মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫ ০২:০২ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
ফরিদপুরের মধুখালীতে অপরিকল্পিত খাল খনন করায় ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট ধসে পড়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন পাড়ের মানুষ। খালের অতিরিক্ত মাটি কেটে নেওয়ায় ২৫টি ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ৩২ পরিবার। এছাড়া ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে পাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। যা এরই মধ্যে ফাটল ধরে দেবে গেছে।
এতে আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলা আড়পারা গ্রামের খালের দুই পাড়ের বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননের মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়েছে ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মধুখালী উপজেলার গড়িয়াদহ খালের প্রায় সোয়া ৩ কিলোমিটার (৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার) অংশ পুনঃখননের কাজ করা হয়। ১২ মার্চ উত্তোলন করা মাটি নিলামে দরপত্র দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মধুখালী উপজেলার আড়পাড়ার ইউনিয়নের গড়িয়াদহ খালের প্রায় সোয়া ৩ কিলোমিটার (৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার) অংশ পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে। সীমানা জটিলতায় গড়াই নদীর সংযোগস্থলে প্রায় ১শ মিটার খনন করা সম্ভব হয়নি। পাড়ে উত্তোলন করা মাটি নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ,পানি উন্নয়ন বিভাগের খাল পুনঃখননের মাটি অপসারণের জন্য উন্মুক্ত ক্রয় করেন এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক। সেই অতিরিক্ত মাটি কেটে বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করছেন তারা। এতে করে রাস্তাসহ বাড়িঘর ধসে পড়েছে।
খাল খননের মাটি ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ করে সুরুজ মোল্যা বলেন, এলাকার প্রভাবশালী লোকজন অতিরিক্ত মাটি কেটে আমাদের ক্ষতি করেছেন। আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি মাটি যাতে না কাটা হয়। কিন্তু তারা আমাদের বলেছেন আমরা উপজেলা থেকে মাটির টেন্ডার এনেছি।
এ বিষয়ে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবু রাসেল বলেন, রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী খালের অতিরিক্ত মাটি সাইড থেকে অপসারণের জন্য আমাকে চিঠির মাধ্যমে জানান। আমি উন্মুক্ত নিলাম দরপত্র করে অতিরিক্ত মাটি অপসারণের দরপত্র দেই। এরপর রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননের যে ডিজাইন সেভাবে কাটা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়িঘর ও রাস্তা ক্ষতির বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের আপদকালীন সহায়তার জন্য ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। খালপাড়ের মানুষের বাড়িঘর রক্ষার্থে উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তিনি সহযোগিতার আশ^স্ত করেছেন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজবাড়ি উপবিভাগীয় প্রকৌশলী উত্তম কুমার পোদ্দারের মোবাইলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান নিয়ম মেনেই খাল খনন করা হয়েছে। কোন অনিয়ম করা হয় নাই । খননে খালে স্লোপ থাকার কথা কিন্তু স্লোপ না থাকায় খাড়া হয়ে যায়, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পাড় ভেঙে ধসে যায়। সে কারণে কিছু বাড়ি ধসে পড়েছে।
রাস্তা ধ্বসের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোহেল রানা জানান, ১২ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ২০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। খাল খনন ও অতিবৃষ্টির কারণে খাল এলাকায় বিভিন্ন স্থানে সড়ক ধসে খালের পড়ে যায়। বর্তমানে ভাঙ্গা সড়ক এলাকা মেরামতের কাজ চলছে। এলজিডিই এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দল খাল এলাকায় সড়ক ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেছেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.