-->

গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের মামলা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের মামলা স্থগিত

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে ফরিদপুরে করা মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

 

বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

 

জাহাঙ্গীরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এম কে রহমান ও কামাল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরমধ্যে ফরিদপুরে ‘মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটি’ নামে একটি সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন জাহাঙ্গীর আলম।

 

গত বছর সেপ্টেম্বরে জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিরূপ মন্তব্য শোনা যায়। এ কারণে গতবছর ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি এবং দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

 

এর পরপরই গতবছর ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এই আদেশে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ও একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতিবছর হাট-বাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া ভূমি দখল ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া রাস্তা প্রশস্তকরণ সংক্রান্ত প্রাপ্ত অভিযোগটির বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মতামত জানতে চাওয়া হলে, কোনো মতামত দেওয়া হয়নি।

 

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের শামিল, যা করপোরেশন আইনের ধারা ১৩ (১) (ঘ) অনুযায়ী অপসারণযোগ্য অপরাধ। এসব অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে ২০০৯ সালের সিটি করপোরেশন আইনের ১৩ ধারা মতে অপসারণের কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়েছে। তাই সিটি করপোরেশন আইনের ধারা ১২ (১) অনুযায়ী, সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।

 

এর পরই দেশের বিভিন্ন জেলায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মানহানি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।

 

এদিকে মেয়র পদে বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এই আবেদনে গত ২৩ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্তের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা এবং বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) সচিব, আইন সচিব, গাজীপুরের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version