পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪৮ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত হলো ‘জুলাই স্মরণ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী’—যেখানে জীবন্ত হয়ে উঠলো ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভয়াবহ স্মৃতি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, আহত আন্দোলনকারীরা ও জুলাই যোদ্ধারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠের মাধ্যমে আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
পিবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “জুলাইয়ের এই গণঅভ্যুত্থান ছিল শিক্ষার্থীদের ৩৬ দিনের ত্যাগ ও সাহসের গল্প। আমরা সেই গল্পগুলো শুনবো তাদের মুখ থেকেই যারা সরাসরি এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।”
উপাচার্য আরও বলেন, “রংপুরে আবু সাঈদের মৃত্যুর মাধ্যমে যে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়, তাতে জীবন হারান প্রায় ১৪০০ মানুষ। এমনকি বাসার জানালায় দাঁড়িয়ে থাকা নারী ও শিশু হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে প্রাণ হারান—স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এমন ঘটনা অকল্পনীয়।”
আলোচনায় অংশ নেন জুলাই আন্দোলনে আহত এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। পদ্মা সরকারি কলেজের ছাত্র মো. ছাকিন আহমেদ যিনি আন্দোলনে গুলিতে চোখ হারান, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র ফাহাদ সিকাদার এবং পিবিপ্রবি শিক্ষার্থী নাফিস আহনাফ, রিয়াজুস শামস ও মো. রিফাত হোসেন আন্দোলনের স্মৃতি তুলে ধরেন। তারা জানান, কীভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছিল এবং সেসময় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস কীভাবে ভয়াবহ রূপ নেয়।
তারা সকলেই আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করে বিচার দাবি করেন এবং দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত জাহান, পিবিপ্রবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ পান্না লাল রায়, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম এবং জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ-আল-মাসুদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে জুলাই আন্দোলন ও কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা উপস্থিত সবাইকে গভীরভাবে আলোড়িত করে।
ভোরের আকাশ/জাআ