logo
আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:৪৩
শরীয়তপুরে এলজিইডির অধীনে সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
মেহেদী হাসান, শরীয়তপুর

শরীয়তপুরে এলজিইডির অধীনে সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার এলজিইডির অধীনে নির্মাণাধীন রাস্তা

শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়নমূলক কাজের বিপরীতে নির্ধারিত হারে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।

 

স্থানীয় লোকজন উন্নয়নমূলক কাজের নিম্নমান সম্পর্কে উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করলেও তিনি তাতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উল্টো ঠিকাদারদের পক্ষেই সাপাই গেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

 

সড়ক নির্মাণ ও মেরামতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বিটুমিনসহ নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, মূল ঠিকাদারের পরিবর্তে অদক্ষ ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানো, রাস্তা তৈরির সময় ঠিকাদারের কাজের যথাযথভাবে তদারকি না করা আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সড়ক নির্মাণ বা মেরামতের ২-৩ মাস যেতে না যেতেই তা নষ্ট বা যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার পম লাকার্তা বাবুল খার দীঘির ব্রিজ থেকে সদর উপজেলার আটং বড় রাস্তা পযর্ন্ত প্রায় পৌনে ৩ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ করছেন আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার আক্তার হোসেন বাবুল। এই পৌনে তিন কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমীন, শাহিন, আবুল, বাবুল, জাহাঙ্গীর হোসেন সরদারসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারকে টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোনো তোয়াক্কা না করে অনুমোদনবিহীন নিম্ন মানের বালি, ইট-সুরকি ও পাথর দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

রাস্তার দু’পাশ বাড়ানো কথা থাকলেও তা যথাযথ বাড়ানো হয়নি। রাস্তা টিকে থাকার জন্য দু’পাশে যে ইটের এজেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্ন মানের পুরোনো ইটের খোয়া ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে।

 

ইটের খোয়া এতটাই নিম্ন মানের ব্যবহার করা হচ্ছে যা ইটে পা দিয়ে চাপ দিলে তা ভেঙে যাচ্ছে। সিডিউল মোতাবেক নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা সরু করা হয়েছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পুরোনো সড়কের পিচ না উঠিয়ে তার ওপর দিয়ে পিচ ঢালাইয়ের পাঁয়তারা চলছে। গত প্রায় ৩ মাস ধরে বিভিন্ন অংশে রাস্তা খুঁড়ে রাখায় ধুলাবালিতে একাকার হচ্ছে এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। সংস্কারের কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে।

 

স্থানীয় লোকজন এ বিষয়ে ঠিকাদারের কাছে আপত্তি জানালেও সে কোনো কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা। স্থানীয়রা জানান, নিম্ন মানের ইট-সুরকি, পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করে এ রাস্তা মেরামত করার ফলে কয়েক মাস যেতে না যেতেই তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। ফলে রাস্তার সুফল পাচ্ছে না এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ। এ কাজে তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান।

 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রাস্তার কাজে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৗশল অধিদপ্তরের কাউকে এসে তদারকি করতে দেখা যায়নি।

 

অভিযুক্ত ঠিকাদার আক্তার হোসেন বাবুল কাজের অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার কাজ ভালো হচ্ছে, আমি কোনো খারাপ মাল দিয়ে কাজ করি না। এ কাজ এলজিইডিই বুঝে নেবে। আপনাদের সমস্যা কি?

 

উপজেলা প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী কমিশন বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, রাস্তার পুরোনো ইট ব্যবহার করার বিষয়টি সিডিউলে ধরা হয়েছে। আমাদের লোকজন তদারকি করছে।

 

ভোরের আকাশ/নি