-->
বিচারক-আইনজীবী বিরোধ

নীলফামারীর তিন আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নীলফামারীর তিন আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব

এবার নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে খুলনা, পিরোজপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পর এবার নীলফামারীর তিন আইনজীবীকে তলব করা হলো।

 

নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন এবং বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগে তিন আইনজীবীকে তলব করা হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি তাদের হাজির হয়ে ওই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

 

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি ওই তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

 

যে তিন আইনজীবীকে তলব করা হয়েছে তারা হলেন-নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজুল হক, সহসভাপতি মো. আজহারুল ইসলাম ও সাধারণ সদস্য ফেরদৌস আলম।

 

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের বিরোধের জেরে একই হাইকোর্ট বেঞ্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবকী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে তলব করেন। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল বিচারাধীন।

 

এরও আগে খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক যুগ্ম জেলা জজ নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় খুলনার তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে গতবছর পহেলা নভেম্বর আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের তলব করা হয়েছিল। ওই শুনানিতে আদালত তিন আইনজীবীকে কঠোর ভাষায় ভর্ৎসনা করেন। ওই তিন আইনজীবী নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান।

 

এছাড়াও পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট(সিজেএম) আবু জাফর মো. নোমানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় গতবছর নভেম্বরে হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি পান পিরোজপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন। তবে ভবিষ্যতের জন্য তাকে সতর্ক করে দেন হাইকোর্ট।

 

জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় গতবছর ২৮ নভেম্বর কারাবন্দি এক আসামির জামিন আবেদন খারিজ এবং অপর আসামিদের জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন খারিজ করেন নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. গোলাম সারোয়ার। এ আদেশ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ওই মামলায় নিয়োজিত তিন আইনজীবীসহ বেশ কয়েকজন আইনজীঅবী বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

 

এ ঘটনায় ওই বিচারক পরদিন প্রধান বিচারপতিকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, আইনজীবীরা ‘মারমুখী ও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এজলাসের টেবিল চাপড়িয়ে বিকট শব্দে’ বিচারকের প্রতি বিভিন্ন উক্তি করে হামলা করার প্রয়াস চালান। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানান ওই বিচারক। আবেদনটি পাবার পর তা প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেল।

 

এরপর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি দেখার জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠাতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আদালতে ওঠে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version