পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫ ০১:১১ এএম
পাথরঘাটায় বহিষ্কৃত ওলামাদল নেতা শামীমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ভার্চুয়াল জনসভায় বিএনপি নেতাদের বাধা
বরগুনার পাথরঘাটায় কেন্দ্রীয় ওলামাদলের বহিষ্কৃত সাবেক সদস্য ও লন্ডন প্রবাসী মাওলানা মো. শামীম আহমেদকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে বিএনপির একাংশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাড়িটানা (কোড়ালিয়া) চৌমুহনী বাজারের একটি মাদ্রাসা মাঠে তার ভার্চুয়াল জনসভায় বাধা দেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী। পরে পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপির স্থানীয় নেতা দুলাল জোমাদ্দারের অভিযোগ, মাওলানা শামীমের বক্তব্য শোনার জন্য এলাকাবাসী সমবেত হলে নুরুল ইসলাম মনি সমর্থিত কয়েকজন সভা বন্ধের নির্দেশ দেয় এবং হুমকি-ধমকি দেয়। তারা চেয়ার ছুড়ে মারাসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। দুলালের দাবি, শামীম বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হওয়ায় কিছু উশৃঙ্খল চক্র তাকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অপরদিকে, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সজিব অভিযোগ করেন, মাওলানা শামীম লন্ডনে বসে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন এবং জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, শামীমের পরিবার অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
বিএনপির একাংশের অভিযোগ, সম্প্রতি এক লাইভ বক্তব্যে শামীম বলেন, “হ্যাঁ, আমার বাবা আওয়ামী লীগ করেছে, জিয়াউর রহমানও তো আওয়ামী লীগ করেছে।” এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শামীমকে পাথরঘাটা বিএনপি পরিবার থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দেন, তিনি বক্তব্যে সংযত না হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পাথরঘাটায় কোনো সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।
ভার্চুয়াল বক্তব্যে মাওলানা শামীম দাবি করেন, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কারণে তিনি গত ১৭ বছর দেশে আসতে পারেননি এবং তার নামে ৬৮টি মামলা রয়েছে। বরগুনা-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ‘এডিট করা ভিডিও’র মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
পাথরঘাটা থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে শামীম ভার্চুয়াল জনসভা করছিলেন। সেখানে অপর গ্রুপের বাধায় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন, পাথরঘাটা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি কে এম হাসিবুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল শরীফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজিব ইসলাম, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি বেলাল আহমেদসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং প্রেস ক্লাবের সদস্যরা।
ভোরের আকাশ/হ.র