-->

নানা প্রতিকূলতায়ও স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেইনি- রাজিয়া সুলতানা

ট্রেন্ড প্রতিবেদক
নানা প্রতিকূলতায়ও স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেইনি- রাজিয়া সুলতানা

খুলনা মেয়ে রাজিয়া সুলতানা, এই শহরেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ । দুই ছেলের জননী। কঠোর মুসলিম পরিবারের মধ্যে বেড়ে উঠা। রাজিয়ার মা খুব ভালো রান্না ও কাটিং করতেন। ছোট বেলায় তাদের খুব সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের ড্রেস বানিয়ে পরাতেন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা, রন্ধনশিল্পের প্রতি প্রচুর আগ্রহ ছিল রাজিয়া সুলতানার।

 

এছাড়া কাপড় ও কাঠি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সৌখিন জিনিসও অলমেট তৈরি করতেন তিনি। ছোট ছোট প্রোগ্রামে এগুলি উপহার হিসেবে ফ্রি দিয়ে দিতেন রাজিয়া।  কেউ টাকা দিলে তিনি তা নিতেন না। রাজিয়া সুলতানা বলেন, খুব মজা পেতাম এই কাজগুলো করে। হঠাৎ একদিন পরিচিত বোন বললো টাকা খরচ করো তাহলে সেল করা শুরু । কিন্তু পরিবারের নিষেধ ছিল তাই কখনো সেল করিনি ।

 

খেলাধুলো করতাম এবং স্কুলে যে কোন প্রোগ্রাম হল অংশগ্রহণ করতাম। স্কুলের বার্ষিক প্রোগ্রামে নাম দিতাম প্রতিবছর একটা না একটা পুরস্কার পেতাম পরিবারের ভয়তে কখনো পুরস্কার বাসায় নিয়ে আসতে পারিনি। আমার এস.এস.সি পরীক্ষা পর মায়ের সাপোর্টে সেলাই ,ব্লক বাটি টেলারিংয়ে কাজ শিখি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে পাশাপাশি বড় বোনের কাছে বেকিং কুকিং শিখেছি ।

 

১৯৯০ সালে বিবাহ বন্ধনের পরে দীর্ঘ ১০ বছর গ্রামের ছিলাম । গ্রামের আমি বসে থাকিনি সেখানে আমি চিংড়ির ঘের করেছি লোক দিয়ে বিভিন্ন সবজি উৎপন্ন করেছি । গ্রামের মেয়েদের দিয়ে সিল্ক, সুতি শাড়ির পরে বিভিন্ন ধরনের গুজরাটি ও নানান ধরনের ফোড় দিয়ে নকশী কাজ করে সেল করেছি। ২০০৩ সালে আবার পুনরায় খুলনায় চলে আসি তখন আমার সব কাজ বন্ধ হয়ে যায় ২০১৩ সালে কম্পিউটারে উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে এক বছর ওয়েব পেজ ডিজাইনের কাজ করেছি।

 

২০১৮ সালে আমি হজ্ব এবং ছোট ছেলে ক্লাস নাইনে ওঠার পর আবার কাজ বন্ধ করে দিয়ে দীর্ঘদিন ঘরে বসে ছিলাম। একদিন রাজিব স্যারের একটা প্রতিবেদন দেখে নিজেকে আবার জাগিয়ে তুললাম এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম। আমি কাজ শুরু করব এবং তখন থেকে আমি আবার বেকিং কুকিং এবং ট্রেলারিং এর পরে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করলাম ।

 

হঠাৎ করোনা এসে আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল । আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা ছিলাম যে আমি একদিন প্রতিষ্ঠিত হবই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর পরে আমার এই দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তাই করোনা সময় ঢাকা, ইন্ডিয়া অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কোর্স করি।

 

রুমি'স কিচেন থেকে কিছু স্পেশাল করে। খুলনায় টনি খান ইনস্টিটিউট প্রথম শুরু হয় আমি সেখানে সেফ কোর্স কমপ্লিট করি। একে একে হাইজেন লেভেল ১, কুকিং লেভেল ১ সম্পন্ন করি। এবং আমি ইন্ডিয়াতে গিয়েও ইন্ডিয়ান কুইজিং এবং বিভিন্ন দেশের কুইজিং এর কোর্স করি।

 

ঢাকা থেকে রুমি'স কিচেন থেকে আমি কিছু স্পেশাল কোর্স করেছি। সর্বশেষে Trainer & Assessor পাট ঢাকার মধ্যে দক্ষ টিচারের তত্ত্বাবধানে কমপ্লিট করেন। এত উথান পতন এর ভিতরও আমি "(রুজি যুব ফাউন্ডেশন ") (রুমি'স কুকিং স্টুডিও ) নামে দুটি প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছি। আমার স্বপ্নের এসব প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন কে হাঁটি হাঁটি পায়ে এগিয়ে নিয়ে আসছি কখনোই বন্ধ হতে দেয়নি। সবাই দোয়া করবেন আমি যেন সুস্থ থাকে ভালো থাকে ও আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।

 

মন্তব্য

Beta version