-->
হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা

সাত জঙ্গির মৃত্যুদন্ড অনুমোদনে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাত জঙ্গির মৃত্যুদন্ড অনুমোদনে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন

বহুল আলোচিত রাজধানী গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় ২৪ জন নিহতের ঘটনায় সাত জঙ্গির মৃত্যুদন্ডের মামলা বিচারের জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তার প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে এ দায়িত্ব দিয়েছেন।

 

আইন অনুযায়ী ওই মামলায় নিন্ম আদালত থেকে সাত জঙ্গিকে দেয়া মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এরপর মামলাটিতে পেপারবুক তৈরির পর বিচারের জন্য বেঞ্চ গঠন করে দিলেন প্রধান বিচারপতি।

 

তথ্যানুযায়ী, মামলাটিতে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৭ জঙ্গিকে মৃত্যুদন্ড দেয় ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের পর ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর জঙ্গিদের মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদন্ড এর রায় অনুমোদনের জন্য মামলার নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এই মামলায় ১৩৪ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ মোট ২৩০৭ পৃষ্ঠার নথি (মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, অভিযোগপত্রসহ) পাঠানো হয় হাইকোর্টে।

 

এরপর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলাটির পেপারবুক তৈরির উদ্যোগ নেয়। এজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। বিজি প্রেস থেকে পেপারবুক ছাপা হয়ে সুপ্রিম কোর্টে আসে ২০২০ সালের শেষদিকে। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ কাজে ভাটা পড়ে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায় পেপারবুক প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

 

মামলায় মৃত্যুদন্ড পাপ্ত জঙ্গিরা হলো গাইবান্ধার জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, নওগাঁর আসলাম হোসেন ওরফে আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, কুষ্টিয়ার আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, জয়পুরহাটের মো. হাদিসুর রহমান সাগর, বগুড়ার রাকিবুল হাসান রিগ্যান, একই জেলার মামুনুর রশীদ রিপন ও রাজশাহীর শরিফুল ইসলাম খালেদ। খালাস পাওয়া আসামি হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

 

গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে থাকা হলি আর্টিজান বেকারি ও রেস্টুরেন্টে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে জঙ্গিরা সশস্ত্র হামলা চালায়। সেখানে তারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হঠাৎ গুলি ও বোমার শব্দে আতঙ্কিত ব্যক্তিরা ছোটাছুটি শুরু করেন। এ সময় তাদের জিম্মি করে জঙ্গিরা। জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি ও দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৪ জন নিহত হয়।

 

ঘটনার তিন দিন পর ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই আটজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হলেও তদন্তে হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় ২১ জঙ্গির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে পাঁচজন ঘটনার সময় সেনা কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়। এই পাঁচজনই সরাসরি হলি আর্টিজানে প্রবেশ করে অতিথিদের জিম্মি করে এবং দেশি-বিদেশিদের নৃশংসভাবে হত্যা করে।

 

এছাড়া নব্য জেএমবির প্রধান সমন্বয়কারী তামিম চৌধুরীসহ আটজন বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়। সবমিলে এই মামলার আসামি ১৩ জঙ্গি নিহত হওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

 

ভোরের আকাশ/নি

মন্তব্য

Beta version