logo
আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:১৯
তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে ফসল রক্ষায় কোটি টাকার বালুর বাঁধ
সিলেট ব্যুরো

তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরে ফসল রক্ষায় কোটি টাকার বালুর বাঁধ

তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরের বালুর বাঁধ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ফসল রক্ষায় কোটি টাকার বালুর বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। নিয়ম না মেনে মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করলে বানের জলে ভেসে যাবে বলে সতর্ক করে দেয়া হলেও তা পাত্তা দিচ্ছেন না প্রভাবশালী পিআইসি। পাউবোর প্রকৌশলীই নাকি বালুর বাঁধ করার অনুমতি দিয়েছেন।

 

জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী বালু দিয়ে বাঁধ মেরামতের নিয়ম না থাকলেও মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের ৭৫নং পিআইসি#৩৯ এর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ মাটির পরিবর্তে নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজার মেশিনের বালু দিয়ে কাজ করছেন প্রকল্প কমিটির সভাপতি মলাই মিয়া। এ ছাড়াও একই হাওরের ৭৬ ও ৭৭নং পিআইসির বাঁধও একই কায়দায় করছেন সংশ্লিষ্ট পিআইসি কমিটির লোকজন।

 

বাঁধটি শুরু থেকেই মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে না করার জন্য স্থানীয় কৃষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বাধা দিলেও বাঁধের প্রকল্প কমিটির লোকজন পাত্তা দিচ্ছে না। তারা কোনো কথাই শুনছেন না, বরং তারা জানান, অনুমতি নিয়ে বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করছেন। এতে মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষকরা ফসল হানির আশংকা করছেন।

 

পাউবোর সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তাহিরপুর উপজেলায় ছোট বড় ২৩টি হাওরে ১১২টি প্রকল্পের মধ্যে ৮৪ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য। তার মধ্যে পাউবো#৩৯-এর অধীনে থাকা মাটিয়ান হাওরের ৭৫নং পিআইসির বাঁধটি মেরামতের জন্য ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

 

মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষক রহিম মিয়া জানিয়েছেন, যেভাবে বালু দিয়ে বাঁধ করা হচ্ছে তাতে ভারি বৃষ্টিপাত হলে এ বাঁধ টিকবে না। প্রথম ধাক্কাতেই পানিতে ভেসে যাবে। মাটির পরিবর্তে এভাবে বালু ফেলে বাঁধের কাজ করলে চৈত্র মাসের প্রথম দিকেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে আগাম ফসলহানির আশংকা করছেন কৃষকরা।

 

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, ৭৫নং পিআইসির বাঁধটি শুরু থেকেই মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে না করার জন্য বলেছি। কিন্তু বাঁধের প্রকল্প কমিটির লোকজন কোনো কথাই শুনছেন না, বরং তারা বলছেন অনুমতি সাপেক্ষে বালু দিয়ে বাঁধের কাজ করছেন।

 

মাটিয়ান হাওরের ৭৫নং পিআইসির সভাপতি মলাই মিয়া জানান, পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী শওকত উজ্জমানের অনুমিত নিয়েই বালু দিয়ে বাঁধের কাজ করছেন তিনি। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, মাটির চেয়ে বালু দিয়ে বাঁধের কাজ টেকসই বেশি হবে।

 

পাউবো#৩৯-এর উপসহকারী প্রকৌশলী শওকত উজ্জমান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ৭৫নং পিআইসির বাঁধের কাজ নদীতে থাকা পানির লেভেল পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে করার কথা। তবে সম্পূর্ণ বাঁধ বালু দিয়ে করতে বলিনি।

 

এ ছাড়াও যেসব বাঁধ বালু দিয়ে করার অভিযোগ পেয়েছি সেসব বাঁধে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ বা মেরামত করা যাবে না। মাটিয়ান হাওরের ৭৫নং পিআইসি ড্রেজার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট পিআইসির সভাপতিকে ড্রেজার বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি।

 

ভোরের আকাশ/নি