logo
আপডেট : ২৩ মে, ২০২৩ ১২:০২
৩ বছরেও চালু হয়নি চিন্তামন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র
মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

৩ বছরেও চালু হয়নি চিন্তামন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র

দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউপির চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণের ৩ বছর পার হলেও চালু হয়নি। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্মাণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় থেকে প্রায় ৪ কোটি ২৫ হাজার টাকা নির্মাণ কাজে বরাদ দেওয়ার পর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনাজপুর টেন্ডার আহবান করলে টেন্ডারের কাজটি পায় সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স পিয়াস কনসট্রাকশন ।

 

নির্মাণ কাজটির ওয়ার্কঅর্ডার পাওয়ার পর গত ২০১৮ সালের ১৬ আগষ্ট এ্যাড: মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (এমপি) চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন। ভিত্তি স্থাপনের পর থেকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যানের কাজ শুরু হয়। ফুলবাড়ী উপজেলার চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণ হলেও গত ৩ বছরেও চালু হয়নি।

 

ঠিকাদার মোঃ আনোয়ার হোসেন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র এবং ৩য় তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ করার পর ভবন দুটি এখন তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শিশু কল্যান কেন্দ্রের নির্মাণকৃত ৩য় তলা ভবনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে সরবরাহকৃত মালামালগুলি তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

 

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স পিয়াস কনসট্রাকশনের স্বত্তাধীকারী মোঃ আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ভবন নির্মাণ হওয়ার পর দুটি ভবন ও মালামাল ২০২২ সালে দিনাজপুর জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগমের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন এখানে আমার করার কিছু নাই।

 

অন্যদিকে দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রউফের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ভবন নির্মাণ তদারক করেছি আমি। তবে ভবন নির্মাণ হওয়ার পর ভবন দুটি ঠিকাদার মোঃ আনোয়ার হোসেন দিনাজপুর জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগমের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

 

এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলার তৎকালীন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম বলেন, ঠিকাদার ভবন দুটি আমার নিকট হস্তান্তর করেছে। তবে জনবলের কারণে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে জনবল দেওয়া হলে আমরা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করব। একই কথা বলেন তৎকালীন ফুলবাড়ী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেডিকেল অফিসার ডা: মোঃ রইচ উদ্দীন।

 

তিনি বলেন, ঠিকাদার ভবন দুটি নিমাণের পর দিনাজপুর উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম এর নিকট হস্তান্তর করেছেন। আমি ওই উপকেন্দ্রের দায়িত্বভারের কোন চিঠি পাইনি।

 

এদিকে দিনাজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তৎকালীন উপ পরিচালক মমতাজ বেগম অবসর গ্রহণ করার পর আমি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত হই। বর্তমান বেতদিঘী ইউপি মা ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সরকারিভাবে জনবল না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জনবল দেওয়া হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু করা হবে।

 

পাহারাদার মিজানুর রহমান ২০২০ সাল থেকে ভবন দুটি তদারক করছেন। ৩ বছর ধরে তাকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। ঠিকাদার তার নিকট চাবি দিয়ে চলে গেছে। এখন ঠিকাদার বলছে পাহারাদারের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে পাহারাদার মিজানুর রহমান বলেন, ৩ বছর ধরে কোন বেতন পাইনি। ঠিকাদার আমাকে রাস্তায় চাবি ফেলে দিতে বলে।

 

এ অবস্থায় পাহারাদার এখনও ভবনটি দায়িত্ব পালন করছেন। কে দিবে এই পাহারাদারের বেতন? আনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপন করছে পাহারাদার। গত ৩বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার মানুষ।

 

ভোরের আকাশ/নি