-->

আমরা কঠিন লড়াই শুরু করেছি:মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমরা কঠিন লড়াই শুরু করেছি:মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা কঠিন লড়াই শুরু করেছি। এই লড়াইয়ে আমাদেরকে জয়ী হতে হলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে প্রতিমুহুর্তে স্মরণ করতে হবে। আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটুট থাকবো। এবার আমাদেরকে এই বিজয় অর্জন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।

 

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি’র উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্য্যালয়ে সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমূল হক নান্নু, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, মওলানা ভাসানীর স্বজন মাহমুদুল হক সানু প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিভাগীয় সমাবেশগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোথাও কোনো রকম সমস্যা হচ্ছে না। অথচ এরমধ্যেও আমাদের ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আবার গায়েবী মামলা দেয়া শুরু হয়েছে। ১৫ বছর ধরে তো এই মামলা বহু দিয়েছে, ১৫ বছর ধরে বহু মানুষ খুন করেছে, ৬শ’ মানুষকে গুম করে দিয়েছে। এরপরও মানুষকে রোখা যায়নি। অত্যন্ত তীব্র আগ্নেয়গিরির মতো ফুঁসে উঠছে মানুষ। এই ফুঁসে উঠার মধ্য দিয়েই এই সরকারের পতন হবে। জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, জনগনের বাংলাদেশ তৈরি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, এই আন্দোলন শুধুই আমাদের জন্য নয়। এটা গোটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য, গোটা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য, মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি বলেন, কে কোথায় কি বললো না বললো, সেদিকে কান দেয়ার দরকার নাই। কে কি বলছে, খেলা বলছে না কি বলছে- বলতে দিন। আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটুট থাকবো। এবার আমাদেরকে এই বিজয় অর্জন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কিভাবে হেঁটে হেঁটে ফারাক্কা বাঁধে গেছেন, কিভাবে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরেছেন, কিভাবে মানুষের দূঃখের সময়ে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তা মনে রাখতে হবে। সেই মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আমরা মনে করব, তাকে স্মরণ করব, তার পথে আমরা চলব। তাহলেই আমরা সফল হতে সক্ষম হবো। তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও সেই পথ(ভাসানীর পথ) দেখিয়েছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধুই ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেননি। উনি এখনো ৪ বছর ধরে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনে কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্বাসিত হয়ে বিদেশে আছেন। ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা।

 

তিনি বলেন, এখন তো রাজনীতি বদলে গেছে। আমার প্রায় মনে হয় যে, এখন নষ্ট সময় চলছে। এই নষ্ট সময়ে মওলানা ভাসানীকে স্মরণ করা, তাকে অনুসরণ করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি(ভাসানী) নিজের জন্য কোনো কিছু চাননি। ১৯৫৪ সালে তার দল নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছে মওলানা ভাসানী মন্ত্রিত্বও নেননি। এই হচ্ছে মওলানা ভাসানী। এখনকার যে রাজনীতি সেই রাজনীতিতে আমরা যেটুকু দেশের জন্য, মানুষের জন্য চেষ্টা করছি, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য চেষ্টা করছি। একটা জিনিস তার কাছ থেকে নেওয়া দরকার সেটা হচ্ছে যে, আমাদের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্য যেন আমরা কখনো আপোষ না করি।সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যেন সর্বশক্তি দিতে পারি।

 

উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মওলানা ভাসানী মারা যান। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি দুইদিনের কর্মসূচি গ্রহন করেছে। আজ বৃহষ্পতিবার বিএনপির নেতৃবৃন্দ টাঙ্গাইলে সন্তোষে প্রয়াত নেতার কবর পুস্পমাল্য অর্পন করে তাকে শ্রদ্ধা জানাবে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version