-->

বিচারপতি নাজমুল আহাসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিচারপতি নাজমুল আহাসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান মিজানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। তিনি গতবছর ৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ উপলক্ষে বিচারপতি নাজমুল আহসান মিজান স্মৃতি সংসদ এর উদ্যোগে আজ শনিবার সকাল ৯টায় বরিশাল নগরীর মুসলিম গোরস্তানের কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিল এবং সন্ধ্যা ৬টায় বরিশাল অশ্বিনী কুমার হলে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।

 

এছাড়া ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট ভবন মিলনায়তনে স্মরণসভা ও গ্রন্থের উন্মোচন করা হবে। পাশাপাশি পারিবারিকভাবেও ঢাকা ও বরিশালে বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠিত হবে।

 

গতবছর ৮ জানুয়ারি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসানসহ হাইকোর্ট বিভাগের চারজন বিচারপতিকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবার শর্ত ছিল। এ অবস্থায় বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ছাড়া অপর তিন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, এম. ইনায়েতুর রহিম ও কৃষ্ণা দেবনাথ ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার শপথ নেওয়া হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই গতবছর ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

১৯৫৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম ডাইয়া গ্রামে এক সম্ভান্ত্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এফ আর এম নাজমুল আহসান মিজান। তার পিতা আনোয়ার হোসেন তালুকদার প্রথমদিকে স্কুল শিক্ষক থাকলেও পরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তা পদে চাকরি করেন। মাতা জাহানারা বেগম। তার শৈশব কাটে মেঘনা তীরের হিজলায়।

 

পরে পিতার চাকরি সূত্রে কিছুদিন বসবাস করেন বরগুনার নলীতে। সেখানকার নলী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে এস এস সি পাস করেন। বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এইচএসসি, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

 

১৯৮৬ সালের ১৮ মার্চ বরিশাল জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় কাজ শুরু করেন নাজমুল আহসান মিজান। পরে তিনি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। কিছুদিন তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

 

বিচারপতি হিসাবে তিনি অনেকগুলো ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেন। বিশেষ করে “সকল সরকারি-স্বায়ত্বশাসিত-আধা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের সকল অনুষ্ঠানের বক্তৃতা শেষে মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি “জয়বাংলা” শ্লোগান উচ্চারণ করে বক্তৃতা শেষ করা, “বিচার আদালতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো”, মুক্তিযোদ্ধাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্বোধন, বিনা দোষে কারাগারে আটকে থাকা জাহালমকে মুক্তির রায়গুলো উল্লেখযোগ্য।

 

এফ আর এম নাজমুল আহসান মিজান বাম ধারার রাজনৈতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি বরগুনা ও স্বরূপকাঠির পেয়ারাবাগান এলাকায় অংশ নেন। প্রগতিশীল ধারার মানুষের কাছে নাজমুল আহসান মিজান এর ব্যাপ্তি অনেক গভীর।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version