-->

সৌদি আরবের অঘটন, মেসিদের হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সৌদি আরবের অঘটন, মেসিদের হার

টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড তো রয়েছেই। সেইসঙ্গে গোলবার অক্ষত ৫ ম্যাচ। সব মিলিয়ে দারুণভাবে বিশ^কাপ শুরুর প্রত্যাশা মেসিদের। কিন্তু সব প্রত্যাশাকে উড়িয়ে দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের প্রথম অঘটনের জম্ম দিয়ে এশিয়ার দেশ সৌদি আরব। হারিয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী আর্জেন্টিনাকে। দুবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ার পরও ২-১ গোলে জয় নিয়ে সৌদি আরব ‘সি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মঙ্গলবার লুসাইল স্টেডিয়ামে প্রায় ৯০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।

 

বাংলাদেশের দর্শকদের বিশ্বকাপ শুরুর প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা-সৌদি আরব। ম্যাচে আর্জেন্টিনা কত ব্যবধানে জয় পাবে, মেসি কয়টা গোল পাবেনÑ এমন সব আলোচনায়ই সরগরম ছিল। ম্যাচের শুরুটাও সেভাবে হয়েছিল। কিন্তু কেউ তখনো উল্টো পিঠের কথা ভাবেনি। হয়তো ভেবেছিলেন সৌদি আরবের কোচ হার্ভে রেনার্ড। তাই তো ম্যাচের শুরুতে গোল হজম করে দমে যাননি, বরং নতুন করে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। তার ফলও পেয়েছেন। প্রতিপক্ষ দুবারের বিশ^চ্যাম্পিয়ন এবং র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্যাপক পার্থক্য থাকলেও পিছিয়ে পড়ার পরও হতোদ্যাম হয়নি সৌদি আরব। বরং একদিকে আর্জেন্টিনার আক্রমণ রুখেছে আবার প্রয়োজনে আক্রমণ রচনা করেছে। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া ৩২ দলের মধ্যে সৌদি আরব র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে তলানিতে। তাদের র‌্যাঙ্কিং ৫১তম।

 

টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট আর্জেন্টিনা ম্যাচটি বেশ ঢিমেতালে শুরু হয়েছিল। এর মাঝে মাত্র ১০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ভিএআর পরীক্ষায় আর্জেন্টিনা পেনাল্টিটি পেয়েছিল। এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক বল জালে ফেলেছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসি যেমন এ কাজটি করেছেন, তেমনি লাউতারো মার্টিনেজ। কিন্তু প্রতিবারই অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়েছে। একের পর এক গোল বাতিল হওয়ায় এক গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।

 

বিরতির পর এমন চমক যে অপেক্ষা করছে, তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে দুবার আর্জেন্টিনার জালে বল ফেলে স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ দর্শককে থমকে দেয় সৌদি আরব। ৪৮ মিনিটে সালেহ আল সেহরি প্রথম গোল করেন। আর সালেম আল দাউসারি ৫৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন। তার এ অসাধারণ গোলটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়।

 

পিছিয়ে পড়ার পর অনেক সময় পেলেও আর্জেন্টিনা ম্যাচে ফিরতে পারেনি। একের পর এক আক্রমণ রচনা করেছে তারা। তবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। সৌদি আরবের রক্ষণভাগ তছনছ করেছে; বিশেষ করে ডান দিক থেকে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া একাধিক আক্রমণ রচনা করেছেন। কিন্তু তাদের সামনে সৌদি আরবের গোলরক্ষক মোহাম্মদ আল ওয়াইজ অনেকটা চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। একের পর এক আর্জেন্টিনার আক্রমণ রুখে দিয়েছেন। একবার তো গোলরক্ষক পরাভূত হলেও সৌদির এক ডিফেন্ডার গোললাইন থেকে হেড করে বল ফিরিয়ে দেন। সৌদি আরব মাত্র তিনবার আর্জেন্টিনার পোস্টে বল রাখতে পেরেছে। এর মধ্যে দুবার তারা লক্ষ্যভেদ করেছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের পোস্ট লক্ষ্য করে ১৫টি শট নিয়েছে। ছয়বার তারা পোস্টে রাখতে পেরেছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version