logo
আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:০৩
কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতা
মুদি দোকানে কীটনাশক বিক্রি: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুসহ সাধারণ মানুষ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

মুদি দোকানে কীটনাশক বিক্রি: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুসহ সাধারণ মানুষ

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের দক্ষিণ তেলিগাতী পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মুদি দোকানে কীটনাশক বিক্রি হচ্ছে

কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে কিটনাশক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি মুদি দোকানে র্দীঘদিন ধরে বিক্রি হচ্ছে কীটনাশক। এ কারণে স্কুলপড়–য়া শিশুসহ এলাকার সাধারণ মানুষ রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। দীর্ঘদিন এ ব্যবসা চললেও কর্তৃপক্ষের নিরব ভূমিকা দেখে এলাকাবাসী হতবাক ।

 

বাগেরহাট জেলার মোড়েলঞ্জ উপজেলার তেলীগাতী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের দক্ষিন তেলিগাতী পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে আতিয়ার ষ্টোর নামে এক মুদি দোকানে দীর্ঘদিন ধরে আতিয়ার হাওলাদার এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন তেলিগাতী পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে আতিয়ার হাওলাদারের একটি দোকান। সে দোকানে মুদি-মনোহারিসহ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খাবার রয়েছে। এসব খাবারের সাথে দোকানের গ্যালারিতে সাজানো রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার কিটনাশক।

 

একই দোকানে মুদি-মনোহারিসহ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খাবার সাথে কিটনাশকের ভিডিও ও ছবি করতে দেখে সাংবাদিকের পরিচয় পাওয়ার পর তরিঘরি করে দোকানে রাখা সব কিটনাশক দোকানের সাথে পিছনের বাড়িতে নিয়ে যায় আতিয়ার হাওলাদার।

 

র্দীঘদিন দোকানে মুদি-মনোহরিসহ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে কীটনাশক বিক্রির কথা জানতে চাইলে, দোকানের মালিক আতিয়ার হাওলাদার অকপটে কীটনাশক বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, কীটনাশক বিক্রি করার লাইসেন্স আমার আছে।

 

এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পরে লেগেছেন ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান তালুকদার ওরফে জামাল তালুকদার। আতিয়ারকে রক্ষা করতে বিভিন্ন ধরনের গল্প কাহিনীও তৈরী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন এই ইউপি সদস্য। এমনকি সাংবাদিককে মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়েছেন তিনি।

 

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, কীটনাশক বিক্রির জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স দেওয়া হয়। আর এখানে আইনের তোয়াক্ক না করে কৃষি অফিস মোঃ আতিয়ার রহমানকে লাইসেন্স প্রদান করেছে। আতিয়ার এই লাইসেন্সের কারণে শিশুদের স্কুলের পাশে মুদির দোকানে কীটনাশক বিক্রি করছে। যেখানে প্রতিনিয়ত স্কুলগামী শিশুরা খাবার ক্রয়ের জন্য আসে। এতে দোকানে আসা সেসব শিশুসহ এলাকার সাধারণ জনগনও রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

 

এ বিষয়ে মোড়েলঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান, ওই ইউনিয়নের সাবেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তানজির আহম্মেদের প্রতিবেদনের সাপেক্ষে আতিয়ার হাওলাদারকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। তিন বছর আগে আতিয়ারের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় লাইসেন্স নবায়ন করেন।

 

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপপরিচালকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ও দুয়েকদিনের মধ্যে তদন্ত করবেন।

 

এ বিষয়ে বাগেরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, যেখানে মানুষের খাবার আছে সেসব দোকানে কোনধরনের কীটনাশক বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। এখানে লাইসেন্স দেওয়ার কোনো বিধান নেই। যারা এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

কীটনাশকের দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হবে না।

 

ভোরের আকাশ/নি