-->

দলীয় কমিটিকেন্দ্রিক কোন্দল, নিরসনে পর্যাপ্ত সময় পাবে না আ.লীগ

নিখিল মানখিন
দলীয় কমিটিকেন্দ্রিক কোন্দল, নিরসনে পর্যাপ্ত সময় পাবে না আ.লীগ

নিখিল মানখিন: আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনে ভেতরকার কোন্দলের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে এই কোন্দল নিরসনে আওয়ামী লীগ পর্যাপ্ত সময় পাবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর অনেক জেলা ও উপজেলা কমিটি কয়েক বছর আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এসব কমিটির কাউন্সিল জাতীয় নির্বাচনের আগের বছর পর্যন্ত ঝুলে রাখা ঠিক হয়নি। কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে কোন্দল সৃষ্টি হবেই এবং তা নিরসনের জন্য হাতে পর্যাপ্ত সময় রাখা উচিত ছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রায় চৌদ্দ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে কোন্দল থাকবেই। উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকেন্দ্রিক সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ কোন্দলের রেশ কাটতে না কাটতেই দল এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠনের কোন্দলের বেড়াজালে পড়েছে আওয়ামী লীগ। সংগঠনগুলোর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কাউন্সিল অব্যাহত রয়েছে। অনেক উপজেলা কমিটি ঘোষিত হলেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। আর স্থানীয় প্রভাবশালী গ্রুপের ইশারায় গঠিত হয়েছে অধিকাংশ ইউনিয়ন কমিটি। ফলে কোন্দল রয়েই গেছে।

 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ডিসেম্বরে ২২তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে দল গোছানোয় মনোযোগী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দলটি। নভেম্বরের মধ্যে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনগুলো সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তিন বছরের মেয়াদ থাকায় ২৯ জেলায় সম্মেলনের প্রয়োজন হবে না। ৩৩ জেলার মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। দলের বর্তমান কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদকালে ২০ জেলায় সম্মেলন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে দলের তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন অনেক আগেই শুরু হয়েছে। যদিও করোনাসহ বিভিন্ন কারণে অনেক সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন ব্যাহত হয়। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সম্মেলনগুলো শেষ করা হবে। এর মধ্য দিয়েই সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সৎ, দক্ষ, ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারাই নেতৃত্বে আসবেন।

 

এদিকে দলে অব্যাহত অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে চিন্তিত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কোন্দলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়লে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। তাই আগামী নির্বাচনের আগে কোন্দল মিটিয়ে দলকে সুশৃঙ্খল করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল অব্যাহত থাকায় এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করেছেন এবং দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা আরও জানান, দলের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিশৃঙ্খল ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়া হবে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অভ্যন্তরীণ সংঘাত অনভিপ্রেত। তবে আওয়ামী লীগ অনেক বিস্তৃত একটা দল। নানা ধরনের এজেন্ডা নিয়ে নানা ধরনের লোক এখানে এসেছে। সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তবে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা সংঘাতের বিষয়ে কাউকেই প্রশ্রয় দিচ্ছেন না। দলের সভাপতিরও এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version