-->
আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং বন্ধে নীতিমালা করার অগ্রগতি জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং বন্ধে
নীতিমালা করার অগ্রগতি জানাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং রোধে নীতিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়নের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এ আদেশ দিয়েছেন। বুলিং এর শিকার হয়ে ঢাকার বনশ্রী শাখার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজওয়াদ আহনাফ করিমের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্ত শেষে ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

 

এর আগে ওই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। রিট আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন।

 

ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণে ‘বুলিং’ বিষয়ে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং বুলিংয়ের ধরন, কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে শিক্ষকদের সম্যক জ্ঞান দেয়া প্রয়োজন। প্রতিটি স্কুলে একজন শিক্ষককে কাউন্সেলর হিসেবে নিয়োজিত করতে হবে; যাঁর কাছে শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যাগুলো অকপটে বলতে পারবে।

 

ওই শিক্ষক মাঝেমধ্যে বুলিংসহ সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে কাউন্সেলিং করবেন। প্রতিবেদনে আরো বকলা হয়, যেহেতু স্কুল বন্ধের প্রায় এক বছর চার মাস পর ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে এবং শিক্ষার্থী অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা রোগে আক্রান্ত ছিল বলে তার বাবা স্বীকার করেছেন; তাই তার মৃত্যু বুলিংয়ের কারণে হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়নি।

 

গতবছর ২২ আগস্ট হাইকোর্ট এক আদেশে আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে ঢাকার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়। অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করা হয়। রুলে বুলিং রোধে একটি জাতীয় নীতিমালা করতে নির্দেশ দেয়া হবে না এবং বুলিং প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিস্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষনা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

 

‘মোটা বলে সহপাঠী ও শিক্ষকের লাঞ্ছনার শিকার মৃত কিশোরের পরিবার যা বলছে’ শিরোনামে গত ৮ জুলাই বিবিসি বাংলায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় অ্যানোরেক্সিয়া এবং বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরের মৃত্যুর পর তার পরিবার অভিযোগ করেছে, স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষকদের বুলিং-এর শিকার হবার ফলস্বরূপ এই ঘটনা ঘটেছে।

 

শিক্ষার্থীর পিতা মো. ফজলুল করিমের অভিযোগ, তার ছেলের ওজন স্বাভাবিকের চাইতে বেশি হবার কারণে, স্কুলে তাকে প্রায় নিয়মিতই বুলিং ও উপহাসের শিকার হতে হতো। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে প্রথমে বিবাদীদের প্রতি একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব না পেয়ে গতবছর ১৬ আগস্ট রিট আবেদন করা হয়।

 

ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা নিয়ে করা এক রিট আবেদনে বুলিং প্রতিরোধের উপায় নির্ণয় করে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন প্রশ্নে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় সরকার গঠিত কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা করে হাইকোর্টে দাখিল করে।

 

এরপর হাইকোর্ট এক আদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং-এর বিরুদ্ধে যাতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানাতে পারে সেজন্য স্বস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ বাক্স রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version