-->

ধসে পড়েছে নতুন ব্রিজের প্রতিরক্ষা ব্লক

মো. ইব্রাহিম শেখ, চট্টগ্রাম
ধসে পড়েছে নতুন ব্রিজের প্রতিরক্ষা ব্লক
ব্রিজটির দুই পাশের প্রতিরক্ষার পাথর ব্লক ধসে পড়েছে

মো. ইব্রাহিম শেখ, চট্টগ্রাম: প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাউজানের ডাবুয়া খালের ওপর ব্রিজটির দুই পাশের প্রতিরক্ষার পাথর ব্লক ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু পাথর ব্লক পানির স্রোতে ধসে পড়লেও বেশিরভাগ ব্লক ধসে গেছে নরম মাটিতে যেনতেনভাবে বসানোর কারণে। ব্রিজটির নির্মাণকারী ঠিকাদারের দাবি, তারা কাজ শেষ করে ছয় মাস আগে কর্তৃপক্ষের হাতে ঝুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী বলেছেন, এখনো ঠিকাদারের কাছ থেকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বুঝে নেননি। উপজেলার হলদিয়া-আলীখীল সড়কের ডাবুয়া খালের ওপর এই ব্রিজটি নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিদারুল মাজেদা এন্টারপ্রাইজ। ২০২১ সালে ১৩ জানুয়ারি কাজের কার্যাদেশ পেয়ে তারা ব্রিজের কাজ শেষ করে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্রিজটি নির্মাণ প্রকল্পে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ তিন কোটি ৮৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। স্থানীয় জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেই খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেই (ডাবুয়া) খালে জোয়ারভাটা হয় না। শুষ্ক মৌসুমে সামান্য পরিমাণ পানি এই খালে পাওয়া গেলেও পাহাড়ে বৃষ্টি হলে বর্ষা মৌসুমে এই খালে স্রোত হয়ে পানি নেমে আসে নিচের দিকে।

 

নতুন ব্রিজটি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের উভয় পাশের গোড়ায় দেয়া পাথর ব্লক ধসে পড়েছে। ব্রিজের সাথে সংযুক্ত রাস্তার পশ্চিম পাশের প্রতিরক্ষা দেয়ালও ধসে পড়তে চলেছে।

 

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রিজের উত্তর-পশ্চিমাংশের কিছু অংশ ধসে গেছে পাহাড়ি পানির স্রোতে। বেশিরভাগ অংশ ধসের ঘটনা ঘটেছে বৃষ্টির পানি ব্লকের ফাঁকে ফাঁকে প্রবেশ করার কারণে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান পাথর ব্লক বসানোর সময় প্রতিরক্ষা ব্লকের নিচে পর্যাপ্ত বালু দেয়নি। ব্লকের একটির সাথে অন্যটির সংযোগে দেয়নি প্রয়োজনীয় সিমেন্ট। এ কারণে ব্লকের ফাঁকে ফাঁকে বৃষ্টির পানি ঢুকে ধসের সৃষ্টি হয়েছে।

 

পরিদর্শনের সময় দেখা যায়, ব্রিজের উভয় পাশের সংযোগ সড়কেও ধস শুরু হয়েছে। বসানো ব্লকসমূহ একটির থেকে অন্যটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এলাকার জনসাধারণ জানিয়েছে, নতুন ব্রিজটির অবস্থানে আগেও একটি পাকা ব্রিজ ছিল। গত কয়েক বছর আগে ওই ব্রিজটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে ধসে পড়ে। তখন অনেকদিন মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। তারা অভিযোগ করেন, নতুন এই ব্রিজের দুই পাশের গোড়ায় দেয়া প্রতিরক্ষা পাথর ব্লক মানসম্মতভাবে বসানো হয়নি। এগুলো পুনর্বিন্যাশ করা না হলে আগের ব্রিজটির মতো এটিও ধসে পড়তে পারে।

 

ব্রিজটির দুই পাশে পাথর ব্লক বসানোর কাজে ত্রুটি ছিল কিনা- জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা হাসান রাশেদ জানান, ব্রিজটি নির্মাণকাজ শেষ করে ছয় মাস আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে তার দাবি।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, পাহাড়ি পানির স্রোতে ব্রিজের গোড়ার কিছু ব্লক ধসে গেছে। ভরাট করা মাটিতে ব্লক বসানোর কারণে এমন হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিকাদারের কাছ থেকে এখনো কাজ বুঝে নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি। ধসে যাওয়া ব্লক ঠিকাদারের মাধ্যমে পুনর্বিন্যাশ করে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version