-->

শবেকদরে বেশি বেশি ক্ষমা চাইতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
শবেকদরে বেশি বেশি ক্ষমা চাইতে হবে

‘হে আল্লাহ! আজ তোমার করুণা ও রহমতের দরজা আমার সামনে খুলে দাও এবং বরকত নাজিল কর। আমাকে তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দাও। তোমার বেহেশতের বাগানের মাঝে আমাকে স্থান করে দাও।

 

হে অসহায়দের দোয়া কবুলকারী।’ আল-কোরআনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি লাইলাতুল কদর কোন রাত। তবে কোরআনের ভাষ্য হলো লাইলাতুল কদর রমজান মাসে।

 

কিয়ামত পর্যন্ত রমজান মাসে লাইলাতুল কদর অব্যাহত থাকবে এবং এ রজনী রমজানের শেষ দশকে হবে বলে হাদিসে এসেছে এবং তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে হাদিসে এসেছে। রমাজানের শেষ ১০ দিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর। (বুখারি ও মুসলিম)।

 

অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে প্রথম হলো রমজান মাসের ২৭ তারিখ। দ্বিতীয় হলো ২৫ তারিখ। তৃতীয় হলো ২৯ তারিখ। চতুর্থ হলো ২১ তারিখ। পঞ্চম হলো ২৩ তারিখ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের ওপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফজিলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে। লাইলাতুল কদরে আমাদের কর্তব্য হলো বেশি করে দোয়া করা।

 

আয়েশা (রা.) রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, লাইলাতুল কদরে আমি কী দোয়া করতে পারি? তিনি বললেন, বলবে- হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন। (তিরমিযী)। ইতিকাফ হলো সব কাজ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করা। এটা হলো সুন্নত। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতেন। যত দিন না আল্লাহ তাকে মৃত্যু দান করেছেন, ততদিন তিনি এ আমল অব্যাহত রেখেছেন। তার ইন্তেকালের পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। (বুখারি)।

 

মানুষের ঝামেলা থেকে দূরে থেকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে একাগ্রচিত্তে নিয়োজিত হওয়া। এ লক্ষ্যে কোনো মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর তরফ থেকে সওয়াব ও লাইলাতুল কদর লাভ করার আশা করা। ইতিকাফকারীর কর্তব্য হলো অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করে সালাত, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আসকার, ইস্তিগফার, দুআ ইত্যাদি ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থাকা। তবে পরিবারপরিজন বা অন্য কারো সঙ্গে অতিপ্রয়োজনীয় কথা বলতে দোষ নেই।

 

ইতিকাফকারী নিজ অন্তরকে সর্বদা আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে চেষ্টা করবে। নিজের অবস্থার দিকে খেয়াল করবে। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালনের ব্যাপারে নিজের অলসতা ও অবহেলা করার কথা মনে করবে। নিজের পাপাচার সত্ত্বে আল্লাহ যে কত নিয়ামত দিয়েছেন তা স্মরণ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞ হবে। গভীরভাবে আল্লাহর কালাম অধ্যয়ন করবে। খাওয়া-দাওয়া, নিদ্রা ও গল্প গুজব কমিয়ে দেবে।

 

কেননা এসব কাজকর্ম আল্লাহর স্মরণ থেকে অন্তরকে ফিরিয়ে রাখে। অনেকে ইতিকাফকে অত্যধিক খাওয়া-দাওয়া ও সঙ্গীদের সঙ্গে গল্প-গুজব করে সময় কাটানোর সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। এতে ইতিকাফের ক্ষতি হয় না বটে তবে আল্লাহর রাসূলের ইতিকাফ ছিল অন্যরকম। ইতিকাফ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস, চুম্বন, স্পর্শ নিষেধ। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হবে না। (সূরা আল-বাকারা : ১৮৭)।

 

শরীরের কিছু অংশ যদি মসজিদ থেকে বের করা হয় তাতে দোষ নেই। রাসূল (সা.) ইতিকাফ অবস্থায় নিজ মাথা মসজিদ থেকে বের করতেন। তখন আম্মাজান আয়েশা রা. তার মাথার চুল বিন্যস্ত করে দিতেন। এ থেকেই বোঝা যায়, ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ থেকে অপ্রয়োজনে বের হওয়া উচিত হবে না।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version