-->
নারী করপোরেট কাবাডি লিগ

ওয়ারিয়র্সের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন নড়াইলের দুই কন্যা

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ওয়ারিয়র্সের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন নড়াইলের দুই কন্যা

তাহরিম ও ইয়াসমিন দুজনই নড়াইলের মেয়ে। মাশরাফি-ডলার-অভিষেকদের ছোট্ট জেলা থেকে উঠে এসেছেন তারা। তবে ভাইয়েরা দেশের হয়ে ক্রিকেট খেললেও তাদের স্বপ্ন কাবাডিকে ঘিরে। বর্তমানে বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন চিত্রপাড়ের দুই কন্যা। এখন পর্যন্ত সব ম্যাচেই খেলেছেন তারা।

 

নড়াইল থেকে উঠে আসা দুজনই জানালেন তাদের লড়াইলের কথা। কাবাডির পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে দুজনেইর বেশ বেগ পেতে হয়। তাহরিম পড়ছেন দশম শ্রেণিতে। ইয়াসমিন এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। কাবাডি খেলার কারণে দুজনকেই কিছুটা বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু নিন্দুকদের কথায় কান না দিয়ে স্বমহিমায় এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। যারা উৎসাহ দেন, তাদের কথাও বলতে ভোলেননি তারা।

 

শান্ত স্যার, সুর্নিমল স্যার, ইউনুস স্যারসহ কৃতজ্ঞতা জানালেন অন্য গুরুদের প্রতি। কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি স্কুলশিক্ষক ও শুভাকাক্সক্ষীদের। জানতে চাইলে ইয়াসমিন ভোরের আকাশকে বলেন, ‘কাবাডি খেলা নিয়ে অনেকের নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়। কেউ কেউ আবার উৎসাহও দেন। কিন্তু আমি নেতিবাচক কথায় কান দিই না। বাড়িতে আব্বাসহ অন্যরা খুব সাপোর্ট করেন। সেজন্য এগিয়ে যেতে পারছি। ইচ্ছা আছে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাবাডি খেলা। সবাই সহযোগিতা করবেন।’

 

একই বিষয়ে তাহরিম বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, এখনো মেয়েদের জন্য যেকোনো খেলায় আসা একটু কঠিন। কাবাডির বিষয়টি আরো কঠিন। খেলা নিয়ে কিছু কথা আমাকেও শুনতে হয়, কিন্তু এর সংখ্যা খুব কম। এলাকার বেশিরভাগ মানুষই আমাকে স্নেহ করেন। খেলায় উৎসাহ দেন। আমার খেলা থাকলে বাজারে সবাই একসঙ্গে খেলা দেখেন। দেখা হলে সবাই খেলার বিষয়ে জানতে চান। এটা ভালো লাগে।

 

তবে যখন নেতিবাচক মন্তব্য শুনি, তখন খুব কষ্ট হয়। এদের বলব এ মনোভাব ত্যাগ করতে। আমরা তো খেলি, এটা তো কোনো অন্যায় কাজ না।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা এবং মামাবাড়িতে গানবাজনা, খেলাধুলা কোনো কিছুতেই বাধা নেই। তবে সবার আগে লেখাপড়া ঠিক রাখতে হবে। বাড়ির সবার সহযোগিতা আছে বলেই খেলাটা চালিয়ে যেতে পারছি।’

 

বর্তমানে ক্রিকেট বেশি পপুলার এটা না খেলে কাবাডিতে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তাহরিম বলেন, ‘মামারা ক্রিকেট খেলতেই বলেছিলেন, কিন্তু আমার কাবাডিই ভালো লাগে, ভালোলাগা থেকেই কাবাডি খেলতে আসা।’ দেশের কাবাডিতে শুরু হয়েছে নতুন অধ্যায়। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে করপোরেট নারী কাবাডি লিগ। ৬ দল নিয়ে ২২ জানুয়ারি লিগ মাঠে গড়িয়েছে।

 

৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে চলমান লিগ। জাতীয় কাবাডি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ডাবল লিগ পদ্ধতির এ প্রতিযোগিতা। ছয়টি দলের মালিকানায় রয়েছে দেশের ছয়টি করপোরেট হাউস। দলগুলো হচ্ছে বেঙ্গল গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স, আহসান গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় মতলব থান্ডার, ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় নরসিংদী লিজেন্ডস, ব্রিজ ফার্মার পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা টুয়েলভ, টেকনো মিডিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় টেকনো মিডিয়া ও নারায়ণগঞ্জ গ্ল্যাডিয়ের্টস।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version