-->

বন্ধ হলো বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক
বন্ধ হলো বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার

দীর্ঘ ৮১ বছর পর কর্তৃপক্ষ বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচারে ইতি টানল। গতকাল শনিবার ইংরেজি বছরের শেষ দিনে শেষ হলো বিবিসি বাংলার রেডিও কার্যক্রম। খবরের জন্য একসময় বিবিসি বাংলা রেডিও ছিল অসংখ্য মানুষের ভরসার নাম।

 

সকাল, সন্ধ্যা ও রাতে রেডিও নিয়ে বসে থাকত মানুষ। স্টেশন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বিবিসি বাংলা ধরাতে বেগও পেতে হতো। বেজে উঠত ‘বিবিসি বাংলা’। এরপর ধীরে ধীরে পরিবর্তন এসেছে অনেক কিছুতেই। রেডিওর জায়গা দখলে নিয়েছে অন্য প্রচারমাধ্যমগুলো। এসেছে ফেসবুক, ইউটিউবসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

 

প্রভাব পড়েছে বিবিসি বাংলার রেডিওর দর্শকদের ওপরও। এ অবস্থায় গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অর্থ বাঁচাতে ১০টি ভাষার রেডিও সার্ভিস বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন। এর মধ্যে ছিল বাংলা সার্ভিসও। জানানো হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বাড়তে থাকা খরচ ও লাইসেন্স ফির নিষ্পত্তির কারণে সংবাদমাধ্যমটিকে কিছু কঠিন সিদ্ধান্তের দিকে যেতে হচ্ছে।

 

বিবিসির পরিষেবাগুলোতে ব্যয় হওয়া ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড থেকে ২৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড বাঁচিয়ে পুনরায় অন্য খাতে বিনিয়োগ করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।

 

বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠান ‘প্রবাহ’ আর ‘পরিক্রমা’ শেষবারের মতো প্রচারিত হয় গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা এবং রাত সাড়ে ১০টায়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন লন্ডনে মানসী বড়ুয়া আর ঢাকায় আকবর হোসেন।

 

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলেন, ‘বিবিসি বেশ কিছুদিন থেকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে, এখন এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত করা হবে।’ বিবিসি বাংলা রেডিও যাত্রা শুরু করে ১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর একটি সাপ্তাহিক নিউজলেটার দিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা রেডিওর যাত্রা।

 

বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বিবিসি নামটি সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। তখন বিবিসির খবরের ওপর শ্রোতাদের আস্থা আর বিবিসি বাংলা রেডিওর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। যুদ্ধের খবরের জন্য পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে তারা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version