-->
আপিল বিভাগের জামিনের শর্ত ভঙ্গ

আজিজ কো-অপারেটিভের সাবেক চেয়ারম্যান তাজুলের জামিন বাতিলের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আজিজ কো-অপারেটিভের সাবেক চেয়ারম্যান তাজুলের জামিন বাতিলের দাবি

অর্থপাচার মামলায় আমানতকারীদের ১১২ কোটি টাকা পরিশোধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৬ মাসের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হতে চললেও সমবায় প্রতিষ্ঠান আজিজ কো-অপারেটিভের সাবেক চেয়ারম্যান এম. তাজুল ইসলাম টাকা ফেরত দেননি। তাই শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে তার জামিন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতিগ্রস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমানতকারীরা।

 

শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারী বলেন, ২০০৪ ইং সালের পর প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান এম. তাজুল ইসলাম দায়িত্ব নেন।

 

পরে তিনি পর্যায়ক্রমে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে শাখা খুলতে শুরু করেন। তিনি প্রায় ১৫০ টির বেশি শাখা থেকে আসা আমানত স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ না করে প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণে কর্মকর্তাদেরকে বাধ্য করেন।

 

তিনি সিদ্ধিরগঞ্জে আজিজ কো-অপারেটিভ শপিং মল, সাভারে শিমুলিয়ায় অটো ব্রিক্স প্রজেক্ট করার কথা বলে বড় ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম তানভীর, ভাই রফিক, স্ত্রী আফরোজা পারভীনের নামে শাহবাগ, দিলকুশা ও নবাবপুর শাখা থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা লোন নিয়ে পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালে পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি সঙ্কটে পড়তে শুরু করে। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ টাকা কানাডা প্রবাসী দুই ছেলের কাছে পাচার করেন।

 

পরবর্তীতে ২৬/০২/২০১৮ তারিখে সমবায় অধিপ্তরের তৎকালীন যুগ্ম-নিবন্ধক দিদার উদ্দিন বাদি হয়ে ১১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাজুল ইসলামের নামে রমনা থানায় একটি মামলা করেন।

 

মামলাটি পরবর্তীতে দুদদকে হস্তান্তিরত হয়। প্রথমে তাজুল ১১/০৭/২০১৯ এক গ্রাহকের করা মামলায় গ্রেফতার হলেও পরে তিনি সিআইডির মানি লন্ডারিং ও দুদকের ওই মামলাসহ ৫০ টির বেশি মামলায় কারান্তরীণ হন। এরপর প্রধান কার্যালয়সহ প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ শাখা বন্ধ হয়ে গেলে কর্মকর্তারা আমানতকারীদের চাপে এলাকা ছাড়া হয়ে যান।

 

কারান্তরীনের পর বেশিরভাগ মামলায় জামিন পেলেও দুদকের মানি লন্ডারিং মামলায় প্রথমে নিন্ম-আদালত ও পরবর্তীতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে তাতেও ব্যর্থ হন তাজুল ইসলাম। প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর গত ৫ ডিসেম্বর মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিনের আবেদন করলে (যার ক্রিমিনাল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং-১১৭৯/২০২২) তাজুল ইসলামকে ৬ মাসের মধ্যে আজিজ কো-অপারেটিভের আমানতকারীদের ১১২ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে জামিন দেন।

 

ওই শর্তানুয়ায়ী আগামী ৪ জুন ৬ মাস পূর্ন হবে। এরপরও তিনি আমানতকারীদের এক টাকাও ফেরত দেননি।

 

বরং জামিনে বের হয়ে এসে তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আফরোজা পারভীনের নির্দেশে আজিজ কো-অপারেটিভ শপিং মলের সাবেক মার্কেটিং অফিসার সাইফুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ রাকিব, কামাল হোসেন, মোঃ হাসান স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় সিদ্ধিরগঞ্জে আজিজ কো-অপারেটিভ শপিং মলে হামলা চালিয়েছে।

 

এছাড়া তাজুল গংয়ের নামে আমানতকারীরা মামলা করায় উল্টো তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ভুয়া মামলা করে হয়রাণি করেছেন সেসব মামলার বাদিদেরকে। তাজুল ইসলাম ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে সম্পূর্ণ ভুয়া গ্রাহকদের মাঝে টাকা পরিশোধ দেখিয়ে অবৈধ কাগজপত্র তৈরির ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেন মানববন্ধনকারীরা।

 

মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানের সেক্রেটারি ও আমানত স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহব্বায়ক এস এম হারুনার রশিদ, পরিচালক ওসমান গনি ভ‚ঁইয়া, মুস্তাফিজুর রহমান বাহার, সাইফুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান রফিকুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় প্রধান আব্দুস সালাম,সহ-বিভাগীয় প্রধান মাহবুবার রহমান মন্ডল, খুলনা বিভাগীয় প্রধান আবুল হাসানসহ আঞ্চলিক প্রধানগন এবং দুই শতাধিক আমানতকারী উপস্থিত ছিলেন।

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version