেই রোড়ে আইছি।কিন্তু রোড়ে তেমন যাত্রী নাই,তাই বৃষ্টিতে বসে আছি।
আজাদ নামে একজন বলেন, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বোনের বিয়েতে ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসি। টানা বৃষ্টি থাকায় বিয়ের আয়োজন উৎস মন্দা যায়।তেমন আনন্দ করতে পারিনি।বৃষ্টি থাকার কারনে ঢাকাও যেতে পারছি না।
এছাড়াও টানা বৃষ্টি থাকায় সবচেয়ে কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। বৃষ্টি হওয়ার কারণে সময় মত পাট, ধান কাটতে পারছে না কৃষক। আবার অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পাট বাজ দিচ্ছে।
খোকন নামে এক কৃষক বলেন, ‘এমন বৃষ্টি যদি দু-এক দিনের মধ্যে না থামে, তাহলে মাটি নরম হওয়ার কারণে আমার পাট সব পড়ে যাবে। এতে অনেকটা ক্ষতিতে পরমু। বৃষ্টিতে আমরা কৃষকরাই বেশি ক্ষতি হব।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় , মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে আশা করছি আজ-কালের মধ্যে বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোরের আকাশ/আজাসা