- দেশে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গণপিটুনিতে নিহত ৮০০ জন
- গত সাড়ে ছয় বছরে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে আরও প্রায় ২৮৬ জন
- ২০২৪ সালে নির্বাচনের পর (জানুয়ারি-জুলাই) গণপিটুনিতে নিহত ৩২ জন
- গত ৭ মাসে রাজধানী ঢাকায় নিহত ১৬ জন
- ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত কতজন গণপিটুনিতে মারা গেছে তা জানা যায়নি
দেশের দুইটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একইদিনে কাছাকাছি সময়ে এক যুবক ও একজন ছাত্রকে গণপিটুটিতে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। এই দুই মর্মান্তিক ঘটনা গতকাল বৃহস্পতিবার টক অব দ্য কান্ট্রি ছিল। অকালে তাজা দুইটি প্রাণ ঝড়ে গেল নিষ্ঠুর বর্বরতায়! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা চলছে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে। অনেকের প্রশ্ন, মানুষ কিভাবে এতো নিষ্ঠুর হতে পারে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই দেশব্যাপী ‘মব জাস্টিস’ শুরু হয়। মব শব্দের অর্থ উত্তাল জনতা বা উচ্ছৃঙ্খল জনতা। জাস্টিস শব্দের অর্থ বিচার বা ন্যায়বিচার। ‘মব জাস্টিস’ অর্থ উত্তাল জনতা বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিচার। আগেও দেশে এই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। তবে সেটা ছিল কথিত চোর-ডাকাতকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা। কিন্তু এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা কর্মকর্তাদের জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা, মারপিট করে তাড়িয়ে দেওয়া, আদালত এলাকায় আসামিদের ওপর হামলা, কোথাও কোথাও পিটিয়ে, কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এসব ঘটনায় জড়িত কাউকে গেপ্তার কিংবা আইনের আওতায় আনার মতো খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করাও বারবার ‘মব জাস্টিসের’ নামে আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এরপরও থামছে না মব জাস্টিস। আইন ও বিচারবহির্ভূত এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে শঙ্কা তৈরি করেছে। জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে র্যাব দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিত ও নিন্দিত ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর গত দেড় মাসে সংঘটিত মব জাস্টিসের নামে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো আগের বিচারবহির্ভূত লোমহর্ষক ঘটনার অভিজ্ঞতা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মব জাস্টিস বলতে সাধারণভাবে বোঝায় জনতা আইন বা আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো বিচার নিজ হাতে যখন তুলে নেন, তাই মব জাস্টিস। এ ধরনের ঘটনায় যদি কেউ মারা যায় বা জনতার গণপিটুনিতে কেউ মারা গেলে তাকে লিঞ্চিং বলে। এর অর্থ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। এছাড়া জনতা দ্বারা বাড়িঘর পোড়ানো, কাউকে আহত করা, ভাঙচুর সবকিছুই মব জাস্টিসের অংশ। দেশে মব জাস্টিস এবং লিঞ্চিং প্রায়ই সংঘঠিত হয়। ২০১১ সালের জুলাই মাসে আমিন বাজারে ‘ডাকাত’ সন্দেহে মেরে ফেলা হয়েছিল ৬ ছাত্রকে। ২০১৯ সালে বাড্ডায় তসলিমা বেগম রেণু নামের এক মা’কে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। রাজশাহীতে গত ৭ সেপ্টেম্বর যার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামের এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গণপিটুনিতে ৮০০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর গত সাড়ে ছয় বছরে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে আরও প্রায় ২৮৬ জন। এর মধ্যে ২০২৪ সালে নির্বাচনের পর গত ৭ মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) গণপিটুনিতে নিহত হন ৩২ জন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় নিহত হন ১৬ জন।
যে কারণে মব জাস্টিস
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটা দেশ বা সমাজে মব জাস্টিস ও মব লিঞ্চিং বিভিন্ন কারণে দেখা দেয়। আইনের শাসন না থাকা, দুর্বল আইন, বিচারের প্রতি জনতার অনস্থা সৃষ্টি হলে মব জাস্টিস ও মব লিঞ্চিং বেশি দেখা যায়। এছাড়া মানুষ যখন ক্রমাগত অন্যায় আর বিচারহীনতায় অতিষ্ট হয়ে উঠে তখনই ‘মব জাস্টিসে’র নামে ‘লিঞ্চিং মবে’র প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। এ ধরনের বিচারে অনেক সময় সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মব জাস্টিস সংগঠিত হওয়ার পেছনে মোটাদাগে ১০টি কারণের মধ্যে রয়েছে আইনপ্রণয়নের অভাব, অব্যবস্থাপনা, অসন্তোষ ও ক্ষোভ, সামাজিক বা রাজনৈতিক উত্তেজনা, স্বতঃস্ফূর্ত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থনৈতিক প্রভাব, সামাজিকবৈষম্য, বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দুর্বলতা।