-->
সুপ্রিম কোর্টের বিচার কাজের সুবিধার্তে ছয়টি কোর্র্ট প্র্রযুুক্তির উদ্বোধন

বিচার বিভাগ আজ এক নতুন দিগন্তে পদার্পণ করতে যাচ্ছে:প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিচার বিভাগ আজ এক নতুন দিগন্তে পদার্পণ করতে যাচ্ছে:প্রধান বিচারপতি

দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টের বিচার কাজ ও প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্তে ছয়টি কোর্র্ট প্র্রযুুক্তির (প্রযুক্তি নির্ভর টুলস) উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এটা উদ্বোধন করে বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তথা বিচার বিভাগ আজ এক নতুন দিগন্তে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। একবিংশ শতকের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ধারায় বিচার বিভাগে আজ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর একগুচ্ছ পরিষেবার সার্থক প্রবর্তন হতে যাচ্ছে।

 

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানীর সঞ্চালনায় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজউদ্দিন ফকির ও সম্পাদক আব্দুন নুর দুলাল এবং সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা বিচার বিভাগকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিনির্ভর করার প্রাথমিক পদক্ষেপ। এই ডিসেম্বর মাসে আমাদের মহান সংবিধান প্রবর্তিত হওয়ার এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের যুগপৎ সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণিল আয়োজনে আমরা উপনীত। এই মাহেন্দ্রক্ষণে একটি যুগোপযোগী এবং গতিশীল বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমাদের এখনই সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। সেই দাবিপূরণে আজকের সূচিত কার্যক্রম বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে নিয়ে যাবে নতুন এক মাইলফলকে।

 

প্রধান বিচারপতি পর্যায়ক্রমে ছয়টি অ্যাপসের তথ্য তুলে ধরে বলেন, প্রথমত: অধস্তন আদালতের জন্য গঠিত মনিটরিং কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ছক অনুসারে অধস্তন আদালত থেকে মামলার পরিসংখ্যান প্রেরণের প্রক্রিয়াকে সহজিকীকরণসহ তথ্য-উপাত্ত দ্রুততার সাথে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এই সফটওয়ার মনিটরিং কমিটির কাজকে আরও গতিশীল করবে, সর্র্বোপরি মামলাজট নিরসনে সহায়তা করবে।

 

দ্বিতীয়ত: প্রযুক্তিটির মাধ্যমে অধস্তন আদালতের বিচারকগণ অতি সহজেই তাদের প্রদত্ত রায় ও আদেশ প্রস্তুতকৃত প্লাটফর্ম আপলোড করতে পারবেন যা বিচারপ্রার্থী জনগণ সহজেই দেখতে পারবেন।

 

ততৃীয়ত: আপীল বিভাগের প্রবেশ পাস, যার মাধ্যমে আপীল বিভাগের এজলাস সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং যেসব বিচারপ্রার্থী আপীল বিভাগে প্রবেশ করবে তাদের তথ্যসমূহ আমাদের কাছে সংরক্ষিত থাকবে।

 

চতুর্থত: সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ অ্যাপ। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিভিন্ন অনলাইন পরিষেবা ও তথ্য সহজলভ্য করার প্রয়োজনকে বিবেচনায় রেখে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে সুপ্রীম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রদর্শিত সকল তথ্য অতি সহজে পাওয়া যাবে। গুগল প্লে স্টোর-এ এই অ্যাপ উন্মুক্ত করা হবে।

 

পঞ্চমত: সুপ্রীম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস্ এর জন্য প্রস্তুতকৃত একটি অনলাইন প্লাটফর্ম, যার মাধ্যমে দেশের শিশু আদালতসমুহের মামলার পরিসংখ্যান এবং আইনের সাথে সংঘাতে আসা শিশুদের বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য পরিসংখ্যান কমিটির নিকট অতি সহজে এবং দ্রুততার সাথে প্রেরণ করা সম্ভব হবে।

 

ষষ্ঠত: বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের অনুলিপি শাখার কার্যক্রম গতিশীল, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব করে তুলতে একটি সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আপীল বিভাগের রায় ও আদেশের অনুলিপি অতি সহজ প্রক্রিয়ায় সরবরাহ করা হবে। এতে একদিকে জনসাধারণ যেমন উপকৃত হবে। অপরদিকে অনুলিপি শাখার কার্যক্রম আরও সহজে তত্ত্বাবধান করা যাবে।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নানা উদ্ভাবনী পদক্ষেপ ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে জনগণের অধিকার ঈর্ষনীয়ভাবে অক্ষুন্ন রেখেছে। জাতির দুঃসহ ক্লান্তিকালে অর্পিত দায়িত্ব পালনে বিচারক, আইনজীবী এবং আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ মৃত্যুঝুঁকি মাথায় নিয়ে পেশাগত দক্ষতায় যে অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, বিচার বিভাগ তো বটেই, বাংলাদেশের ইতিহাসে তা আগামী প্রজন্মের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version