logo
আপডেট : ২৯ জুন, ২০২২ ১১:৩১
বাড়ছে করোনার সংক্রমণ
স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ

দৈনিক ভোরের আকাশ-সবার কথা বলে

বিগত প্রায় তিন বছর ধরে করোনা ভাইরাস মহামারিতে ধুকছে সারা বিশ্ব। চীনের উহান প্রদেশ থেকে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রকোপ ছড়িয়ে মানুষের নাভিশ্বাস বাড়িয়েছে এ ভাইরাস। নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টে রূপান্তরিত হয়ে ঝরিয়েছে লাখ লাখ প্রাণ। সামাজিক দৃরত্বের ছকে বাধা পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনাচরণ। দুর্ভোগ-দুর্বিপাকে নাস্তানাবুদ হয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি মানুষ। এমনকি উন্নত বিশ্বের দেশগুলোও হিমশিম খেয়েছে কোভিড মহামারি মোকাবিলায়। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে এ ভাইরাস খুব একটা সুবিধা করে উঠতে না পারলেও কেড়েছে বহু প্রাণ। সংক্রমণের শুরু তেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সমপরিমাণ সুস্থ হয়ে উঠলেও মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ৩০ হাজার। অতিশয় ক্ষুদ্রাকার ভাইরাস, যাকে খালি চোখে দেখা যায় না, তার হাতে এত সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি কিংবা সংক্রমণের চিত্র বিশাল মনে হলেও অন্যান্য দেশের সাথে তুলণায় আমরা কোভিড মোকাবিলায় সফল বলা যায় । কেননা, সারা বিশ্বে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ কোটি ছাড়িয়েছে। এসময়কালে মারা গেছেন ৫০ লাখের বেশি, সুস্থ হয়েছেন ৫০ কোটির উপরে।

আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা-উদাসীনতা দেখিয়ে চলেছি। বিষয়টি এমন যেন, কোভিড মহামারি বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে। এই ভাবনা-চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণের বিষয়টি আমলে নিতে হবে


সারা বিশ্বেই কোভিডের দাপট নিম্নমুখী থাকলেও আবারো তা প্রকোপ ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশেও মাঝে কয়েক মাস করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল। তবে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এতে আবারো চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের কপালে। কেননা, বিগত সময়জুড়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে করোনাভাইরাসের আক্রমণে। সারাদেশকে লক ডাউনের আওতায় আনতে বাধ্য হয় সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হই আমরা। মোটকথা মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন স্থবির হয়ে পড়ে। আয়-রোজগার বন্ধ হবার ফলে দৈননন্দিন জীবনযাপনে হিমশিম খায় মানুষ। সরকার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেও সঠিক দিকনির্দেশনায় ভাইরাসের প্রকোপ সামলে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিল মানুষ। ঠিক এমন একটা মুহূর্তে আবারো করোনা ভাইরাসের ফিরে আসার সংবাদ নিতান্তই অনাকাক্সিক্ষত। এর ফলে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়বে নতুন করে। পরিস্থিতি আগের মত মহামারি আকার ধারণ করলে সমগ্র দেশকে আবারোও লক ডাউনের আওতায় আনতে পরামর্শ আসবে। অর্থাৎ, মানুষের জীবনযাপন থমকে দাঁড়াবে আবরো। এমতাবস্থায়, সহজ করণীয় হলো, সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সরকার ও বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা অনুসরণ করে চলতে হবে। সরকার সফলভাবে প্রতিটি নাগারিকের কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। এখন বুষ্টার ডোজের কার্যক্রম চলছে। সবাইকে টীকা গ্রহণ করতে হবে যথাসময়ে। সব থেকে বড় বিষয় হলো, স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষার চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সংক্রমণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।


একটা বিষয় আমরা ভুলে যাচ্ছি, টিকা যেহেতু নিশ্চিত করা গেছে সেক্ষেত্রে কোভিড মোকাবিলায় মোটাদাগে একটা বিষয় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো, স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ অনুসরণ। এই একটি বিষয়ে উন্নতি করতে পারলেই আমরা করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করতে সক্ষম হবো। তবে দুঃখজনক সত্য হলো, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা-উদাসীনতা দেখিয়ে চলেছি। বিষয়টি এমন যেন, কোভিড মহামারি বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে। এই ভাবনা-চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণের বিষয়টি আমলে নিতে হবে। অন্যথায় কঠিন পরিস্থিতি সামনে আসবে। তাই, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।