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনাগুলো বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করবে। একটা বিচারে গেছেন, বিচারটাকে যদি বিশ্বাস না করেন, নিজেরাই ‘মব জাস্টিস’ করতে থাকেন, তাহলে বিচার ব্যবস্থার আর দরকার কী প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে সেটির জন্য প্রচলিত আইন আছে। আইন অনুযায়ী সবকিছু হলেই সমাজে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। আইনের বাইরে গিয়ে এমন পরিস্থিতি কখনই কাম্য নয়। ‘মব জাস্টিসের’ নামে নৈরাজ্য কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, মব জাস্টিস কখনোই ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। এখন যিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তিনিও আরেকটা সুযোগের অপেক্ষায় থাকবেন। একটি মব আরও অনেকগুলো মব বয়ে নিয়ে আসে। ‘সে আমার ক্ষতি করেছে, তাহলে নিজের বিচার নিজেই করব’Ñ একটি সমাজে এ ধরনের প্রবণতা বেশি থাকলে সমাজে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন, কিন্তু সে জায়গায় না গিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া মোটেও কাম্য নয়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক মানুষ একত্র হয়ে ব্যক্তিগত ক্ষোভ-প্রতিহিংসার জায়গা থেকে অন্যের ওপর আক্রমণ করছে। এ ধরনের ঘটনা সেসব সমাজেই বেশি হয়ে থাকে যেসব সমাজ বিশ্বাসভিত্তিক বেশি এবং জ্ঞানভিত্তিক মানুষ কম থাকে।
গণপিটুনিতে প্রাণ গেল ২ জনের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এজহার দায়ের করেন। পরে এজহারটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দিন শাহীন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৮টার সময় এক ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে সে মোবাইল ফোন চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরবর্তী সময়ে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পরে।
এজাহারে আরও বলা হয়, এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিবাগত রাত পৌনে ১টার সময় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে হল প্রশাসন। হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুম এ কমিটি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের তদন্ত কমিটিকে সহায়তা এবং আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতেও বলেন শাহ মাসুম।
একই দিন গত বুধবার রাত ১০টার দিকে সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার ওসি মো. আবু বকর সিদ্দিক। নিহত শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকার মোল্লাবাড়ীর ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
গত বুধবার রাতে তাকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার ঘটনায় শামীম সামনের সারিতে ছিলেন এমন অভিযোগ তুলে গত বুধবার বিকালে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট এলাকা থেকে ধরে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।
সেখান থেকে শামীমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নেওয়া হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি আশুলিয়া থানায় জানালে পুলিশ শামীম মোল্লাকে আটক করে সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘গণপিটুনির খবর পেয়ে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩৯ ব্যাচের এক সাবেক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।’
ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে মারধরের শিকার যুবককে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। প্রাথমিকভাবে মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমাদের এখানে আনার পর পরীক্ষা করে দেখি তিনি মৃত। তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।’
কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ
প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট উপদেষ্টা, সমন্বয়কসহ সরকারের সংশ্লিষ্টরা ইতোমধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে বিরত থাকার এবং আইন নিজেদের হাতে তুলে না নেওয়ার বিষয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন।
আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদরদপ্তরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মব জাস্টিসের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। একজন অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন। ইনোসেন্ট লোক যেন কোনো অবস্থাতেই হেনস্তা না হয়। মব জাস্টিসে অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের বৈঠকেও বিষয়টি উঠে আসে। সেই আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মব জাস্টিসের বিষয়ে সরকারের অবস্থান খুব স্পষ্ট। কোনোভাবে হতে দেওয়া যাবে না। কেউ অপরাধ করে থাকলে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই।’
জাতির উদ্দেশে ভাষণে গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিলে শাস্তি পেতে হবে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য