logo
আপডেট : ২৬ মে, ২০২৩ ১১:০৪
সম্পাদকীয়
ভোলার গ্যাস যাবে কল-কারখানায়

ভোলার গ্যাস যাবে কল-কারখানায়

অবশেষে মূল ভূখন্ডে আসছে দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলার উদ্বৃত্ত গ্যাস। কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) হিসেবে সিলিন্ডারে ভরে এ গ্যাস পৌঁছে দেয়া হবে শিল্পকারখানায়। ভোলার গ্যাস আনতে ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাথমিকভাবে বেসরকারি কোম্পানি ইন্ট্রাকোর সঙ্গে চুক্তি করছে সরকার।

 

গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ইন্ট্রাকো ও ভোলার গ্যাস বিতরণে নিয়োজিত সরকারি কোম্পানি সুন্দরবন গ্যাসের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই সিএনজির প্রতি ঘনমিটারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। পাইপলাইন থেকে এখন সরাসরি শিল্প গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়।

 

সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪৩ টাকা। পরিবহন দূরত্বের কারণে ভোলার গ্যাস চলতি দামের চেয়েও বেশি মূল্যে বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইন্ট্রাকোর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে দৈনিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আনা হবে। পরে তা ২০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করা হবে। দৈনিক ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজিতে পরিণত করে পরিবহনের জন্য ৬০টি কম্প্রেসর ও ২৩৮টি ক্যাসকেড ট্যাংকার প্রয়োজন।

 

ইন্ট্রাকো বিশেষভাবে রূপান্তরিত ট্রাকে সিলিন্ডার বসিয়ে তাতে করে সিএনজি আনবে। এক্ষেত্রে ময়মনসিংহের ভালুকা ও গাজীপুরে জ্বালানি সংকটে থাকা কারখানাগুলো গ্যাস সরবরাহে পাবে অগ্রাধিকার।

 

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) বলেছে, দেশে এখন দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ২৭০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো।

 

সে হিসেবে প্রতিদিন গ্যাসের ঘাটতি থাকছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের অভাবে দেশের শিল্পকারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গত বছরের শেষ থেকে লোডশেডিং করে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হয়। এ অবস্থায় দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে দ্বীপজেলা ভোলার গ্যাস।

 

ভোলার বিপুল পরিমাণ গ্যাস এতদিন মূল ভূখন্ডে আনা যাচ্ছিল না। বিদেশ থেকে বেশি দামে গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে। বর্তমানে সিএনজি করে ভোলার গ্যাস দেশের মূল ভূখন্ডে এলে সেটি হবে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। শিল্প খাত গ্যাস পেলে রপ্তানি বাড়বে, দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে বেশি পরিমাণে।

 

সরকার সমকালীন জ্বালানি সমস্যা দ্রুত সময়ে সমাধানে তৎপর রয়েছে। ভোলায় আরো গ্যাস পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আরো ক‚প খনন করা আবশ্যক। ভোলার গ্যাস পরিবহনে ইন্ট্রাকোকে নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

 

সরকারের পক্ষ থেকে শিল্প খাতের গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এটা যেহেতু বৈশ্বিক সংকট, তাই সহসাই এ সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়। ভোলার গ্যাস আপাতত সামান্য পরিমাণে এলেও তা যেহেতু সবটাই শিল্প খাতে সরবরাহ করা হবে, সেহেতু আমাদের উৎপাদন কিছুটা হলেও ত্বরান্বিত হবে এমনটিই প্রত্যাশা।

 

ভোরের আকাশ/নি